E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন   

২০২৩ মে ২৮ ১৯:২৮:৪১
গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন   

তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতির পিতা। তিনি নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আজীবন লড়েছেন। মানবতাবাদী এই নেতা শাসকের শোষণ ও বঞ্জনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। বাঙালি জাতিকে তিনি পরাধীনতার শৃংখল থেকে মুক্ত করেছেন। তিনি হয়ে উঠেছিলেন শান্তি, মুক্তি ও মানবতার অগ্রদূত। তাই ১৯৭৩ সালের ২৩ মে এই মহান নেতাকে 'জুলিও কুরি' শান্তি পদকে ভূষিত করা হয়। বঙ্গবন্ধুর এই অসামান্য স্বীকৃতি প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ রবিবার গোপালগঞ্জে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আনন্দ  আয়োজন করা হয়।

এদিন সকাল ১০ টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে এই অনুষ্ঠানমালার শুভ সূচনা করেন। পরে পবিত্র ফাতেহা পাঠ করে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের জন্য দোয়া মোনাজাত করেন তিনি।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। এরপর গোপালগঞ্জ সুইমিং পুল এন্ড জিমনেশিয়ামে গোপালগঞ্জ স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় দিন ব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ক্যাম্প থেকে গোপালগঞ্জের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সহস্রাধিক মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ প্রদান করা হয়।

পরে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি। শতাধিক বিভিন্ন বয়সের মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন। বিকাল ৩ টায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে গোপালগঞ্জ শহরে বঙ্গবন্ধুর 'জুলিও কুরি 'শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে গোপালগঞ্জের মানুষ আনন্দে মেতে ওঠেন। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে শোভাযাত্রাটি শহরের শেখ ফজলুল হক মনি স্মৃতি অডিটোরিয়ামের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

পরে ওই অডিটোরিয়াম বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সেখানে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন প্রতিনিধি শহীদ উল্লা খন্দকার।জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আরী খান, সাধারন সম্পাদক জি.এম সাহাবউদ্দিন আজম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুন্সি আতিয়ার রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাচ্চু, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে লড়াই সংগ্রাম করেছেন। তিনি ছিলেন বিশ্বের শোষিত মানুষের নেতা। তিনি বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করেছেন। তাই তাকে জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভূষিত করা হয়। এটি বাঙালি জাতির একটি বড় প্রাপ্তি। এটি আমাদের গর্বের। তাই তার জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান তার জন্মভূমিতে জাঁকজমক পূর্ণভাবে উদযাপন করার জন্য আমরা উদ্বেলিত।

এরপর বিকেল ৫টা থেকে গোপালগঞ্জ শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কনসার্টের আয়োজন করা হয়।

এই কনসার্টে নিশিতা বড়ুয়া, মিনার আহমেদ, শিরোনামহীন ব্যান্ড দল সংগীত পরিবেশন করে। তারা উপস্থিত দর্শকদের গানে গানে মাতোয়ারা করে তোলেন।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে আমাদের এই আনন্দ আয়োজন। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর উদযাপন করেছি। উৎসবমুখর পরিবেশে গোপালগঞ্জের হাজার হাজার মানুষ এই অনুষ্ঠানমালায় অংশগ্রহণ করেছে। তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আনন্দ আয়োজন প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।

তরুণ প্রজন্মের কিংশুক অধিকারী (১৯) বলে, এই আয়োজন বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আমাদের নতুন নতুন তথ্য জানান দিয়েছে। তার মত আদর্শবাদী নেতা বিশ্বের বিরল। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে এই অনুষ্ঠান থেকে পন করছি।

প্রবীণ নেছার উদ্দিন মোল্লা (৭৫) বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন আমাদের শৃংখল মুক্তির মহানায়ক। তিনি শাসক গোষ্ঠীর রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে ধীরে ধীরে লড়াই সংগ্রাম করে আমাদের একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ উপহার দিয়ে গেছেন। এই অবিসংবাদিত নেতার জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা করেছে। এসব অনুষ্ঠান ছিল উৎসবমুখর। এখানে অংশ নিয়ে আমরা উৎসবে মেতেছি । আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছি । শ্রদ্ধা অবনত চিত্তে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করেছি । এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই।

(টিবি/এসপি/মে ২৮, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test