E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নবীনগরে সিজিল মিয়া নিহতের ঘটনায়

অবশেষে মামলা না করার লিখিত আবেদন নিহতের পরিবারের!

২০২৩ মে ০৬ ১৮:১৩:২১
অবশেষে মামলা না করার লিখিত আবেদন নিহতের পরিবারের!

গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে জুম্মার নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর জের ধরে নামাজ শেষে প্রতিপক্ষের কিল ঘুষিতে সিজিল মিয়া (৪৬) নিহত হওয়ার ঘটনায় অবশেষে এ নিয়ে কোন মামলা করবে না বলে পুলিশের কাছে লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছেন নিহতের পরিবার!

ঘটনার পরদিন আজ শনিবার নিহতের স্ত্রী ও ভাই পুলিশের কাছে এ নিয়ে লিখিতভাবে মামলা না করার আবেদন করেছেন বলে উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে নিশ্চিত করেছেন নবীনগর থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আনোয়ার।

তবে ওসি সুস্পষ্টভাবেই এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, 'নিহতের পরিবার এ বিষয়ে মামলা না করলেও, ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর হত্যার আলামত পাওয়া গেলে, পুলিশের পক্ষ থেকেই পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে ময়না তদন্তের জন্য লাশ জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে।'

এদিকে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘটনার পরপর আটক করা নূরে আলম (৪৫) কে পুলিশ আজ শনিবার কোর্টে চালান করেছে বলেও ওসি জানান। গ্রেপ্তার হওয়া নূরে আলম নবীনগর পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলমনগর গ্রামে শুক্রবার দুপুরে জুম্মার নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ওই গ্রামের সিজিল মিয়া ও শাহ আলমের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। পরে নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর দুজনের মধ্যে ফের বাগবিতন্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির (কিল ঘুসি) ঘটনাও ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় শাহ আলমের কিল ঘুসিতে আহত সিজিল মিয়াকে গ্রামের কয়েকজন তার বাড়িতে পৌঁছে দেন। কিন্তু বাড়িতে পৌঁছার পর সিজিল মিয়া আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাকে তাৎক্ষণিকভাবে পাশের লাপাংয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকেরা তাকে দ্রুত নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে আনা হলে, কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে এবং এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শাহ আলমের ভাই আওয়ামীলীগ নেতা নূরে আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আলমনগর থেকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

এ বিষয়ে আলমনগর গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, 'ঘটনাটি খুবই দু:খজনক। শুনেছি, সিজিল মিয়া হাই প্রেসারের রোগী ছিলো। মসজিদ থেকে বের হয়ে দু'জনের মধ্যে তর্কাতর্কি ও হাতাহাতির ঘটনার পর সিজিল বাড়িতে এসে নাকি বিশ্রাম নিচ্ছিলো। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই শুনি সিজিল মারা গেছে। তার এই হঠাৎ করে অকালে এমন মৃত্যুর খবরে পুরো গ্রামবাসি শোকাহত। তবে এ ঘটনায় নিরাপরাধ আওয়ামীলীগ নেতা নূরে আলমকে কেন পুলিশ আটক করে চালান করলো, সেটিইতো বুঝতে পারলাম না।'

এ বিষয়ে নিহত সিজিল মিয়ার পরিবারের সাথে বারবার কথা বলার চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি।

তবে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সিজিল মিয়ার মৃত্যুর ঘটনাটি নিয়ে গ্রামের সার্বিক পরিবেশ যেন বিনষ্ট না হয়, সেকারণে গ্রামের সাহেব সর্দারদের প্রচেষ্টায় সামাজিকভাবে ঘটনাটির নিষ্পত্তির একটি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আর এ কারণেই নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা এ নিয়ে কোন মামলা মোকদ্দমা করা হবে না বলে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

(জিডি/এসপি/মে ০৬, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test