E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

দেলদুয়ার-নাগরপুরের উন্নয়নে কর্মবীর এমপি টিটু

২০২৩ আগস্ট ০১ ১৮:৪৮:৩৪
দেলদুয়ার-নাগরপুরের উন্নয়নে কর্মবীর এমপি টিটু

মোঃ সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : অবহেলিত টাঙ্গাইল-৬ (দেলদুয়ার ও নাগরপুর) এর উন্নয়নের চাকা সচল রেখে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিরলস ভাবে কাজ করছেন সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু। টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার ও নাগরপুর উপজেলা মূলত একটি নদী বেষ্টিত কৃষিসমৃদ্ধ চর অঞ্চল। এখানকার অধিকাংশ পরিবার কোনো না কোনোভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত । আছেন তাঁতী, জেলে, কামার-কুমারসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। হিন্দু ও মুসলমান ধর্মের অনুসারীদের এক মিলনমেলা এ দুই উপজেলায়। প্রত্যন্ত এই জনপদ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। সৌহার্দ্য ও আন্তরিক পরিবেশের সাথে যুগ যুগ ধরে মিলেমিশে বাস করছেন এই এলাকার মানুষ। এত কিছুর পরও কৃষিসমৃদ্ধ এই অঞ্চল পিছিয়ে ছিল দীর্ঘ সময়। বর্তমান সরকারের চার বছরে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন আছে গোটা অঞ্চলে।

সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটুর টাঙ্গাইল -৬ (দেলদুয়ার-নাগরপুর) আসনের বিগত চার বছরের দৃশ্যমান উন্নয়ন-

স্বাস্থ্যসেবা: দেলদুয়ার ও নাগরপুর উপজেলার দুটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নতি করন। নাগরিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গাইনী, কনসালটেন্ট, নিয়মিত সকল চিকিৎসক ও নার্সের সরব উপস্থিতি । উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আধুনিক এক্স-রে,আল্ট্রা,ইসিজিসহ নিয়মিত অপারেশন নিশ্চিত করন। এছাড়া দুই উপজেলায় প্রায় ৬৬ টি কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদাান করা হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ১২০০-১৫০০ জন পুরুষ-মহিলা স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করছেন। দুই উপজেলায় কোভিড টিকা কাভারেজের শতকরা হার ৮০ শতাংশ। এছাড়াও কোভিড মোকাবেলায় সাব অক্সিজেন প্লান্ট সচল রয়েছে।

শিক্ষা ক্ষেত্রে:দুই উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে ১৫৫ কোটি টাকা ব্যায়ে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে দেলদুয়ার উপজেলায় ৭০ টি আর নাগরপুর উপজেলায় ৮৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন স্থাপিত হয়েছে। এছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোতে ৯৭৭.৮৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ৪৫ টি নতুন ভবন নির্মাণ ও ৬০টি পুরাতন ভবন মেরামত ও সংস্কার বাবদ ব্যায় করা হয়েছে ১২ কোটি টাকা। ১৩.৮০ কোটি টাকা ব্যায়ে দুটি উপজেলায় ৬৯ টি ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।

রাস্তাঘাটের উন্নয়ন:দুই উপজেলার মোট কাঁচা রাস্তার ১০২০ কিলোমিটারের মধ্যে ২৬৫ কিলোমিটার পাকা করন, ১০.৫০ কোটি টাকা ব্যায়ে ১৫ টি ব্রিজ নির্মাণ, ১২.০০ কোটি টাকা ব্যায়ে ৪০ টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ, ৯৭ কোটি টাকার টাঙ্গাইল প্রকল্প,আইআরডিপি ১৮.৫৮ কোটি টাকাসহ এমআরআরআইডিপি ৬৩ কোটি টাকার উন্নয়ন মূলক কাজ করা হয়েছে।

