E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফরিদপুরে দ্বিতীয় বৃহত্তম ঐতিহ্যবাহী কাটাগড় মেলা 

২০২৩ মার্চ ২৭ ১৮:৫৩:৫৬
ফরিদপুরে দ্বিতীয় বৃহত্তম ঐতিহ্যবাহী কাটাগড় মেলা 

প্রসেনজিৎ বিশ্বাস, নগরকান্দা : বোয়ালমারীর উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের কাটাগড় গ্রামে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় বৃহত্তম ঐতিহাসিক কাটাগড়ের মেলা। করোনার কারণে গত কয়েক বছর মেলা বন্ধ থাকলেও এবার চলছে জাকজমক পূর্ণ মেলা। কয়েকশত একর এলাকাজুড়ে তিন দিনব্যাপী এ মেলা বসার কথা থাকলেও চলে সাত দিনেরও বেশি সময়। যা দক্ষিণ বাংলার বৃহত্তর মেলা হিসেবে পরিচিত। জনশ্রুতিতে জানা যায় প্রায় ৪০০ বছরের বছরের অধিক এ গ্রামীণ মেলা। এটি দেওয়ান শাগের শাহর মেলা হিসেবে পরিচিত। 

প্রতিবছর বাংলা সনের ১২ চৈত্র সাধক দেওয়ান শাগির শাহ্ (রহ.) এর উফাত দিবসের ওরস উপলক্ষে বসে এই মেলা।

ফকির সন্ন্যাসী আন্দোলনের আধ্যাত্মিক গুরু দেওয়ান শাগির শাহ্ (রহ.) অষ্টাদশ শতকের কোনও একসময় আস্তানা গাড়েন ফরিদপুরের কাটাগড়ে। শাগির শাহ্ (রহ.) ব্রিটিশ বিরোধী ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলনের অন্যতম নেতা মজনু শাহর আধ্যাত্মিক গুরু হিসেবে পরিচিত হলেও ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ কেউ মজনু শাহের শাগরেদ হিসেবে দাবি করলেও তিনি আধ্যাত্মিক শক্তি ও বিভিন্ন অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন বলে স্বীকার করে নিয়েছেন সব ঐতিহাসিকরা। উনবিংশ শতকের চল্লিশের দশকের কোনও একবছর ১২ চৈত্র মৃত্যু হয় তার। কারও কারও মতে ওই দিন তিনি নিজেই কবরস্থ হয়ে দেহ বদল করেন। তখন থেকেই এ দিবস উপলক্ষে সারাদেশ থেকে হাজার হাজার ভক্ত সমবেত হন কাটাগড়ে। বসে মেলা, ফকির-সন্ন্যাসী ভক্তরা আসর জমান ভক্তিমূলক সংগীতের। নানা স্থান থেকে ভক্তরা আসেন মানত নজরানা নিয়ে। ১১ চৈত্র থেকে শুরু হওয়া তিনদিনের এই মেলা ১৩ চৈত্র শেষ হলেও এর রেশ থাকে মাসব্যাপী।

বিশেষ করে ১২ চৈত্র মেলা ও মাজার প্রাঙ্গণে তীল ধরনের জায়গা থাকে না। মেলায় দর্শনার্থীদের জন্য মনোরঞ্জন ও আনন্দদায়ক করার জন্য রয়েছে। সাঁজ-বাতাশার দোকান, দুই থেকে তিনশ’ প্রসিদ্ধ মিষ্টির দোকান ও খাবার হোটেল, নাগরদোলা, যাদু প্রদর্শনী, ভ্যারাইটি শো, মোটরবাইক শো, ফার্নিচার সামগ্রীসহ হরেক রকম খেলনা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় গৃহস্থ সামগ্রীর কয়েক হাজার দোকানপাট।

এ মেলা উপলক্ষে আশ-পাশের বেশ কয়েক উপজেলার জনসাধারণ উপস্থিতি অনেকে চোখে পড়ার মতো।

দেওয়ান শাগির শাহ্ (রহ.) এর আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে মোঃ সিদ্দিক ফকির বলেন,কাটাগড় মেলা এই এলাকায় নাম করা একটি মেলা। মেলায় এক সময় ঘোড়া দৌড় হতো এখন আর তা হয় না। হিন্দু মুসলিম সকলে মিলে এই মেলা অংশগ্রহণ করেন। ১২ চৈত্র মেলা অনুষ্ঠিত হয় কিন্তু ১২ চৈত্রর ৫-৬ দিন আগে থেকে মেলা শুরু হয়ে যায়। দূর দুরন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খিচুড়ি ব্যবস্থা থাকে।

(পিবি/এসপি/মার্চ ২৭, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test