E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফরিদপুর মেডিক্যাল হাসপাতালের নানা অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে 

২০২৩ মে ১০ ১৬:৫৬:৪৭
ফরিদপুর মেডিক্যাল হাসপাতালের নানা অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে 

স্টাফ রিপোর্টার, ফরিদপুর : ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল হাসপাতালে আউটসোর্সিং স্টাফ নিয়োগে কোটি টাকার দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। এছাড়া মেডিক্যাল হাসপাতালকে কেন্দ্র করে দালাল কর্তৃক সেবা-প্রত্যাশীদের হয়রানি, পোস্টমর্টেম শেষে টাকা ছাড়া লাশ না দেয়া, রোগীর স্বজনদের সাথে স্টাফদের অসৌজন্যমূলক আচরণ,রোগীদের কৌশলে বিভিন্ন ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া, ট্রলিতে করে রোগী নেয়া শেষে টাকা আদায়সহ নানা অব্যবস্থাপনারও প্রমাণ মিলেছে বলে জানায় দুদক।

ফরিদপুর মেডিক্যাল হাসপাতাল নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার (৯ মে) বেলা ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করেন ফরিদপুর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ের একটি টিম। অভিযান শেষে সাংবাদিকদের আউটসোর্সিং নিয়োগে অনিয়মসহ বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জানান ফরিদপুর দুদক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন।

দুদকের এই কর্মকর্তা জানান, আউটসোর্সিং নিয়োগ সংক্রান্তে চাকুরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে ৫০ হাজার থেকে শুরু করে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত টাকা নেন ওয়ার্ড মাষ্টার (ভারপ্রাপ্ত) মো. দিরাজ উদ্দিন। এর মধ্যে বেশিরভাগ মানুষের চাকুরি হয়নি এবং টাকাও ফেরত দেয়া হয়নি। এছাড়া আটউসোর্সিংয়ে নিয়োগকৃত ৫০ জন কর্মীর নিকট থেকে ২৫ হাজার করে টাকা আদায় করা হয় বলে নিয়োগপ্রাপ্তরা জানিয়েছেন। এছাড়া মেডিক্যালে বিনা বেতনে ৯০ জন স্টাফ কাজ করছে, এদের দ্বারা রোগী ও রোগীর স্বজনের হয়রানির শিকার হচ্ছে।

মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে ঘুরে অভিযান পরিচালনা করেন দুদকের এই টিম। এ সময় ওয়ার্ড মাস্টারের অফিস কক্ষে ঢুকেই ওয়ার্ড মাস্টার দিরাজ উদ্দিনকে তলব করেন তারা। এক পর্যায়ের একটি আলমিরার তালা ভেঙে এবং কয়েকটির তালা খুলে নথিপত্র দেখেন তারা।

এ সময় নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মের বিভিন্ন নথিপত্র ও ফাইল পাওয়া যায়। একটি ফাইলে বিনা বেতনে চাকুরির করার অঙ্গিকারানামার তথ্যও মিলে, যেখানে ৯০ জন স্টাফের নাম উল্লেখ রয়েছে।

অভিযানের প্রথম দিকে অনিয়ম সংক্রান্ত বিষয়ে অস্বীকার করেন দিরাজ উদ্দিন। এক পর্যায়ে দুদকের এই কর্মকর্তার জেরার মুখে সকল সত্য স্বীকার করতে বাধ্য হন তিনি।

এ সময় ওয়ার্ড মাস্টার দিরাজ উদ্দিন জানান, টাকাগুলো নিয়ে মেডিকেলের পরিচালক স্যারকে ২৫ হাজার করে এবং আউটসোর্সিং কর্মী নিয়োগকৃত কোম্পানি গালভ সিকিউরিটি সার্ভিসকে ২৫ থেকে ৫০ হাজার করে টাকা দেয়া হয়েছে।

এ সময় টাকা দেয়ার বিষয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীরা দুদকের এই টিমের কাছে স্বীকার করেন। তারা জানান, ঢাকায় গিয়ে কোম্পানিকে ২৫ হাজার করে টাকা দেয়া হয়েছে। তারা আরও বলেন, ঠিকমতো বেতন দেয়া হয়নি।

এ সময় আশরাফুল নামে এক কর্মী দুদককে জানান, প্রথমে আমি ৮০ হাজার টাকা দিয়েছি, এরপর ২৫ হাজার দিতে হয়েছে। এখন পর্যন্ত এক লক্ষ ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।

এছাড়া অভিযানকালে হাসপাতালের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা নিয়ে কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেন দুদক এবং দালাল বন্ধে বিনা বেতনে ৯০ জন কর্মীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান।

অভিযান পরিচালনা শেষে ফরিদপুর দুদক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, আউটসোর্সিং কর্মী নিয়োগে দুর্নীতিসহ অনেক অনিয়মের সত্যতা পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ওএস/এসপি/মে ১০, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test