E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নওগাঁয় লাম্পি স্কিনরোগে মারা যাচ্ছে গরু 

২০২৩ জুলাই ২৪ ১৭:৩৩:৪৬
নওগাঁয় লাম্পি স্কিনরোগে মারা যাচ্ছে গরু 

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ (এলএসডি)। গত এক সপ্তাহে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অন্তত ৩০টি গরু মারা গেছে। এতে গরু  পালনকারী কৃষক ও খামারীরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ভাইরাসজনিত এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে লিফলেট বিতরণ ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে প্রাণীসম্পদ বিভাগ।

পশু চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলা জানা গেছে, গরুর লাম্পি স্কিন ভাইরাসজনিত রোগ। এখন পর্যন্ত এই রোগের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। এই রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরে প্রথমে জ্বর দেখা দেয় এবং খাবারের রুচি কমে যায়। জ্বর বেশি হলে নাক-মুখ দিয়ে লালা বের হয়, পা ও গলা ফুলে যায়। আক্রান্ত গরুর বুকের নিচে দুই পায়ের মাঝে পানি জমে। গরুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে চামড়ায় গুটি গুটি ক্ষত হয় এবং পচন ধরে। সেই সঙ্গে চামড়া থেকে লোম উঠে যায়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নেয়া শুরু করলে এই রোগে আক্রান্ত পশু সুস্থ হতে প্রায় এক মাস সময় লাগে। বড় গরু লাম্পি স্কিন রোগে তুলনামূলক কম ঝুঁকিতে থাকলেও বাছুর গরু আক্রান্ত হলে দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মৃত্যুঝুঁকি বেশি থাকে।

জেলা প্রানীসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৪ জুলাই)পর্যন্ত গত ৬ দিনে জেলার নওগাঁ সদর, রাণীনগর, মান্দা, বদলগাছী, পোরশা, পত্নীতলা, আত্রাই, নিয়ামতপুর ও মহাদেবপুর উপজেলায় ৩০টি গরু ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এই সময়ের মধ্যে নতুন করে আক্রান্ত হয়ে জেলার ১১টি উপজেলার পশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা গরুর সংখ্যা ছিল ৫৩০টি।

বদলগাছী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে প্যারাসিটামল ও সর্দি থাকলে হিস্টাসিন জাতীয় ওষুধ খাওয়ানোর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়। বসন্তের (পক্স) একটি জাত ভাইরাসের মাধ্যমে এই রোগটি ছড়াচ্ছে। এখন পর্যন্ত এ রোগ সারাতে কার্যকর কোনো ওষুধ কিংবা ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হয়নি। তবে গরুর এই রোগ প্রতিরোধে গোট পক্স (ছাগলের বসন্ত) টিকা আপাতত দেওয়া হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে এই টিকা ভালো কাজ দিচ্ছে। এই রোগ প্রতিরোধে, মতবিনিময় সভা, উঠান বৈঠক করাসহ ইউনিয়ন ভ্যাক্সিনেটরদের মাধ্যমে খামারি ও কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মহির উদ্দিন জনকন্ঠকে বলেন, ‘গরুর লাম্পি স্কিন রোগ একটা ভাইরাসজনিত রোগ। মশা, মাছি, ডাঁশ জাতীয় রক্ত খায় এমন পতঙ্গের মাধ্যমে এক গরু থেকে আরেক গরুতে এই রোগ ছড়ায়। রোগটা যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে এজন্য আমরা খামারি ও কৃষকদের গরুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রাখা ও মশা, মাছি ও ডাঁশের কামড় থেকে রেহায় পেতে মশারি ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া গরুতে ল্যাম্পি স্কিন রোগের লক্ষ্মণ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পশু হাসপাতালে নিতে বলছি। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হলে রোগটা শতভাগ সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’

প্রাণীসম্পদে সমৃদ্ধ এই জেলায় ২২ লাখ গবাদিপশু রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে গৃহস্থের বাড়ি ও খামারে লালন-পালন করা গরুর সংখ্যা ৮ লাখ ২২ হাজার।

(বিএস/এসপি/জুলাই ২৪, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test