E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

খাল গিলে খাচ্ছে রাস্তা

২০২৩ মার্চ ০২ ১৭:৪৬:৪৯
খাল গিলে খাচ্ছে রাস্তা

শেখ ইমন, শৈলকুপা : খালটির পাড় ঘেষে বসবাস প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের। একে তো কাঁচা রাস্তা তারপর সেটা আবার ভেঙ্গে পড়েছে খালে। পায়ে হেটে চলছে পথচারীরা। কিন্তু যেতে পারছে না কোন যানবাহন। আর এই দুই শতাধিক পরিবার ছাড়াও এলাকার মানুষের মাঠে যাওয়ার প্রধান রাস্তা এটি। মাঝে মধ্যে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীরা খালের মধ্যে পড়ে আহতও হয়েছেন। তবে যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে রয়েছে শঙ্কা। ভাঙ্গা রাস্তার কারণে ফায়ার সার্ভিস, এ্যাম্বুলেন্স চলতে না পারায় চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয়রা। এমন অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে রাস্তাটি রক্ষা করে পাকা করণ ও ভাঙন রোধে ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা  এমন চিত্র ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের জি কে সেচ খালের রাস্তার।

সরেজমিনে দেখা যায়, মহিষাডাংগা ব্রীজের পুর্ব পাড় থেকে মাধবপুর গ্রাম হয়ে নাগিরহাট ব্রীজ এর পূর্ব পাড় পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা। আর এই রাস্তার পাশ দিয়ে গভীর ও প্রশস্ত একটি জিকে সেচ খাল গিয়ে মিশেছে কুমার নদীর সাথে। এর পাশেই রয়েছে মহিষাডাঙ্গা গ্রামের সু বিশাল ফসলের মাঠ। দীর্ঘ ১০ বছর যাবত কাঁচা রাস্তাটির বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে মিশে গেছে খালের সাথে। ফলে রাস্তা সংকুচিত হয়ে গেছে। খাল ঘেষা কাঁচা রাস্তাটির অবস্থা একেবারেই যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী। এখন শুধুমাত্র ঝুঁকি নিয়ে কোন মতে ছোট গাড়ি চলাচল করতে পারছে। তবে মাঠের কোন ফসল এই রাস্তা দিয়ে গাড়িতে আনা নেওয়া সেইসাথে বাজারে কোন পন্য পরিবহন সম্ভব না হওয়ায় এলাকার মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়েছে।

জানা যায়, কিছুদিন আগে মাধবপুর গ্রামের আবেদ আলীর বাড়িতে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি এসে এই রাস্তা দিয়ে ঢুকতে না পেরে নিরুপায় হয়ে ফিরে যায়। ফলে কয়েকটি ঘরসহ আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে অসুস্থ্য রোগী নিয়ে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ইদ্রিস মৃধা বলেন, আমার বাড়ির সামনে থেকে কয়েক মাস আগে রাস্তার বড় একটা অংশ ভেঙ্গে খালে পড়ে যায়। এখন অল্প একটু আছে সেখান দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ছোট গাড়ী ও মানুষ চলাচল করে। তাই যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। কর্তৃপক্ষের উচিত অতি দ্রুত রাস্তাটি রক্ষার জন্য স্থায়ীভাবে বাঁধের ব্যবস্থা করা।

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা ও ইউপি সদস্য আঃ লতিফ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এখানে বসবাস করছি। রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে চলাচল করতে অনেক সমস্যা হয়। বাড়ির কাজের জন্য মালামাল নেয়া যাচ্ছে না। এছাড়া বড় কোন গাড়ী ও মালবাহী গাড়ী চলাচল করতে পারছে না। তাই অতি দ্রুত রাস্তাটিকে বাঁধ দিয়ে রক্ষা করা উচিত।

ইজিবাইক চালক মুক্তার আলী বলেন, রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ায় ভাঙ্গা অংশ দিয়ে গাড়ি যেতে হয়, তাও খুব ঝুঁকি নিয়ে। যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এখনি রাস্তাটি মেরামত করা না হলে অন্যান্য এলাকার সাথে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। অসুস্থ্য কোন রোগী গাড়িতে নেওয়া সম্ভব না।

মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান জানান, ইতিমধ্যে আমি ওই রাস্তার ভাঙ্গা অংশটি কয়েকবার পরিদর্শন করেছি। এখানকার লোকজন সমস্যার মধ্যে আছে। মেরামতের জন্য উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিক মেরামতের জন্য কোন বরাদ্দ না থাকায় মেরামত করা সম্ভব হয়নি। বড় ধরনের বরাদ্দ পেলে স্থায়ীভাবে বাধ মেরামত করা হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান এম আব্দুল হাকিম আহমেদ বলেন, এলাকাটি পরিদর্শন করেছি। মাধবপুর পুরাতন ব্রীজের আশে-পাশের বেশ কিছু জায়গায় রাস্তা ভেঙ্গে খালের সাথে মিশে যাওয়ায় এলাকার মানুষ দূর্ভোগে পড়েছে। রাস্তাটি রক্ষা ও ভাঙন রোধ করা জরুরী হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান বলেন, মাধবপুর জি কে সেচ খালের ভাঙ্গন বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে সরেজমিন দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

(এসআই/এসপি/মার্চ ০২, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test