E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে

প্রতারণা করে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর পদোন্নতি

২০২২ ডিসেম্বর ০১ ১৬:৩৭:৪৪
প্রতারণা করে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর পদোন্নতি

ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : পাকশী বিভাগীয় রেলওয়েতে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী জালিয়াতি করে নিজের স্থায়ী ঠিকানা গোপন রেখে নিয়ম বর্হিভূতভাবে উচ্চতর বেতন স্কেলে সরকারী রাজস্ব হাতিয়ে নিচ্ছেন। এবিষয়ে সেগুন বাগিচার অডিট টিম আপক্তি পূর্বক রিপোর্ট দিলেও অদ্যবধি কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় অফিস সূত্র জানায়, রেলওয়ের সার্ভিস বুকে মোঃ আব্দুল আলীম খাঁন ২০০৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী কুলাউড়া ডিস্পেনসারীতে ওয়ার্ড এ্যাটেনডেন্ট হিসেবে চাকুরীতে যোগদান করেন। সেখানে ঢাকা জেলার দোহার থানার ইকরাশী গ্রামের বাসিন্দা বলে ঠিকানা ব্যাবহার করা হয়েছে। অথচ তার স্থায়ী ঠিকানা কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি থানার কয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুল গফুর খাঁন। আব্দুল আলীম খাঁন অষ্টম শ্রেণীর যে সার্টিফিকেট ব্যাবহার করেছেন তাতে নিজ জন্মভূমির স্থায়ী ঠিকানা গোপন রেখেছেন। মোহাম্মদীয়া ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার যে সার্টিফিকেট তিনি ব্যাবহার করেছেন, সেই মাদ্রাসা থেকে তার স্থায়ী ঠিকানা মাত্র কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে।

আব্দুল আলীম খান কুলাউড়াা কর্মস্থল থেকে বদলী হয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় সদর দপ্তর পাকশী রেলওয়ে হাসপাতালে যোগদান করেন। ২০১০ সালের ৭ মার্চ ডাক্তার মোঃ হাবিবুল্লাহ স্বাক্ষরিত রেলওয়ে মেডিক্যাল বিভাগের এক নিয়োগ বিধি প্রনয়ন প্রসঙ্গে এক প্রস্তাবনায় বলা হয়, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৭ বছরের অভিজ্ঞতা এবং এসএসসি পাশ থাকতে হবে। নিয়োগ বিধির নিয়ম অমান্য করে আব্দুল আলীম বিধি বহির্ভূতভাবে ওয়ার্ড এ্যাটেনডেন্ট থেকে স্যানিটারী ইন্সপেক্টর পদে ২০১০ সালের ১১ অক্টোবর পদোন্নতি লাভ করেন। পদোন্নতি পেয়ে আব্দুল আলীম তরিঘরি করে রাজবাড়িতে রেলওয়ের সহকারী সার্জনের কার্যালয়ে স্যানিটারী ইন্সপেক্টর পদে ১৯ অক্টোবর যোগদান করেন।

তার যোগদানের পর ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারী রেলওয়ের অডিট অধিদপ্তর ঢাকার সেগুন বাগিচা থেকে অডিটের জন্য একটি তদন্ত টিম আসে। টিমের প্রধান ইকবাল হোসেন তদন্তে বিধি বহির্ভূতভাবে পদোন্নতির জন্য আপক্তি জানান। বিধি বহির্ভূতভাবে পদোন্নতির মাধ্যমে উচ্চতর স্কেলে বেতন প্রদান প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন যে, বিভাগীয় সংস্থাপন কর্মকর্তা পাকশী কার্যালয়ে সার্ভিস বই নিরীায় দেখা যায় বিভাগীয় চিকিৎসা কর্মকর্তা পাকশী কায্যালয়ে মোঃ আব্দুল আলীম খান মেডিক্যাল ওয়ার্ড এ্যাটেনডেন্ট হিসেবে গত ০৭/০২/২০০৫ ইং সালে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। গত ১১/১০/২০১০ তারিখে তাকে স্যানিটারী ইন্সপেক্টর হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, অষ্টম শ্রেণীর পাশের ওয়ার্ড এ্যাটেনডেন্ট থেকে তাকে স্যানিটারী ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি দেয়ার কোন বিধান নাই। যাহা সম্পুর্ন অনিয়ম। সরকার আর্থিকভাবে তিগ্রস্থ হচ্ছে বলে অডিট টিম সার্ভিস বুকে মতামত ব্যক্ত করেন।

এব্যাপারে আব্দুল আলীমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমার পদোন্নতি হয়েছে। উন্মুক্ত থেকে এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট জমা দিয়ে পদোন্নতির পরীাক্ষায় অংশ নিয়েছি। পাকশী বিভাগীয় অফিসের সার্ভিস বুকের জন্য আবেদনসহ সার্টিফিকেটও জমা দিয়েছি। তবে কি কারণে সার্ভিস বুকে ওঠেনি জানি না। কুষ্টিয়ার কুমারখালিতে পৈত্রিক বাড়ি হলেও আমরা ঢাকা জেলাতেই মানুষ হয়েছি বলে জানান তিনি।

এব্যাপারে পাকশী বিভাগীয় মেডিকেল অফিসার ডা: শাকিল আহমেদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি অপরপ্রান্তে ধরে বলেন, আমি তার ষ্টেনো সাইফুল ইসলাম। স্যার নেই, অফিসে ফোন রেখে গেছেন।

রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ম্যানেজার (ডিআরএম) নূর মোহাম্মদ জানান, আমি এখানে নতুন এসেছি। অনেক আগের ঘটনা, আমার এবিষয়ে কিছু জানা নেই। তবে অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এসকেকে/এসপি/ডিসেম্বর ০১, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test