অপরদিকে, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ১৬৩৫.১০ কোটি টাকার মেগা মেগা প্রকল্পের আওতায়বরাদ্দ ৬০০ কোটি টাকার আরিচা-বরংগাইল-ঘিওর-দৌলতপুর-নাগরপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়ক প্রশস্তকরন ও উন্নতকরনের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়াও আরেকটি মেগা মেগা প্রকল্প ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ১৪৩৫.৮৯ কোটি টাকার এ অর্থ বছরে বরাদ্দ ৪০০ কোটি টাকায় টাঙ্গাইল -দেলদুয়ার -লাউহাটি -সাটুরিয়া -কাওয়ালিপাড়া-কালামপুর বাস স্ট্যান্ড মহাসড়ক প্রশস্তকরন ও উন্নত করনের কাজ চলছে ।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় দুই উপজেলায় ২৪ হাজার ৫ শত ৭৭ জন বয়স্ক নারী বয়স্ক ভাতা, ১১ হাজার ৫ শত ৩৫ জন প্রতিবন্ধী ভাতা, ৮ হাজার ৬ শত ৯৭ জন নারী বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, ২২২ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তিসহ ৪ শত ৩৪ জন অনগ্রসর ভাতা ও অনগ্রসর শিক্ষা উপবৃত্তি পাচ্ছেন। এছাড়া বিশেষ ১ হাজার ৭ শত ২০ জনকে আর্থিক অনুদান, জোটিল রোগে আক্রান্ত ৯৮ জনকে আর্থিক সহায়তা প্রদান, ৮ হাজার ৮ শত জনকে সুদ মুক্ত ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের জন্য ২শত ১১ টি বীর নিবাস তৈরী এবং গৃহহীন ও ভূমিহীন ২ শত ৪২ টি ঘর প্রদান সহ ১ হাজার ৫ শত ৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের সম্মানী ভাতা প্রদান করা হয়েছে।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুই উপজেলায় দুটি শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণে বরাদ্দ কৃত অর্থের পরিমাণ ১০২.৪৭ লক্ষ টাকা এবং ১৩ হাজার ২ শত ১৯ জন বেকার যুবক ও যুবতী নারীদের আত্ম কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ১৩.৬৭ কোটি টাকা সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৫৩৮.৭৯ লক্ষ টাকা ব্যায়ে দু উপজেলায় দুটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ ও ৬৬৩.৭১ লক্ষ টাকা ব্যায়ে দুটি পুলিশ স্টেশনের উন্নয়ন মূলক কাজ করা হয়েছে।
(ছ) জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে ১৬১৬.২ লক্ষ টাকায় ২ হাজার ১ শত ১৮ টি গভীর নলকূপ স্থাপন করে নিরাপদ পানির উৎস তৈরি করা হয়েছে।

গত ৪ বছরে দেলদুয়ার - নাগরপুর উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আনা হয়েছে।
এছাড়া দেশের মাত্র ১০০ টি উপজেলার মধ্যে ১ টি করে 'টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপন শীর্ষক প্রকল্প' এর আওতায় নাগরপুর উপজেলায় ১টি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপন করা হয়েছে এবং দেশের মাত্র ৪০ টি উপজেলায় ৪০ টি কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রকল্পের আওতায় নাগরপুরে ১ টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে ২০২২ সালে ১৩৮ জন শিক্ষার্থী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পড়াশোনা করার সুযোগ পাচ্ছেন। তৈরি হয়েছে পাকা সড়ক, ধলেশ্বরী নদীতে নির্মিত হয়েছে বহু প্রত্যাশিত দুটি সেতু। যা টাঙ্গাইল জেলা তথা দেলদুয়ার ও নাগরপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত করেছে।উপজেলা দুটির শতভাগ এলাকায় পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ।

সার্বিক উন্নয়নের ব্যাপারে নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, বর্তমান সরকারের উদ্যোগে সারাদেশ তথা নাগরপুর উপজেলায় উন্নয়নের জোয়ার বইছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু মহোদয়ের নির্দেশনায় সরকারি বিধি মোতাবেক এলজিএসপি, এডিপি, হতদরিদ্র, টিআর, কাবিখাসহ উন্নয়নের কার্যক্রম চলমান আছে। এছাড়া সার্বিক আইনশৃঙ্খলাও ভালো আছে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল ৬ সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, বিগত এই চার বছরের যত সফলতা তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার। আমি আমার সংসদীয় আসনের সাধারণ জনগণ ও প্রধানমন্ত্রীর সাথে সেতু হিসেবে কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমার কাজের মূল্যায়ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আমার এলাকার জনগণ নিশ্চয়ই করবেন। তবে নদী শাসনে আমার ব্যর্থতা আছে কিন্তু চেষ্টার কোন ত্রুটি নাই। বিগত কয়েক বছর ধরেই আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় কে সাথে নিয়ে ভাঙন এলাকা দু দুবার পরির্দশন করেছি। সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের সচিব সাহেব পরিদর্শন করেছেন। মন্ত্রী মহোদয় আমার এলাকা রক্ষার্থে ব্যাপক সহযোগিতা পূর্বক সমস্যা সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেছেন। আশা করি শীঘ্রই স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে নদী ভাঙনের কবল হতে আমরা মুক্ত হবো।

(এসএম/এসপি/আগস্ট ০১, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test