E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিদায় নিলেন নওগাঁ সদর উপজেলার মানবিক ইউএনও মির্জা ইমাম উদ্দিন

২০২৩ জুলাই ২১ ১৬:৩৯:৩০
বিদায় নিলেন নওগাঁ সদর উপজেলার মানবিক ইউএনও মির্জা ইমাম উদ্দিন

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁ সদর উপজেলার আলোকিত, সদালাপী, জনবান্ধব, নিরহংকারী, মানবিক ও সাদা মনের ইউএনও মির্জা ইমাম উদ্দিনকে বদলীজনিত বিদায়ী সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তিতে নেত্রকোনা জেলার সন্তান মির্জা ইমাম উদ্দিন হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করবেন। 

গতকাল বৃহস্পতিবার সদর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে এই সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এসময় সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. রফিকুল ইসলাম রফিক, ভাইস চেয়ারম্যান ইলিয়াস তুহিন রেজা, শাহানাজ আক্তার নাইস, বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।

করোনা মহামারির সময় গত ২০২০সালের জুলাই মাসের ৫তারিখে মির্জা ইমাম উদ্দিন সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। করোনা মহামারির সেই সময়ে তিনি উপজেলার প্রতিটি গ্রামের অসহায়, দু:স্থ, গরীব, ছিন্নমূল, খেটে-খাওয়া মানুষদের দ্বারে দ্বারে প্রধানমন্ত্রীর প্রদান করা সহযোগিতার বার্তা নিয়ে ছুটে গেছেন। খুঁজে খুঁজে গৃহহীনদের বের করে গৃহ প্রদান করেছেন, ভাতা থেকে বঞ্চিত এমন যোগ্য মানুষদের তিনি সহজেই বিভিন্ন ভাতার সুবিধা পেতে কান্ডারী হিসেবে কাজ করেছেন। সরকারের গ্রহণ করা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজগুলো তিনি নিজে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সঠিক মানে সম্পন্ন করার প্রতি ব্যাপক ভ’মিকা রেখেছেন। তিনি ন্যায়কে ন্যায়ের জায়গায় আর অন্যায়কে অন্যায়ের জায়গায় রেখে সকল কাজ সম্পাদন করার চেস্টা করেছেন।

বিশেষ করে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরগুলো শতভাগ মজবুত করার নিমিত্তে তিনি প্রতিনিয়তই কঠোর তদারকি অব্যাহত রেখে সেই ঘরগুলো প্রকৃত সুবিধাভোগীদের মাঝে সঠিক ভাবে হস্তান্তরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর গৃহিত আশ্রয়ণ প্রকল্পকে শতভাগ সফল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রেখেছেন। বিশেষ করে শত বাধাকে জয় করে বর্ষাইল ইউনিয়নের পদ্মপুকুর এলাকায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির পল্লীর বাসিন্দাদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়নের ঘরগুলো নির্মাণ শেষে হস্তান্তর করা, পল্লীর মাঝে রাস্তা তৈরি করে স্ট্রিট লাইট স্থাপনের মাধ্যমে আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা স্থাপন করে একটি ছিমছাম ও আধুনিক পল্লীতে রূপান্তর করতে মির্জা ইমাম উদ্দিনের ভ’মিকা ছিলো অনবদ্য। তিনি যখন সময় পেয়েছেন তখনই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের নিয়ে পল্লীর ঘর নির্মাণের কাজগুলো পর্যবেক্ষণ করেছেন।

এরকম হাজার হাজার ভালো ও মানবিক কাজের মাধ্যমে তিনি সদর উপজেলার সকল শ্রেণির মানুষের হৃদয়ে ভালোবাসার স্থান করে নিয়েছেন। এছাড়া সমাজের সকল শ্রেণির মানুষই কোন কাজে এসে তার দপ্তর থেকে শূণ্য হাতে ফিরে যাননি। যে কোন মানুষের যে কোন ধরণের সমস্যা তিনি প্রথমে মনোযোগ দিয়ে শুনতেন এরপর তাৎক্ষণিক ভাবে সমাধান করার চেস্টা করতেন। না হলে তিনি সেই স্থানে গিয়ে উভয় পক্ষের ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ করে সেই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান করার চেস্টা করেছেন।

স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সুধীমহলের সকল মানুষদের সার্বিক সহযোগিতায় তিনি সরকারের প্রদান করা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ও অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলো কঠোর পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সঠিক মান বজায় রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বুঝিয়ে নিতেন। যার কারণে তিনি উপজেলার সর্বনিম্ম শ্রেণির মানুষ থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের মানুষের হৃদয়ে সহজেই জায়গা করে নেন। তিনি উপজেলা প্রশাসনের সকল শ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে সব সময় বন্ধুসুলভ আচরন করতেন। আন্তরিক সম্পর্ক ছিলো গনমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গেও। তাই সরকারের সকল প্রশাসনিক পদক্ষেপগুলোকে সুচারু ভাবে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই করে ভবিষ্যতেও মির্জা ইমামের মতো একজন মানবিক গুনাবলীর ও সাদা মনের মানুষকে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিবেন এমনটাই প্রত্যাশা ও চাওয়া উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের।

(বিএস/এসপি/জুলাই ২১, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test