E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নগরকান্দায় আওয়ামী লীগ অফিস হামলা ও ভাঙচুর

২০২৩ মে ১১ ২১:০৩:০৭
নগরকান্দায় আওয়ামী লীগ অফিস হামলা ও ভাঙচুর

ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের নগরকান্দায় আওয়ামী লীগের উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের বেশ কয়েকটি চেয়ার ভাঙচুর ও আওয়ামী লীগের ব্যানার-ফেস্টুন ভাংচুর করা হয়েছে।  বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিকালে উপজেলা সদরে এ ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ ঘটনাস্থলে থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, নগরকান্দায় দীর্ঘদিনর ধরে চলছে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল বিরাজ করছে। এই সুযোগে একটি অংশ ধরে রাখার জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়া চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। কিছুদিন আগে সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন সরকারী চাকুরি পাওয়ার জন্য দলীয় পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন। তার অব্যাহতির পর সাধারণ সম্পাদক পদ শুণ্যে হলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক ও সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নাম্বার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. জামাল হোসেন মিয়াকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেন। দায়িত্ব দেওয়ার পরেই জামাল হোসেন মিয়া আওয়ামী লীগের সমাবেশ আহব্বান করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি (ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) আব্দুস সোবান মিয়ার সাথে কোন আলাপ-আলোচনা ছাড়াই। এনিয়ে সংঘাতপূর্ণ পরিবেশ হতে পারে বলে সোবান মিয়া একটা চিঠি দেন জেলা আওয়ামী লীগকে। কে শোনে কার কথা। জামাল হোসেন মিয়ার আহব্বান করা সমাবেশকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার বিকালে জামাল মিয়া লোকজন নিয়ে অফিসে রওনা হলে স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর সমর্থকরা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় অবস্থান নেয়। তখন জামালের সমর্থকরা জুঙ্গুরদী এলাকায় অবস্থান করে। পরে জামালের সমর্থকরা জড়ো হয়ে সমাবেশ করতে কার্যালয় গেলে লাবু চৌধুরীর সমর্থকরা প্রথমে বাধা দেয়। একপর্যায় লাবু চৌধুরীর সমর্থকরা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে জামালের সমর্থকরা দেশিয় অস্ত্রসহ পুলিশকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে হামলা ও ভাংচুর চালায়।

যাহা একাধিক ভিডিও সোসাল মিডিয়া ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাধারন সম্পাদকের নির্দেশে বৃহস্পতিবার বিকেলে দলীয় কার্যালয় একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এতে বাধা দেন স্থানীয় এমপি শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর সমর্থকরা। তারা দলীয় কার্যালয় দখলে নিয়ে রাখেন। এ সময় আমরা কার্যালয় গেল লাবু চৌধুরীর সমর্থকরা পালিয়ে যায়। পরে আমরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে চলে আসি। কার্যালয় ভাঙচুর সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার সমর্থকরা কার্যালয় ভাঙচুর করেনি। লাবু চৌধুরীর সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে অফিসের চেয়ার ভেঙ্গে আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুস সোবহান মিয়া নিজেকে সভাপতি দাবি করেন। কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হলো আয়মন আকবর বাবলু চৌধুরী। অথচ তিনি নিজেকে সভাপতি দাবি করে বিবৃতি দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে।

নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি (ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) আব্দুস সোবান মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক) এ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া আমার সাথে আলাপ আলোচনা না করেই বৃহস্পতিবার বিকেলে দলীয় কার্যালয় সমাবেশ আহ্বান করেন। যা সংগঠন পরিপন্থী। সেজন্য এলাকার উত্তেজনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মর্মে জেলা কমিটির সভাপতি-সম্পাদককে অবগত করা হয় চিঠির মাধ্যমে। তারপরও আজ বিকালে জামাল মিয়া লোকজন নিয়ে অফিসে রওনা হলে স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর সমর্থকরা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় অবস্থান নেয়। তখন জামালের সমর্থকরা জুঙ্গুরদী এলাকায় অবস্থান করে। পরে জামালের সমর্থকরা জড়ো হয়ে সমাবেশ করতে কার্যালয় গেলে লাবু চৌধুরীর সমর্থকরা প্রথমে বাধা দেয়। একপর্যায় লাবু চৌধুরীর সমর্থকরা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে জামালের সমর্থকরা দেশিয় অস্ত্রসহ দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে হামলা ও ভাংচুর চালায়।

ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী বলেন, কারা আওয়ামী লীগ কার্যালয় হামলা করেছে তার ভিডিও আমার কাছে আছে। ওই ভিডিও প্রমাণ করে দিবে কারা আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর করেছে। আর নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আয়মন আকবর বাবলু চৌধুরী এলাকায় না আসায় নিয়ম অনুয়ায়ী আব্দুস সোবহান মিয়াকে এক নম্বর সহসভাপতি হিসেবে তাকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়েছে।

সরকারি পুলিশ সুপার (সার্কেল নগরকান্দা) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনার সময় কয়েক রাউন্ড ফাকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখতে অরিক্তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ অফিসে কারা হামলা করেছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

(এএনএইচ/এএস/মে ১১, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test