E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জামালপুরে বেলটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে দুর্নীতি, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে অব্যাহতি

২০২৩ ফেব্রুয়ারি ২৮ ১৮:০৬:৪৫
জামালপুরে বেলটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে দুর্নীতি, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে অব্যাহতি

রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুর পৌর শহরের বেলটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে উন্নয়ন কাজে দুর্নীতি ও টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এক পরিপত্রের মাধ্যমে ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে অব্যাহতিপত্র পাঠানো হয়।

অব্যহতিপত্রে জানা যায়, ১৬ জানুয়ারি বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজের মালামাল কেনার জন্য অফিস সহকারী মো. কামরুজ্জামানের দ্বায়িত্বে নৈশপ্রহরী কাজিম উদ্দিনের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক বিসিকি শাখা থেকে ১ লাখ ২০হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান। ওই টাকা ফেরত প্রদানের জন্য ৫ ফেব্রুয়ারি ম্যানেজিং কমিটির একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সে অনুযায়ী ৭ ফেব্রুয়ারি তাঁকে আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত প্রদানসহ কারণ দর্শানোর পত্র পাঠানো হয়। পত্রপ্রাপ্তির পরও ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অদ্যাবধি (২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) কোনো টাকা প্রদান করেনি। এমনকি এ বিষয়ে তিনি কোনো সুষ্ঠু জবাবও দেননি।

এছাড়াও ম্যানেজিং কমিটি ও উন্নয়ন উপকমিটি সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, অশালীন আচরণসহ হুমকি প্রদান, বিশেষ করে উন্নয়ন উপকমিটি সদস্য সোহরাব হোসেন সরোয়ারকে অতর্কিতভাবে চেয়ার থেকে ধাক্কা দিয়ে ফলে দেন। সেই সঙ্গে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হয়েও সরকারি পরিপত্র বহির্ভূত নিজ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদেরকে টাকার বিনিময়ে অনবরত প্রাইভেট পড়িয়ে যাচ্ছেন।

বেআইনি কার্যকলাপ ও অপরাধের দায়ে স্বীকৃতপ্রাপ্ত বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষকগনের চাকরির শর্ত বিধিমালা-১৯৮৯ এর ধারা ১১,১২,১৩ ও ১৪ অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমানকে দ্বায়িত্ব থেকে অব্যাহতিসহ সহকারি প্রধান শিক্ষককের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

ম্যানেজিং কমিটি ও উন্নয়ন উপকমিটির সদস্য সরোয়ার হোসেন সরোয়ার বলেন, স্কুলের আত্মসাৎকৃত টাকা চাওয়ায় এবং প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলা মাত্রই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান আমাকে ধাক্কা দিয়ে চেয়ার থেকে ফেলে দেন এবং অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করেন।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাজ্জাত হোসেন বাবুল বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তিনি তাঁর নিজের ইচ্ছেমতো স্কুল পরিচালনা করেন। এছাড়া তিনি কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে একই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রাইভেট পড়ানোসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান বলেন, আমি ২০ ফেব্রুয়ারি বরখাস্তের একটি নোটিশ পেয়েছি এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি আরও একটি কারণ দর্শানোর নোটিশও আমাকে প্রদান করা হয়। এছাড়াও নতুন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে তিন কার্যদিবসের মধ্যে দ্বায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে। আমি আমার নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে জুলেখা সেন্ট্রাল স্কুলের একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে প্রাইভেট পড়াই যেটা আপনারা দেখেছেন।

সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন বলেন, ওই স্কুলের মারামারির ঘটনাটি আমি অবগত আছি। তবে কোনো বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাঁর নিজ বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতে পারবে না। এটি সরকারের পরিপত্র বহির্ভূত। যদি কোনো শিক্ষক এ নিয়ম ভঙ্গ করেন তবে সরকারি আইন অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(আরআর/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test