দেশে ফেরার আকুতি জানিয়ে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ
স্টাফ রিপোর্টার : গণহত্যার বিচার ও নিজ দেশে ফেরার আকুতি জানিয়ে নিরব সমাবেশ করছে রোহিঙ্গারা। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকালে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে এ সমাবেশ করেছেন তারা।
সকালে উখিয়া-টেকনাফের একাধিক ক্যাম্পের নির্ধারিত স্থানে পৃথক সমাবেশ স্থলে আশা শুরু করেন তারা। সবচেয়ে বড় সমাবেশ হয় কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে। সমাবেশে ২০১৭ সালের এ দিনে মিয়ানমার সরকার ও তাদের দোসর রাখাইন কর্তৃক নির্মম গণহত্যার বিচার ও বাপদাদার ভিটায় ফেরার দাবি জানান তারা।
উখিয়ার ৯, ১৪, ১৩, ১৭, ২ ওয়েস্ট, ১ ওয়েস্ট, ৪ ও ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং টেকনাফের জাদিমুরা ক্যাম্পের নির্ধারিত স্থানে সকাল ৮টা থেকে সমাবেশে আশা শুরু করে রোহিঙ্গারা। ক্যাম্পগুলোর পার্শ্ববর্তী ক্যাম্পের সববয়সী রোহিঙ্গারা এখানে অংশ নিচ্ছেন।
রোহিঙ্গাদের রোহিঙ্গা বলেই ডাকা, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যেক রোহিঙ্গাকে আরাকানের গ্রামে গ্রামে প্রত্যাবাসন, প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত প্রত্যেক চুক্তি ও প্রক্রিয়ায় অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ওআইসি, যুক্তরাজ্য, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, বাংলাদেশ, এনজিও, সংশ্লিষ্ট সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা, বার্মার ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন বাতিল, সম্পত্তি ফেরত, স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকারসহ নানা দাবী উত্থাপন করা হয়।
সমাবেশে ইংরেজিতে লেখা একটি লিফলেট প্রচার করা হয়। সেখানে তারা উল্লেখ করেছেন- আজ, যখন আমরা রোহিঙ্গা গণহত্যা স্মরণ দিবসের ৬ষ্ঠ বার্ষিকী স্মরণে জড়ো হয়েছি, তখন আমাদের সেই ট্র্যাজেডির ক্ষণগুলো খুব বেশি তাড়িত করে চলেছে। এ দিনটি রোহিঙ্গাদের দ্বারা সহ্য করা ক্ষতি, দুর্ভোগ এবং অকল্পনীয় নৃশংসতার বেদনা স্মরণ করিয়ে দেয়।
আমরা নতমস্তকে বাংলাদেশের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, এমন কঠিন সময়ে আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায়।
এদিনে আমাদের মনে পড়ে সেই বর্বরতার ভয়ঙ্কর দৃশ্য- যেখানে আমাদের সন্তানদের পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ঘরবাড়িতে, অগণিত রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছিল, আমাদের মা-বোনদের ধর্ষণ করা হয়েছিল, বাড়িঘর এবং আমাদের গ্রামে আগুন দেওয়া হয়েছিল। নিরপরাধের জীবন ও ভবিষ্যৎ কেড়ে নেয়া হয়েছে।
আমরা দাঁড়িয়ে আছি বেঁচে থাকা, সাক্ষী এবং গণহত্যার শিকার হিসেবে। সেই মর্মান্তিক দিনের পর ছয় বছর পার হয়ে গেছে তবুও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ন্যায়বিচারের সন্ধান অধরা। আমরা নিজেদের প্রশ্ন করি, ন্যায়বিচারের পথ এত কঠিন কেন? যত দিন যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি আমাদের আস্থা কমছে।
আমাদের আশাগুলো বাংলাদেশের অবিচল অংশীদারিত্বের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জাতিসংঘ, আসিয়ান এবং বিশেষ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টায় নোঙর করে। আমরা আসন্ন গ্রীষ্মের মধ্যে নিরাপত্তা এবং মর্যাদার নিশ্চয়তাসহ আমাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করতে চাই।
রোহিঙ্গা নেতা ডা. জুবায়ের বলেন, সম্মানজনক প্রক্রিয়ায় আমরা নিরাপদ প্রত্যাবাসন চাই। আমাদের আশা সমাবেশে উত্থাপিত রোহিঙ্গাদের যৌক্তিক দাবিগুলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গুরুত্ব পাবে।
টেকনাফের মুচনি ক্যাম্পের মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, বিশ্ববাসীর কাছে আমাদের মূল দাবী সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরতে চাই। বাংলাদেশ সরকার আমাদের আশ্রয় দিয়ে মানবিক দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। আমরা কৃতজ্ঞ।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে শান্তিপূর্ণ ভাবে দাঁড়িয়ে নিজ দেশে বাড়ি ফিরার আকুতি জানিয়েছেন।
ক্যাম্পে আইন শৃঙ্খলায় নিয়োজিত এপিবিএন অধিনায়করা জানান, রোহিঙ্গারা নিজেদের দাবি নিয়ে সুশৃঙ্খল সমাবেশ করেছে। ক্যাম্প এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ও সবদিকে সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে।
