E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

তদন্ত শেষে পিবিআই

মায়ের ‘অপহরণ’ সাজানো, নিয়মিত টাকা পাঠাতেন মরিয়ম

তদন্ত শেষে পিবিআই

২০২৩ ফেব্রুয়ারি ০৭ ১৬:২৪:২১
মায়ের ‘অপহরণ’ সাজানো, নিয়মিত টাকা পাঠাতেন মরিয়ম
তদন্ত শেষে পিবিআই

খুলনা প্রতিনিধি : দেশব্যাপী আলোচিত মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা বেগমের ‘অপহরণের’ ঘটনায় করা মামলার তদন্ত শেষ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে এ ‘অপহরণ নাটক’ সাজান মা-মেয়ে। এমনকী যাতে আরও বেশিদিন আত্মগোপনে থাকতে পারেন সেজন্য মা রহিমা বেগমকে নিয়মিত টাকা পাঠাতেন মরিয়ম। তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

তদন্তের প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একমাস আগে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান।অনুমোদনের পর তা সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা। খুব শিগগির অনুমোদন পাওয়া যাবে বলেও আশা করেন তিনি।

পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান জানান, রহিমা বেগম অপহরণের কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে রহিমা বেগম ও তার দুই মেয়ের (মরিয়ম মান্নান ও আদুরী আক্তার) বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এরআগে এ মামলায় পুলিশ যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ফলে তাদের এইমামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশও করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার আরও জানান, রহিমা বেগমের সৎছেলের কাছ থেকে জমি কিনেছিলেন হেলাল শরিফ ও গোলাম কিবরিয়া। সেই জমি যেন তারা দখল নিতে না পারেন সেজন্যই পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন আদুরী। কথিত অপহরণ মামলায় তাদের জেলও খাটতে হয়েছে।

২০২২ সালের ২৭ আগস্ট রাতে খুলনা নগরীর মহেশ্বরপাশা এলাকার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। তাকে অপহরণের অভিযোগ তুলে ২৮ আগস্ট তার ছোট মেয়ে আদুরী দৌলতপুর থানায় মামলা করেন। এ মামলায় গত ৪ সেপ্টেম্বর ও পরবর্তী সময়ে প্রতিবেশী পাঁচজনকে গ্রেফতার করে র্যাব ও পুলিশ।

তবে পিবিআই বলছে, রহিমা বেগম ২৭ আগস্ট রাতে তার তৃতীয় স্বামী বেল্লাল হাওলাদারের সহযোগিতায় ঢাকায় চলে যান। ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি ঢাকায় মেয়ে মরিয়মের কাছে ছিলেন। এরপর ৬ সেপ্টেম্বর চলে যান বান্দরবান। ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বান্দরবানে তিনি রিজিয়া বেগম নামের এক নারীর বাড়িতে ছিলেন। ১২ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একই এলাকার মনি বেগমের ভাতের হোটেলে কাজ নেন এবং তার বাড়িতেই থাকেন।

পরে একটি অফিসে কাজের জন্য গেলে তারা রহিমার কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্মনিবন্ধন চান। এতে ভীত হয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর রহিমা ফরিদপুরের বোয়ালমারীর সৈয়দপুর গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের বাড়িতে যান। সেখানে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে ভুয়া নাম এবং বাড়ি বাগেরহাট উল্লেখ করে জন্মনিবন্ধনেরও চেষ্টা করেন। ২৪ সেপ্টেম্বর উদ্ধার হওয়ার আগ পর্যন্ত রহিমা বোয়ালমারীতে ছিলেন। যা তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।

মায়ের খোঁজ দেওয়ার দাবিতে তার মেয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেত্রী মরিয়ম ও পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন, পোস্টারিং ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

মাকে ফিরে পেতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আকুতি-মিনতি করেন মরিয়ম মান্নান। যা দেশবাসীর মনে নাড়া দেয়। একপর্যায়ে ২২ আগস্ট ময়মনসিংহের ফুলপুর থানা পুলিশ তার মায়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট দেন মরিয়ম।

পরদিন ফুলপুর থানায় গিয়ে মরদেহটি তার মায়ের বলে শনাক্তও করেন। কিন্তু ২৪ সেপ্টেম্বর খুলনার দৌলতপুর থানা পুলিশ ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের বাড়িতে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকা রহিমাকে উদ্ধার করে। কুদ্দুস একসময় মহেশ্বরপাশায় রহিমার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test