E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘ভোটাররা নির্বাচনের সময় কাকে ভোট দিবে সেটি তারাই ঠিক করবে’

২০২৩ জুলাই ০১ ১৬:০৬:২৭
‘ভোটাররা নির্বাচনের সময় কাকে ভোট দিবে সেটি তারাই ঠিক করবে’

জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা যে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির বিরোধী সেটির প্রমাণ হচ্ছে অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসে যোগদানের বিরোধিতা করে তিনি সুবিধাবাদী পদক্ষেপ বলেছেন, এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়।

তিনি বলেন, গতকাল একটি জনপ্রিয় টেলিভিশনে মির্জা ফখরুল সাহেবের একটি সাক্ষাৎকার আমি শুনছিলাম। তিনি সেখানে বলেছেন, তারা ভিন্ন মাত্রার আন্দোলন শুরু করেছেন এবং গত এক বছর ধরে তারা কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত নন। এটি ওনার মুখের কথা এবং রেকর্ডেড। তার মানে হচ্ছে, আগে তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন - এটি তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন তার বক্তব্যের মাধ্যমেই।

শনিবার (১ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজী পুকুর লেনস্থ বাসভবনে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে একটি টেলিভিশনে সাক্ষাৎকারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল গত এক বছর ধরে তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত নন এবং অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসে যোগদান আমাদের জন্য শুভকর নয় এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ব্রিকস হচ্ছে পৃথিবীর উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর একটি জোট। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, সাউথ আফ্রিকা আছে এই জোটে। উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো পৃথিবীর উদীয়মান অর্থনীতির শক্তি। সেই শক্তিকে সবাই সমীহ করে। বাংলাদেশ যোগ দেয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছে তা নয়, বাংলাদেশ যেহেতু উদীয়মান অর্থনীতির দেশ, এজন্য তারা বাংলাদেশকে ব্রিকসে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য মর্যাদার ও সম্মানের। এটির মাধ্যমে ব্রিকসও স্বীকার করে নিয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। সেখানে যোগ দিলে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সুবিধা হবে।

তিনি বলেন, এক বছর ধরে বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত নয় বলে মির্জা ফখরুল যে কথা বলেছেন সেটিও সঠিক নয়। আপনারা দেখেছেন গত কয়েক মাসের মধ্যে তারা বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়েছে, গাড়ি-ঘোড়া ভাঙচুর করেছে, ঢাকায় দোতলা বাসে আগুন দিয়েছে, চট্টগ্রামের জামালখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণে আমাদের মুক্তি আন্দোলনের সাথে যুক্তদের ছবি ভাংচুর করেছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব যতই বলুক না কেন, ওনারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্যেই আছেন। তবে উনি এই বক্তব্যের মাধ্যমে স্বীকার করে নিয়েছেন ওনারা আগে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্যেই ছিলেন।

আগামী নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে এবং নির্বাচন নিয়ে চীন, ভারত ও আমেরিকার সক্রিয়তা বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে, সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হয় না। বিএনপি যখন সরকারে ছিল তারা ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন সরকারের অধীনেই করেছিল। এখানেই বিএনপি গুলিয়ে ফেলেছে। সরকার যেটি দায়িত্বে থাকবে তারা শুধু নির্বাচন কমিশনকে ফ্যাসিলেট করবে। বিএনপিসহ তাদের মিত্ররা যতই দাবি দিক না কেন, সংবিধানের এক চুলও ব্যত্যয় হবে না। এই দাবি তারা ২০১৪ সালের নির্বাচন থেকে দিয়ে আসছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তারা একই দাবি করেছিল।

তিনি বলেন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, জাপানসহ পৃথিবীর অন্যান্য সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় ঠিক সেভাবেই আমাদের দেশে নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। সেখানে যেভাবে চলতি সরকার দায়িত্ব পালন করে ঠিক একইভাবে আমাদের দেশেও বর্তমান সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে এবং তখন সরকারের শুধু রুটিন কাজ থাকে। নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট সমস্ত দপ্তর-অধিদপ্তর ও সংস্থাগুলোর বদলি থেকে শুরু করে সবকিছুই নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত থাকে।

তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে আমাদের সরকার নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রেক্ষিতে এভাবে মানুষের পক্ষে ঈদ উদযাপন করা সম্ভবপর হয়েছে। আজকে দেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে সেটির বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে মানুষের কোরবানি করার সামর্থ্য বেড়েছে। সেই কারণে গত বছরের তুলনায় বেশি কোরবানি হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা গত তিনদিন ধরে গলা ফাটিয়ে ফেলছে দেশের মানুষ এবার কষ্টে আছে। দেশের মানুষ যদি কষ্টে থাকে তাহলে গতবারের চেয়ে ১ লাখ বেশি গবাদি পশু কোরবানি হলো কিভাবে - প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে একটি পক্ষ আছে রাত বারোটার পরে টেলিভিশনের পর্দা গরম করে। অবশ্য, তাদের মধ্যে সবাই নয়, বিএনপি এবং তার মিত্ররা দেশে কোন উন্নয়ন দেখতে পায় না। তারা দোতারাও নয়, একতারার সুরে সবসময় বলে বেড়াচ্ছে দেশের মানুষ ভালো নাই। আসলে উনারা ভালো নাই, কিন্তু দেশের মানুষ ভালো আছে।

চীন ইউএস ও ভারতের যে সক্রিয়তা আমরা দেখছি এবিষয়টি আপনারা কিভাবে দেখছেন - সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেখুন যে সমস্ত দেশ ভূ-রাজনীতির সাথে যুক্ত তারা কি করছে সেটা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়, সেটি আমাদের জিজ্ঞাসাও নয়। নির্বাচন আমাদের দেশে হবে, আমাদের ভোটাররা নির্বাচনের সময় কাকে ভোট দিবে সেটি তারাই ঠিক করবে। সুতরাং তারা কি করছে সেটা নিয়ে আমাদের চিন্তাও নেই মাথা-ব্যথা নেই।

এসময় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আ. লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ মহানগর আ.লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

(জেজে/এসপি/জুলাই ০১, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test