E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কানাইপুরে নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় হিন্দু পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ

২০২৩ মে ০৯ ২১:০৪:০৫
কানাইপুরে নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় হিন্দু পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, ফরিদপুর : ফরিদপুরের কানাইপুরে নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় ১০/১৫টি হিন্দু পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই হামলায় মহিলাসহ ৫জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে রত্ম সরকার ও তাপস বিশ্বাস নামে দুজন গুরুতর আহত হয়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে চিকিতসাধীন রয়েছেন।

গত সোমবার রাত আটটার দিকে জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রণকাইল গ্রামের মাঝিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আতংকে দিন পার করছেন মাঝিপাড়ার ২০টি হিন্দু পরিবার। জানা যায়, এই গ্রামে দুটি গ্রাম্য পক্ষ রয়েছে। যার একটি পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছে স্থানীয় বিএনপি নেতা ফজলু কাজী এবং অপরপক্ষে রয়েছে কানাইপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফকির মো: বেলায়েত হোসেনের সমর্থকেরা। মাঝিপাড়ায় হিন্দুদের মধ্যেও দুটি গ্রুপ রয়েছে। এরমধ্যে ফজলু কাজীর সমর্থক হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছে সুজিত বিশ্বাস এবং ফকির মো: বেলায়েত হোসেনের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছে অরবিন্দু বিশ্বাস। গ্রাম্য পক্ষপাল্লাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন যাবত তাদের মধ্যে কোন্দল চলে আসছে। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ফকির মো: বেলায়েত হোসেন হেরে যাওয়ায় তাদের মধ্যে সংঘাতের সৃষ্টি হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গেলে মাঝিপাড়ার বিধান বিশ্বাসের স্ত্রী দিপালী ভয়াবহ হামলার বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে আমাদের চেয়ারম্যান প্রার্থী বেলায়েত হোসেন হেরে যাওয়ায় বিভিন্ন সময় আমাদের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে ফজলু কাজীর লোকজন। বর্তমানে আমাদের বাড়িতে থাকাই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গত সোমবার রাতে সুজিতের নেতৃত্বে মুসলমানদের নিয়ে আমাদের বাড়ির উপর দিয়ে ২০ থেকে ২৫ জন শোডাউন দেয়। এ সময় তারা রত্ম সরকার নামে আমাদের একজনকে মারধর করে। আমি ঠেকাতে গেলে আমাকেও মারধর করে। এক পর্যায়ে তারা ঘরের ভেতর থেকে মহিলা ও পুরুষদের টেনে হেচড়ে বের করে মারতে থাকে। এ সময় গোবিন্দ বিশ্বাসের ছেলে তাপস বিশ্বাসকে নির্মমভাবে মারধর করে ওরা।

এমন ঘটনার আতংকে পুরুষ সদস্যরা ক্যামেরার সামনে কথা বলতে চান না। তারা বলেন, ভিডিওতে কথা বললে আমাদের বাড়িতে থাকতে দিবে না ওরা। আর এসব বলেও কি হবে আর। কোনো ব্যবস্থাতো প্রশাসন নেয় না। যুদ্ধের সময় যেভাবে অপারেশন সার্চলাইট হয়েছে, ঠিক সেভাবে আমাদের উপর হামলা হয়েছে। তবে, অপর এক মহিলা প্রশাসনের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান। তিনি বলেন, আমাদের উপর হামলা হলেও পুলিশ কিছু করতে পারে না। আমাদের দাবি-প্রশাসন দ্রুত জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। আমরা এখানে শান্তিতে বসবাস করতে চাই।

এ সময় কথা হয় অরবিন্দু বিশ্বাসের সাথে। তিনি বলেন, এভাবে মানুষকে মারে কীভাবে। রত্মকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে লাঠিশোটা দিয়ে পিটিয়ে মারা গেছে ভেবে ফেলে রাখে। এরপর রাতে আমাদের প্রতিটি ঘরে ঘরে ঢুকে তল্লাসি করে মারধর করে। এ সময় তাপসকেও লাঠিশোটা দিয়ে প্রচন্ড মারধর করে।

এসব বিষয়ে ফজলু কাজীর সমর্থক সুজিত বিশ্বাস বলেন, আমরা বাড়ির উপর দিয়ে হেটে গেলে ওরা গালিগালাজ করে। গত সোমবার রাতে কাজী বাড়ীর কয়েকজন ছেলে হেটে যাওয়ার সময় ওরা খারাপ কথা বলে। এরপর একটি মারধরের ঘটনা ঘটেছে। তবে, মহিলাদের ঘর থেকে বের করে আনা হয়নি।

এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ওসি এম.এ. জলিলকে মুঠোফোনে বার বার ফোন দেয়া হলে রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয় সম্ভব হয়নি।

(ডিসি/এএস/মে ০৯, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test