E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জামালপুরে পুত্র হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক পিতা আটক

২০২৩ জানুয়ারি ০২ ১৪:৪৯:১২
জামালপুরে পুত্র হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক পিতা আটক

রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুরের বকশীগঞ্জে প্রায় ১২ বছর আগে নিজের পাঁচ মাসের শিশুসন্তানকে ঢেঁকির সঙ্গে আছাড় মেরে হত্যা করার পর আত্মগোপনে থাকা পিতাকে আটক করেছে র‍্যাব।

পাষণ্ড ওই পিতার নাম মো. মোস্তফা (৪০)। তিনি শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার দুধনই গজারীকুড়া গ্রামের আ. রহিমের ছেলে।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে মামলা করলে আটককৃত ওই পিতাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। পরবর্তীতে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে আসামির অবস্থান নিশ্চিত করে জামালপুর ক্যাম্পের একটি অভিযানিক দল গত ১ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকা জেলার খিলগাঁও থানার নন্দিপাড়া ঘজীবাড়ী এলাকা হতে তাকে আটক করা হয়।

সোমবার (২ জানুয়ারি) সকালে জামালপুর র‍্যাব কার্যালয়ে কোম্পানি কমাণ্ডার আশিক উজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

তিনি আরও জানান, ২০০৭ সালে গার্মেন্টসে চাকরির করার সুবাদে মো. মোস্তাফার সঙ্গে বকশীগঞ্জ উপজেলার টুপকারচর গ্রামের মো. উজির আলীর মেয়ে মোছা. রুজিনা বেগমের পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুই বছর পর তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। কিছুদিন দেশের বাড়িতে সংসার করার পর পুনরায় দুজনেই ঢাকায় গিয়ে আবার গার্মেন্টসে চাকরি শুরু করেন। রুজিনা গর্ভবর্তী হলে তারা ফের দেশের বাড়িতে চলে আসেন। তাদের ঘরে আসিফ নামে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। রুজিনা তাঁর স্বামীর সঙ্গে পিত্রালয়ে বসবাস করতে থাকেন। স্বামী মোস্তফা জীবিকা নির্বাহের জন্য দিন মজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। রুজিনার পিতা নিতান্তই গরিব হওয়ার ফলে বসবাসের জায়গা না থাকায় একই গ্রামের জনৈক মৃত সোহরাব মেম্বারের ছেলে গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে একটি পরিত্যক্ত রান্নাঘরে সপরিবারে বসবাস করে আসছিলেন।

একপর্যায়ে গত ২০ মে ২০১১ তারিখ শুক্রবার বিকেলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাঁদের পারিবারিক দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়। কলহের একপর্যায়ে মোস্তফা রুজিনার ওপর নির্মম শারিরীক নির্যাতন চালান। নির্যাতনে নিস্তেজ হয়ে পড়েন রুজিনা। এতেও আক্রোশ না কমলে মোস্তফা তার পাঁচ মাস বয়সী শিশুসন্তান মো. আসিফকে দুই পা ধরে ঘরে থাকা ঢেঁকির সঙ্গে সজোরে পরপর তিনবার আছাড় দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পালিয়ে যাবার সময় ওই পাষণ্ড পিতাকে আটকের পর পুলিশে সোপর্দ করে আশেপাশের লোকজন। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জামিন পেলে আত্মগোপনে চলে যান মোস্তফা। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন নামপরিচয়ে (কুদ্দুস, রজব আলী,
ইয়াসিন আলী ও সজিব ইত্যাদি) ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অটোচালক হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন। এরমধ্যেই চলমান মামলায় ২ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে মোস্তফাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত।

আটককৃত ওই পাষণ্ড পিতাকে ঝিনাইগাতি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

(আরআর/এএস/জানুয়ারি ০২, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test