E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভারতে পাচারকালে হিলি ইমিগ্রেমন চেকপোস্টে ৯ ভরি সোনা জব্দ

২০২২ ডিসেম্বর ০৩ ১৮:৫৩:১৭
ভারতে পাচারকালে হিলি ইমিগ্রেমন চেকপোস্টে ৯ ভরি সোনা জব্দ

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরের হিলি ইমিগ্রেমন চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে পাচারকালে আজ শনিবার এক ভারতীয় নাগরিকসহ আবারো থেকে ৯ ভরি সোনা উদ্ধার করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সেইসাথে ৬ কেজি পিতলেও আংটিও উদ্ধার হয়।

স্ক্যানার মেশিন না থাকায় হিলি চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে সোনা পাচার বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এরইমধ্যে কয়েক জনকে বিপুল পরিমাণ সোনাসহ আটক করেছেন হিলি কাস্টমসের গোয়েন্দারা।

হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ জানান, আজ শনিবার দুপুরে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারতীয় নাগরিক কুসুম সরকার দেশে ফিরে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। তিনি ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম সম্পন্ন করে কাস্টমসের ব্যাগেজ শাখায় আসেন। এ সময় তার গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে কাস্টমস নারী সদস্যরা তাকে তল্লাশী করেন। তার কাছ থেকে ৯ ভরি স্বর্ণের অলংকার ও ৬ কেজি পিতলের আংটি পাওয়া যায়। যার মূল্য সাত লাখ ৬০ হাজার টাকা।

ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্বর্ণের অলংকার ও পিতলের আংটি জব্দ করে কাস্টমস গুদামে জমা করা হয়েছে। ওই যাত্রীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। স্ক্যানার মেশিন না থাকায় দিনাজপুরের হিলি চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে সোনা পাচার বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত ১৯ অক্টোবর বিকালে হিলি চেকপোস্টে পাসপোর্টের কার্যক্রম শেষে ভারতে ঢোকার ঠিক আগমুহূর্তে দুই কেজি ৪০০ গ্রাম ওজনের ২৪টি সোনার বারসহ পাচারকারী চক্রের পাঁচ জনকে আটক করা হয়। এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর এক বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী কাস্টমসের চোখ ফাঁকি দিয়ে সোনা নিয়ে ভারতে পার হয়ে গেলেও ৯টি স্বর্ণের বারসহ সে দেশের কাস্টমসের হাতে আটক হয়।

কাস্টমসের হাতে আটক সোনা পাচারকারীরা জানান ‘আমরা ঢাকার চকবাজারসহ নানা জায়গা থেকে সোনা জোগাড় করে নিয়ে যাই ভারতের কলকাতার বড়বাজার এলাকায়। সেখানকার দোকানে বিক্রি করা হয় এসব। প্রতিটি ১০ গ্রাম সোনার বারে আমাদের লাভ হয় ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা।

হাকিমপুর উপজেলা পরিষের ভাইস চেয়ারম্যান শাহীনুর ইসলাম জানান, হিলি চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন ভারত-বাংলাদেশে যাতায়াত করেনবিপুলসংখ্যক মানুষ। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মানুষ এই পথ দিয়ে ব্যবসা, চিকিৎসা, ভ্রমণ, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাত্সহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ভারতে যান, ভারত থেকেও লোকজন বাংলাদেশে আসেন। কিন্তু এখানে যাত্রীদের ব্যাগেজ ও দেহ তল্লাশির জন্য স্ক্যানার মেশিন নেই। ফলে অবৈধ পণ্য অনায়াসে দেশে ঢুকে যাচ্ছে। আবার বেরিয়েও যাচ্ছে। সম্প্রতি সোনাসহ পাচারকারী চক্রের কয়েক জনকে কাস্টমস আটক করেছে। একটি স্ক্যানার মেশিন বসালে পাচার বন্ধ হবে।’

হিলি চেকপোস্টের ওসি মো. বদিউজ্জামান জানান, ‘আমরা হিলি চেকপোস্ট দিয়ে চলাচলকারীদের শুধু পাসপোর্ট দেখে থাকি। ব্যাগেজ দেখে কাস্টমস। তবে এই পোর্টে ভালো মানের স্ক্যানার বসানো উচিত। তাহলে যাত্রীদের ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসকে ফাঁকি দেওয়া কঠিন হবে।’

হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ জানান, ‘হিলি চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ জন পাসপোর্টযাত্রী বাংলাদেশ-ভারতে যাতায়াত করেন। যারা ডলার পাচার বা সোনা পাচার বা হুন্ডি কারবার করে তাদের তো আমরা চিনি না। এখানে স্ক্যানার মেশিন থাকলে আমরা সব চেক করতে পারব। স্ক্যানার না থাকার সুযোগটিকে কাজে লাগাচ্ছে সোনা চোরাকারবারিরা।’

হিলি কাস্টমস গোয়েন্দার রাজস্ব কর্মকর্তা শোয়েব রহমান জানান, ‘আগে যারা নিয়মিত বিমানযোগে ভারতে যাতায়াত করতেন সম্প্রতি তারা এই পথ ব্যবহার করে ভারতে যাচ্ছেন। তারা যখন যে পথে সুযোগ পান সে পথই কাজে লাগিয়ে সোনা পাচার করেন। আমরা অনেক দিন ধরে চেষ্টা করছিলাম এ পথ দিয়ে কোনো চক্র সোনা পাচার করে কি না, দেখতে। এবার আমাদের চেষ্টা সফল হয়েছে।'

তিনি বলেন, সোনা পাচারকারীরা যাতে এই পথ ব্যবহার করে পাচার করতে না পারে সেজন্য তদারকি বাড়নো হয়েছে।

(এস/এসপি/ডিসেম্বর ০৩, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test