E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

গোবিন্দগঞ্জে সাবেক স্ত্রীর মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

২০২৩ মার্চ ১৪ ১৮:৪০:১৭
গোবিন্দগঞ্জে সাবেক স্ত্রীর মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

রবিউল ইসলাম, গাইবান্ধা : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের কামদিয়া ইউনিয়নে চকমানিকপুর গ্রামের মো. মমতাজ উদ্দিনের বড় ছেলে মো. মশিউর রহমান (৩১) তার সাবেক স্ত্রী মোছা. মাফি আক্তার অহেতুক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ এনে নিজ বাড়ীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী মশিউরের পরিবার।

মশিউর রহমান সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বলেন গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার বববনপুর (পারগয়রা) গ্রামের মো. রোমান মন্ডলের বড় মেয়ে মাফি আক্তারের সাথে পারিবারিক আলোচনায় গত ২০১০ সালের ১৯ জুলাই এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা দেনমোহরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিবাহের পর তাদের সংসার জীবন ভালোভাবেই চলছিলো।

কিন্তু হঠাৎ গত ২০১২ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর তার ডিভোর্সি স্ত্রীর দাদি স্ট্রোক করে মারা গেলে মাফি আক্তার বাবার বাড়ি চলে যায়। তার দাদির মৃত্যুর পরবর্তী কুলখানির পূর্বে ৫ম দিনে মশিউর রহমান শ্বশুরবাড়ি গিয়ে দেখেন তার স্ত্রী নেই। মশিউর পরে শ্বাশুড়িকে জিজ্ঞাসা করেন স্ত্রী মাফি কোথায় উত্তরে জানায় সে বাড়ীতে নেই।

পরক্ষণে মশিউর রহমান তার জেঠাশ্বশুর বাড়ি গিয়ে লোকমুখে জানতে পারেন তার স্ত্রী মাফি আগের দিন রাত ১২টায় মুন নামে একটি ছেলের সাথে মটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায় এবং তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য তার বাবা, চাচা, জেঠা, সকলেই ঔ ছেলের বাড়ীতে খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি।

মশিউর বলেন আমি আরো জানতে পারি যে, আমার ডিভোর্সি স্ত্রী বিয়ের সাতদিন পূর্বেও নাকি একই ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়ে বেশ কিছুদিন বগুড়ায় মুনের আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে ছিল। সেখান থেকে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। এমনকি নিজ গ্রামেও পার্শ্ববর্তী বাড়ীর শামিম নামে ছেলের সাথেও প্রেম ভালোবাসায় জড়িয়ে পরে এবং শামিম ও মাফির সম্পর্কে আত্বীয়তা সূত্রে চাচা-ভাতিজি বিধায় পারিবারিকভাবে শামিমের সাথে বিয়ে দেয়নি তাঁর পরিবার। পরবর্তীতে আত্মীয় স্বজনসহ গ্রাম্য সালিশ বৈঠকে মাফি আক্তার মশিউর রহমানের কাছে তার এহেন অপরাধের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চাইলে মশিউর রহমান তাকে ক্ষমা করে দিয়ে পুনরায় ঘর সংসার শুরু করেন।

সংসার জীবনে ২০১৭ সালে ১ জুলাই তাদের মাশিয়া রহমান মিজা(৬) নামে কন্যা সন্তান জন্ম হয়। এর পরে আবারো মাফি আক্তার ২০১৯ সালে পার্শ্ববর্তী গ্রাম গোয়ালপাড়ার জুয়েল নামীয় একটি ছেলের সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পরে এবং তারা দীর্ঘদিন মোবাইলে অডিও, ভিডিও কলে কথা বলতো এবং নিজ শরীরের অশ্লীল ছবি ম্যাসেঞ্জারে আদান-প্রদান করতো। সে সময় মাফি আক্তার মেয়ে মাশিয়া রহমান মিজা(২) বছরের শিশুকে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে, তার বাবা-মার বাঁধায় পালিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়।

