E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নীলফামারীতে তুমুল উত্তেজনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো আ.লীগের শান্তি সমাবেশ ও বিএনপির পদযাত্রা

২০২৩ ফেব্রুয়ারি ২৫ ১৮:০৬:৩৭
নীলফামারীতে তুমুল উত্তেজনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো আ.লীগের শান্তি সমাবেশ ও বিএনপির পদযাত্রা

ওয়াজেদুর রহমান কনক, নীলফামারী : নীলফামারী শহরের পৌর মার্কেটের এক প্রান্তে আওয়ামী লীগের 'শান্তি সমাবেশ' অপর প্রান্তে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মসূচি চলাকালীন উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুর উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। বিএনপির পদযাত্রা থেকে উস্কানীমূলক শ্লোগান দেয়ার অভিযোগ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপির পদযাত্রার মঞ্চ গুড়িয়ে দিয়েছে এই ঘটনায় সংঘর্ষে বিএনপির অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে দাবি করেছেন জেলা বিএনপির সভাপতি। বিএনপি জামাতের নৈরাজ্য আগুন সন্ত্রাস গুজব ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগ আজ শনিবার শান্তির সমাবেশ করেছে। শহরের পৌর মার্কেট এলাকায় সকাল সাড়ে দশটায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবেশে জেলা, উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তি, 'ফ্যাসিবাদী' সরকারের পদত্যাগ, 'আওয়ামী সন্ত্রাস-নির্যাতনের বিরুদ্ধে' এবং বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানোসহ ১০ দফা দাবিতে নীলফামারীতে আজ শনিবার শহরের পৌর মার্কেটের দক্ষিণ দিকে জেলা বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা থাকলেও, বিএনপি এই কর্মসূচি সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। পদযাত্রা উপলক্ষে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে মঞ্চ তৈরি করা হয়। ১১টায় বিএনপির পদযাত্রার ঘোষণা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর সরকার মঞ্চে অবস্থান নেন। এসময় বিএনপি ও এর অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এই কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি 'পারিবারিক কারণে' সমাবেশে উপস্থিত হতে পারেননি বলে বিএনপির সমাবেশ থেকে জানানো হয়েছে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমাবেশস্থলে আওয়ামী লীগ ও এর সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সমবেত হতে থাকে।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপি-,জামায়াতের নৈরাজ্য, আগুন সন্ত্রাস, গুজব ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে নীলফামারী শহরের পৌর মার্কেটর উত্তর দিকে জেলা আওয়ামী লীগের 'শান্তি সমাবেশ' অনুষ্ঠিত হয়েছে। পৌনে ১১টায় সমাবেশের প্রধান অতিথি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মমতাজুল হক সমাবেশস্থলে এসে উপস্থিত হন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সমাবেশে লোক সমাগম বাড়তে থাকে। নির্ধারিত সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের 'শান্তি সমাবেশ শুরু হয়।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ সরকারের বক্তৃতার মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। এরপর বক্তব্য রাখেন জেলা যুবলীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক জাফর সাদেক তুহিন, জেলা তাঁতীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট জামিল আহমেদ। বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনিরুল হাসান শাহ আপেলের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একটি বিশাল মিছিল সমাবেশে যোগ দেয়। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাফিজুর রশীদ মঞ্জুর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা খানম এনা, জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহান পল্লবী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আল মাসুদ আলাল।

শহরের পৌর মার্কেটের দক্ষিণপ্রান্তে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দলীয় বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী নিয়ে উপস্থিত হন সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট কাজী আখতারুজ্জামান জুয়েল।
এসময় পৌর মার্কেটের উত্তর প্রান্তে আওয়ামী লীগের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুজার রহমান, সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ রহমানপৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুশফিকুল ইসলাম রিন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আহসান রহীম মঞ্জিল, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম আমিনুল হক। পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন মুনের বক্তব্য চলাকালীন পৌর মার্কেটের অপরপ্রান্ত থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা 'পিঠের চামরা রাখবো না, বাড়াবাড়ি করিস না' সহ প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অশ্লিল শ্লোগান দিতে থাকে।

ফলে, মুহূর্তের মধ্যে সমাবেশে থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সমবেত হয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের হটিয়ে দিয়ে পদযাত্রার মঞ্চ ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়ে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর নামে মুহূর্মুহূ শ্লোগানে পুরো এলাকা প্রকম্পিত করে তোলে। আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মমতাজুল হক। তিনি তার বক্তৃতায় বিএনপিকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করলে আগামীতে এক ইঞ্চি মাটিতে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।

জেলা আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুনরায় সংগঠিত হয়ে কোন উচ্চ বাচ্য না করে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে এসময় পুলিশ সামনে দাঁড়িয়ে যায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে ফিরে কর্মসূচির সমাপ্তি করে। এরপর বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর সরকারের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্য রাখেন সেচ্ছাসেবকদলের নেতা মোর্শেদ আযম, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মীর সেলিম ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক সেফাউল জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

(ওকে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test