E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

রাজপুত্রের বিশ্বকাপ জয়

শৈলকুপার গ্রামে গ্রামে আনন্দ উল্লাস

২০২২ ডিসেম্বর ১৯ ১৮:২০:১২
শৈলকুপার গ্রামে গ্রামে আনন্দ উল্লাস

শেখ ইমন, শৈলকুপা : মাঠে নামার মুুহুর্তে টানেলে সাধারণত খুব বেশি হাসতে দেখা যায়না লিওনেল মেসিকে। কিন্তু গতকালটা ছিল ব্যতিক্রম। সতীর্থ কিলিয়ান এম বাপ্পের সঙ্গে করমর্দন করলেন। সাবেক সতীর্থ গ্রিজমানকে করলেন আলিঙ্গন। সবার সঙ্গে কথা বললেন হেসে হেসে। ফাইনালের আগে এত উচ্ছল, তবে বুঝতে পেরেছিলেন অবশেষে সেই মুহুর্তটা আসছে।

বিশ্বকাপের ফাইনাল মেসি আগেও খেলেছেন। ২০১৪ ফাইনালে শিরোপা থেকে ছোয়া দুরত্বে ফেরার পর আট বছর পর্যন্ত জীবনের একমাত্র অপ্রাপ্তি হয়ে ছিল সেই ফাইনালটা। এই আট বছরে মেসি একবার অবসর গিয়ে আবারও ফিরেছেন জাতীয় দলে। তখন কি একবারও ভাবতে পেরেছিলেন,মিটে যাবে তার আজন্ম আক্ষেপ। পূরণ হবে তার আজন্ম সাধ। নিশ্চয় কোনো দৈববাণী পেয়েছিলেন,নইলে মাঠে নামার আগে কেন মুখে লেগে থাকবে অচেনা হাসি। সেই হাসিটা আরেকটু হলে মুছেই যেতে বসেছিল মেসির। ফাইনালে জোড়া গোল করেও দলকে প্রায় ডুবতে দেখতে বসেছিল লক্ষ লক্ষ আর্জেন্টাইন সমর্থক। ক্ষণে ক্ষণে হৃদযন্ত্রের পরীক্ষা নিল আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ফাইনাল। শেষ পর্যন্ত কাঁদলেন মেসি, কাঁদলেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। ৩৬ বছরের আক্ষেপ গড়িয়ে পড়লো অশ্র্ হয়ে। ৩-৩ গোলের শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনাল গড়াল টাইব্রেকারে। সেখানে দুই শট ঠেকিয়ে মেসি-দি মারিয়ার আলো নিজের দিকে কাড়লেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বসেরা আর্জেন্টিনা। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ফ্রান্সকে হারানোর উত্তেজনা কাতারের লুসাইল স্টেডিয়াম ছাপিয়ে ছড়িয়ে পড়ে দেশের আনাচে-কানাচে। মেসিভক্তরা বেরিয়ে আসেন রাস্তায়।

এর ব্যতিক্রম ঘটেনি ঝিনাইদহের শৈলকুপার গ্রামগুলোতে। উপজেলার মনোহরপুর গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বাঁধভাঙা উচ্ছাসে ফেটে পড়েন আর্জেন্টাইন ভক্ত-সমর্থকরা। বাদ্য-বাজনার তালে ও মেসি বন্দনায় রীতিমতো উৎসবের নগরীতে রূপ নেয় গ্রামগুলো। সমর্থকদের উপস্থিতি আর মিছিল জানান দিচ্ছিল মেসিভক্তরা যেন এ প্রতীক্ষায় ছিলেন বিশ্বকাপের শুরু থেকেই। খেলার ফলাফলের পরপরই আনন্দে আর্জেন্টিনার পতাকা হাতে নিয়ে আর জার্সি পরে মিছিল দিতে দেখা গেছে গ্রামটিতে। সমানতালে চলে আতশবাজি, বাজে ভুভুজেলা। মেসিধ্বনিতে মুখরিত হয় পুরো গ্রাম। রাস্তায় শত শত আর্জেন্টিনার ভক্ত শেষ রাত পর্যন্ত নেচে গেয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকের দেয়াল ভরে ওঠে প্রিয় দল আর্জেন্টিনাকে জানানো অভিনন্দন বার্তায়। অনেকেই সমর্থন করা দলের রুদ্ধশ্বাস বিজয়ে নিজের অভিব্যক্তির কথাও তুলে ধরেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।

খেলা শেষে মনোহরপুর গ্রামের সিজার জিকরুল বলেন, মনে হচ্ছিল আমার হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাবে। আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এত এত হৃদয়ের কান্না তিনি শুনেছেন। মেসি মেসিই। ২০২২ এর শ্রেষ্ঠ উপহার, আমার মেসির জন্য। বিজয়ের আনন্দে গ্রামটিতে ১ সপ্তাহ থাকবে নানা আয়োজন। দিনটিকে স্বরণীয় রাখতে সোমবার সারাদিন চলেছে রঙ মাখামাখি, নাচ ও মিছিল। রাতেও এর ব্যতিক্রম ঘটবে না। এমনটাই জানিয়েছেন আয়োজকরা।

আয়োজক আতাউল,সাকি,অভি জানান, সপ্তাহব্যাপী নানা সময়ে নানা ধরনের আয়োজন করবেন তারা। গান, নাচ, খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে দিনটিতে স্বরণীয় করে রাখতে যা করার দরকার সবই তারা করবেন।

(এসআই/এসপি/ডিসেম্বর ১৯, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test