মশিউর রহমান সংবাদ সম্মেলন উল্লেখ করে বলেন, এমনিবস্থায় ২০১৯ সালে এহেন ঘটনার কারনে মশিউর রহমান ঢাকা হতে বদলি নিয়ে নিজ থানায় যোগদান করেন এবং ২০২১ সালে একই অফিসে অনলাইন সেবা সংক্রান্ত কল সেন্টারে মাফি আক্তার চাকরিতে যোগদান করেন। চাকুরি করা সময়ে আবারও পার্শ্ববর্তী গ্রাম বালুপাড়ার রউফ নামে ছেলের সাথে মোবাইলে প্রেমের সর্ম্পকে জড়িয়ে যায়। সে সময় রউফ বিভিন্ন ফেক ইমু মাধ্যমে মশিউর রহমানকে মাফি আক্তারের অশ্লীল ছবি পাঠিয়ে দেয়। অনলাইনে ছবি প্রকাশ করে ভাইরাল করবে মর্মে ভয়ভীতিও দেখাইতো। ছবিগুলো সংরক্ষিত আছে।

মশিউর বলেন বিষয়টি নিয়ে আবারও গ্রাম্য সালিশ বৈঠক বসা হলে, মাফি আক্তার উক্ত বৈঠকে ভুল স্বীকার করে বলেন,আর জীবনেও এ ধরনের ভুল কাজ করবো না মর্মে আবারও সংসার জীবন শুরু করি।

কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই মাফি আক্তার মেয়ে মাশিয়া রহমান মিজাকে গোবিন্দগঞ্জের বাল্য শিক্ষা স্কুলের শ্রেণীকক্ষে রেখে কাউকে কিছু না জানিয়ে রিকশা যোগে আবারো পালিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে আমি তাৎক্ষণিক স্কুলে হাজির হয়ে দেখি মেয়ে মাশিয়া মিজা প্রচুর কান্নাকাটি করছে। বিষয়টি আমার সাবেক শ্বশুর রোমান মন্ডলকে জানাই। তিনি গোবিন্দগঞ্জ শহরে অনেক খোঁজাখুজি করিয়া না পাওয়ায় গোবিন্দগঞ্জ থানায় হাজির হয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন। যার নং-১৭২৭, তারিখ- ৩১/১০/২০২২ইং । পুলিশি তৎপরতায় ৫ নভেম্বর রাত ২টায় ঢাকা মোহাম্মদপুরের এক ভাড়া বাসা হতে রবিউল করিম নামে এক পুরুষসহ তাকে আপত্তিকর অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

গ্রাম্য সালিশে মাফি আক্তার বলেন, সে আর মশিউর রহমানের সংসার করবে না। উভয় পক্ষের সমঝোতায় এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দেনমোহর নগদ পরিশোধ করে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। একই বৈঠকে গণ্যমান্য ব্যাক্তিগন মেয়ে মাশিয়া রহমান মিজাকে গোবিন্দগঞ্জ নোটারি পাবলিকের এফিডেভিট ঘোষনাপত্র- ৩৬৯/২২, তারিখ:- ০৯/১০/২০২২ইং মূলে মাশিয়া রহমান মিজাকে আমার জিম্মায় স্বেচ্ছায় দেওয়া হয়।

বর্তমানে মেয়ে মিজাকে জোরপূর্বক আটকের অভিযোগ দিয়ে ১৫ জানুয়ারি/২৩ পুলিশসহ রাত সাড়ে ১০টায় মশিউর রহমানের বাড়িতে হাজির হয় আমার সাবেক স্ত্রী মাফি। পরে মেয়ে মাশিয়া রহমানের জবানবন্দিতে বিষয়টি মিথ্যা বলে প্রমানিত হয়।

এতেও তারা ক্ষান্ত হয়নি,পরবর্তীতে গত ২৪ জানুয়ারি বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালত গাইবান্ধায় মিথ্যা অভিযোগ এনে ধারা-১০০, আইনে মশিউর রহমানকে ১নং এবং তার পিতা মমতাজ উদ্দিনকে ২নং, ও মাশিয়া রহমান মিজাকে ভিকটিম হিসেবে মামলা রুজু করেন।

মামলায় তার বর্ণনাতে উল্লেখ করেন মশিউর রহমান আত্বীয়তা ভঙ্গকারী, যৌতুকলোভী ও পরঅন্যায়কারী। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর মশিউর রহমান মেয়েকে নানাবাড়ি হতে ভুলিয়ে ভালিয়ে নিজ বাড়িতে আনে এবং তাকে জোরপূর্বক আটকে রাখে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

মশিউর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বলেন বর্তমানে মিথ্যা বানোয়াট মামলায় আমি আমার মেয়ে মাশিয়াসহ পরিবারের সকলেই মানবেতর জীবন যাপন করছি।

(আর/এসপি/মার্চ ১৪, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test