E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মধুখালীতে ২য় শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত 

২০২৩ মার্চ ২৭ ১৮:৫১:৪১
মধুখালীতে ২য় শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত 

স্টাফ রিপোর্টার, ফরিদপুর : মধুখালী উপজেলার মাঝকান্দী এলাকা থেকে ২য় শ্রেণী পড়ুয়া ৭বছরের সেই শিশুর ধর্ষণের অভিযোগটি সম্পূর্ন মিথ্যা প্রমাণিত করেছে পুলিশ। রবিবার (২৬ মার্চ) পুলিশ সুপার মো: শাহজাহান (পিপিএম সেবা) জানান, ওই দিনই আমি শিশুটির বক্তব্য শুনে বুঝতে পারি যে এটা একটি পরিকল্পিত সাজানো নাটক।

ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা লিপি এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী, তিনিই শিশুটিকে তার বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলতে বাধ্য করেছিলেন। আমি ওই দিনই নিরপরাধ শিশুটির বাবা ও ভাইকে ছেড়ে দিয়ে পরে ১৯ তারিখে মূল অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে তাদেরকে আটক করেছি, আদালত তাদের জামিন দিলে আমারতো কিছু বলার নেই।

এই ঘটনার পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আড়ুয়াকান্দী স্কুলের ক্লাস রুমের মধ্যে শিশুটির নিরপরাধ ভাই ও তার বাবাকে নরপশুদের মতো পেটানোর একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওটি দেখার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ ঘটনায় শিশুটির বাবা ইয়ামিন মৃধা ওরফে রাজু জানান, আড়ুয়াকান্দী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা লিপি ম্যাডামের কোন সন্তান না থাকায় লিপি মাঝে মধ্যেই আমার মেয়েকে স্কুল থেকে তার বাসায় নিয়ে যায়। আমি আমার মেয়েকে ফেরত চাইলে তিনি আমার সাথে খারাপ আচারণ করেন।

আমাকে গরীব অসহায় ভেবে দেশ ও সমাজের কাছে আমাকে খারাপ মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে আমার মেয়েকে তার জিম্মায় রাখার নাটক সাজিয়েছিলো, কিন্তু একজন ফেরেস্তার মত পুলিশ সুপার স্যার এর কারনে তার এই যড়যন্ত্র সফল হয়নি। তিনি এই জঘন্য অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।

গত শুক্রবার (১৭ই মার্চ) দুপুরে আড়ুয়াকান্দী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পুলিশ ও সাংবাদিকদের ফোন করে জানানো হয় যে, দুই ধর্ষণকারীকে আটক করে ওই স্কুলের রুমের মধ্যে রেখেছে স্থানীরা। ওই সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গেলে উপস্থিত সকলেই জানান, শিশুটি আড়ুয়াকান্দী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণীর ছাত্রী। তার মা নেই, সে তার বাবার সাথে মাঝকান্দী গ্রামে একটি ভাড়ার বাসায় থাকেন। বাবা সপ্তাহে ৫দিন কাজের জন্য বাসার বাহিরে থাকেন। এই সুযোগে শিশুটির সৎ ভাই জোরপূর্বক তার সাথে অসামাজিক কাজ করেন। শিশুটির বাবা সপ্তাহে দুই দিন বাসায় আসেন এবং শিশুটির সাথে অসামাজিক কাজ করে চলে যান।

তারা আরও বলেন, প্রতিদিন রাত ১২ টার পরে শিশুটির ঘর থেকে তার কান্নার আওয়াজ শোনা যায়। এই বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা সবাই মিলে সুকৌশলে শিশুটির বাবা ও সৎ ভাইকে সংবাদ দিয়ে এনে আড়ুয়াকান্দী স্কুলঘরে আটকিয়ে রেখে তারা পুলিশকে ফোন করেন। তাদের এই মিথ্যা সাজানো কথা বিশ্বাস করে পুলিশ অভিযুক্ত ওই দইুজন বাবা ও ছেলেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

পরবর্তিতে পুলিশের কাছে বিষয়টি সন্দেহ হলে পুলিশ আটককৃতদের সরাসরি পুলিশ সুপারের কাছে নেন, তারা দুজন নিরাপরাধ বুঝতে পেরে পুলিশ সুপার সাথে সাথেই তাদের ছেড়ে দেন। সেই সাথে শিশুটির ভাইকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করেন।

ওই নিরপরাধ দুজন হলেন, মধুখালী উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নের সালামতপুর গ্রামের ইয়ামিন মৃধা (৪০) ও তার ছেলে রাজন মৃধা (১৩)।

(ডিসি/এসপি/মার্চ ২৭, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test