E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দুদকে অভিযোগ

রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বড় হচ্ছে চট্টগ্রামের এলবিয়ন

২০২৩ জানুয়ারি ২৯ ১৬:০৭:৪৯
রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বড় হচ্ছে চট্টগ্রামের এলবিয়ন

জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম : এলবিয়ন গ্রুপ লিমিটেড চট্টগ্রাম ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান। যার সহযোগি ওষুধ শিল্প প্রতিষ্ঠান ‘এলবিয়ন ফার্মাসিউটিক্যাল’ ও ল্যাবরেটরিজ। ১৯৯১ সালে নগরীর একটি ভাড়া ভবনে তাঁদের ফ্যাক্টরির যাত্রা শুরু। দীর্ঘ ৩১ বছরে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা বেড়েছে বহুগুণ। আর এই ব্যবসা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ শিল্প প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব ফাঁকিও সমান্তরালে কয়েকগুণ বেড়েছে বলে দুদকে অভিযোগ পড়েছে।

এতে এলবিয়ন ল্যাবরেটরীজ লিমিটেড ও সহযোগি প্রতিষ্ঠানসমূহ রপ্তানীসহ বিক্রয় তথ্য গোপন করে বিপুল অঙ্কের সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগে জানানো হয়। অভিযোগ পেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট অফিস প্রতিষ্ঠানটির বিশাল অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকি উদ্ঘাটনে অনুসন্ধান করছে বলে সূত্রে জানা যায়।

বিচিত্র কৌশলে এলবিয়ন ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের প্রধান পরমার্শক, চেয়ারম্যান ও পরিচালকরা একই পরিবারের সদস্য হওয়ায় মিলেমিশে অতিকৌশলে বছরের পর বছর সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছেন। এ ফাঁকির পরিমাণ গত পাঁচ বছরে হাজার কোটি টাকারও অধিক বলে অভিযোগে জানান।

অন্যদিকে, যদিও প্রতিষ্ঠানটির দাবি তাঁরা কোন ধরনের ভ্যাট-ট্যাক্স-রাজস্ব ফাঁকি দেয়নি। ভ্যাট আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে নেওয়ার কথা জানান এনবিআর। এলবিয়ন গ্রুপের ভ্যাট-রাজস্ব ফাঁকির কৌশল দেখে নড়ে চড়ে বসেছে এনবিআর। তাঁদের ধারণা, প্রতিষ্ঠানটির দেশব্যাপী থাকা শতাধিক বিক্রয়কেন্দ্রে মূসক চালান ছাড়াই পণ্য সরবরাহ করে আসছে। এর মাধ্যমে বছরে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব-ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এ অভিযোগ খতিয়ে দেখতে মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়।

এমনকি এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব তল্লাশি, ডিলার/এজেন্টদের কোম্পানীতে রক্ষিত হিসাব ও ব্যাংক হিসাব তল্লাশি, হিসাব শাখা, কাস্টমস শাখার কমকর্তা ও সিএনএফ, বিক্রয় কর্মকর্তাদের ইন্টারোগেশন সেলে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সকল তথ্য হয়তো বেরিয়ে আসবে বলে অভিযোগে জানান। যদিও দুদকে অভিযোগ দেওয়া সেলিম রেজার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেননি।

এলবিয়ন ল্যাবরেটরীজ লিমিটেড গত পাঁচ বছরে স্থানীয় আমদানীকারকদের নিকট হতে যেসব কাঁচামাল ক্রয় করেছেন। তাতেও নানা গড়মিলে কোটি কোটি টাকা তথ্য গোপনের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের তীর কোম্পানীটির দায়িত্বশীল পদে থাকা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন, মো. রাইসুল উদ্দিন, তাসনিম মাহমুদ, মোহাম্মদ মুনতাহার উদ্দিন, শওকত আরা হক ও তাসনুবা আফরিনের উপর।

বর্তমানে এলবিয়ন ফার্মাসিউটিক্যাল ও এলবিয়ন ল্যাবরেটরিজ ২২৫ ধরনের ওষুধ উৎপাদন করছে। এর মধ্যে ৯০ ধরনের এনিমেল মেডিসিন রয়েছে। ওষুধ শিল্পের পাশাপাশি এর সঙ্গে যুক্ত হয় আরও ১০টি সিস্টার কনসার্ন। এগুলো হলো এলবিয়ন ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, এলবিয়ন অ্যানিমেল হেলথ লিমিটেড, এলবিয়ন কনজ্যুমার প্রোডাক্টস লিমিটেড, এলবিয়ন স্পেশালাইজড ফার্মা লিমিটেড, এলবিয়ন ট্রেডিং করপোরেশন, ক্লিনজি ফর্মুলেশন লিমিটেড, ফেভারিটা লিমিটেড, ফেভারিটা প্লাস্টিকা লিমিটেড, এলবিয়ন ডিস্ট্রিবিউশন লিঃ, ব্লু একুয়া ড্রিংকিং ওয়াটার সগাফ্রেডো জেনেতি এসপ্রেসো রেষ্টুরেন্ট। যার বেশির ভঅগ প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম নগরীর পূর্ব নাসিরাবাদ ও সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ড এলাকার রহমত নগরে।

এলবিয়ন গ্রুপের পরিচালকদের ব্যাংক হিসাব, ক্রেডিট কার্ডে খরচ, দেশে বিদেশে ভ্রমনের তথ্যের জন্য পাসপোর্ট, বিভিন্ন ক্লাবে সদস্য হওয়ার জন্য এককালীন অনুদান ও বাৎসরিক সদস্য ফি প্রদান ও যাচাই বাছাই করা হলে বিশাল অঙ্কের কর ফাঁকির তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে অভিযোগ জানান।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে এলবিয়ন ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. রাইসুল উদ্দিন সৈকত বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের ভেতরের কোনো লোক হয়তো ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই, যা করছি নিয়ম মেনে করছি।’

(জেজে/এসপি/জানুয়ারি ২৯, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test