E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আগুন থেকে বন্ধুর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে বাঁচাতে পারলো না, বাঁচলো না নিজেও 

২০২৩ মার্চ ১৩ ১৮:১৭:১২
আগুন থেকে বন্ধুর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে বাঁচাতে পারলো না, বাঁচলো না নিজেও 

নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের বড়াইগ্রামের খাকসা উত্তরপাড়া গ্রামে অগ্নিকান্ডে নিজ গৃহে একই সঙ্গে পুড়ে মারা গেলেন অলি বকস এর স্ত্রী ও দুই সন্তান। ওই সময় ওই গৃহে উপস্থিত ছিলেন গৃহকর্তা অলি বকস এর ঘনিষ্ট বন্ধু আনোয়ার হোসেন। প্রিয় বন্ধুর ঘুমন্ত ১০ বছরের মেয়ে অমিয়া আক্তার ও ৪ বছরের ছেলে অমর বকস এবং বন্ধুর স্ত্রী সোমা আক্তার (৩০)কে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতরভাবে অগ্নিদগ্ধ হয় আনোয়ার হোসেন (৩৫)। তাকে প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি কর হয় এবং সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার রাতে মারা যায় সে। আজ সোমবার সকালে তার কফিনবন্দী লাশ উপজেলার খাকসা নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে স্বজনরা। 

গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে অগ্নিকান্ডে নিজ ঘরে পুড়ে দুই সন্তানসহ মায়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। অগ্নিকা-ে স্বামী অলি বকস (৩৫) ও তার ঘনিষ্ট বন্ধু আনোয়ার হোসেনকে অগ্নিদগ্ধ মুমূর্ষু অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে আশঙ্কামুক্ত হওয়ায় পরেরদিন চিকিৎসা নিয়ে ফিরে আসেন গৃহকর্তা অলি বকস। তবে ৬দিন পর বন্ধু আনোয়ার হোসেন ফিরে আসেন লাশ হয়ে। রান্না করার গ্যাস সিলিন্ডারের গ্যাস ঘরে ছড়িয়ে পড়ার পর গৃহবধূ সোমা রান্নার জন্য আগুন জ¦ালাতে গেলে সেই আগুন চারিদিকে ছড়িয়ে যায় এবং বসতবাড়ি সহ সকল মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। প্রাণহানি হয় ৪ জনের। অলি বকস পেশায় বাস চালক ছিলেন এবং বন্ধু আনোয়ার স্থানীয় মৌখাড়া বাজারে কুলি শ্রমিক ছিলেন। নিহত শিশুকন্যা অমিয়া ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী ছিলো।

নিহত আনোয়ারের মা জহুরা বেওয়া জানান, আনোয়ারের বাবা মারা গেছেন অনেক দিন আগেই। অর্থের অভাবে ছেলেকে লেখাপড়া শেখানো সম্ভব হয়নি। মাত্র ১২ বছর বয়স থেকেই শ্রমিকের কাজ শুরু করে আনোয়ার। সংসারে আছে স্ত্রী মুর্শিদা বেগম, তিন ছেলে আবদুল্লাহ (১৪), বায়দুল্লাহ (১০) ও সাবাবুল্লাহ (৮)। আনোয়ার তার তিন ছেলেকে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বড় ছেলে হাফেজিয়া মাদ্রাসায় এবং অপর দুই ছেলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। বসতভিটা ছাড়া তাদের আর কোনো জমি নেই। পরিবারের উপার্জনক্ষম একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে তিন নাতিনের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন মা জহুরা।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোমিন আলী জানান, অসহায় আনোয়ারের পরিবারের জন্য সর্বাতœক সহযোগিতা সব সময় অব্যাহত থাকবে।

(এডিকে/এসপি/মার্চ ১৩, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test