২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর নেতৃত্বে একটি মহাসমাবেশ হয়। কিন্তু ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দুর্বৃত্তের গুলি নিহত হন রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন স্বপ্ন দেখানো নেতা মুহিবুল্লাহ। ২০১৮ সালের দিকে সাধারণ রোহিঙ্গাদের নেতা হিসেবে আবির্ভাব হয় মাস্টার মুহিবুল্লাহর। আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস ফর হিউম্যান রাইটস নামের সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে সাধারণ রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার ফেরত নিয়ে যেতে সংগঠিত করেছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বেশ জোরালো জনমত গড়ে তুলেছিলেন। তিনিই শুরু করেছিলেন ‘গুয়িং হোম’ ক্যাম্পেইন। কিন্তু প্রত্যাবাসন বিরোধী রোহিঙ্গাদের একটি চক্র ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর উখিয়ার লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-ব্লকে সংগঠনের কার্যালয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করে। তিনি নিহত হবার পর এধরণের সমাবেশে একক কোনো আয়োজক কিংবা নেতৃত্ব পর্যায়ের কেউ সামনে আসছেন না। তবে প্রচারপত্রে আয়োজক হিসেবে ‘নির্যাতিত সাধারণ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী’ লেখা হয়েছে।
২০১৭ সালের আগস্টে মায়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে নতুন করে পালিয়ে আসে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা। সরকারি হিসেবে এদের বর্তমান সংখ্যা প্রায় ১৩ লাখ। বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদেরকে উখিয়ার টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে আশ্রয় দেয়। তাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে বাংলাদেশ বিশাল বনভূমি হারিয়ে ফেলে। কিছু রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের আনাগোনায় উখিয়া-টেকনাফ পরিণত হয়েছে সন্ত্রাসের জনপদে। ফসলের জমি বিনষ্ট, নিরাপত্তাহীনতা, ব্যয় বৃদ্ধিসহ নানা কারণে দিনদিন স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা এর থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় দেখছেন, রোহিঙ্গাদের নিজদেশে প্রত্যাবাসন। তাই যে কোনো উপায়ে প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক মহলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এদিকে সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে খুন আর অস্ত্রের মহড়া বেড়েই চলেছে। আধিপত্য বিস্তারে আরসা-আরএসওর পক্ষ হয়ে কয়েকটি গ্রুপ প্রতিনিয়ত সংঘর্ষে জড়ায়। নিজেদের মাদক কারবারসহ অপরাধ কর্মকাণ্ড জিইয়ে রাখতে নবী হোসেন গ্রুপ, আরসাসহ সকল সন্ত্রাসী গোষ্ঠী প্রত্যাবাসন ঠেকাতে তৎপর। তাই তারা ক্যাম্পে ক্যাম্পে খুন ও নাশকতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে একাধিক রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝির দাবী।
(ওএস/এএস/আগস্ট ২৫, ২০২৩)
পাঠকের মতামত:
- বাংলা একাডেমির সভাপতি হলেন আবুল কাসেম ফজলুল হক
- খালেদা জিয়াসহ ৭ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ৫ নভেম্বর
- ‘দেশে নতুন করে বৈষম্য শুরু হয়েছে’
- ‘এখন আমার পরিচয় শুধুই অভিনেত্রী’
- ‘যতদিন পর্যন্ত নির্বাচন না হবে ঘরে ফিরে যাবো না’
- রিমান্ড শেষে কারাগারে ব্যারিস্টার সুমন
- সাবেক ডিএমপি কমিশনার বিমানবন্দরে আটক
- সাবেক ১০ মন্ত্রী-সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ
- ‘ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার ক্ষতি হয়নি’
- রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত না নেওয়ার আহ্বান ফখরুলের
- ‘জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে’
- ৮নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের রতনপুর ঘাঁটি আক্রমণ করে
- ‘ছাত্রলীগ এখন নিষিদ্ধ, তাদের রাজনৈতিক অধিকার নেই’
- লোহাগড়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল সম্পন্ন
- হাসি
- ফরিদপুরে ইলিশ শিকার রোধে অভিযান, কারেন্ট জাল জব্দ
- শ্রীমঙ্গলে ‘খুনি হাসিনা ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের’ গ্রেফতারের দাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল
- ‘মিথ্যা হত্যা চেষ্টা মামলায় ৭০ বছরের সাজা হলে শেখ হাসিনার সাজা হবে হাজার বছরের’
- সোনারগাঁয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই বন্ধুর মৃত্যু
- ক্যান্টন ফেয়ারে ওয়ালটনের ব্যাপক সাফল্য, বিভিন্ন দেশে ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি
- স্বস্তির হাওয়া বইতে শুরু করেছে বাজারে
- চাটমোহরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফ্রেন্ডলী ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত
- তিন রকমের সবজি মাত্র ১০ টাকায়
- টাঙ্গাইলে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন
- বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়াল
- `শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলেই দেশের উন্নয়ন হয়'
- নিয়ামতপুরে জামায়াতে সাবেক আমিরসহ গ্রেপ্তার ২
- ‘আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত’
- ঠাকুরগাঁওয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধন স্মারকলিপি পেশ
- রাণীশংকৈলে সনার্তন ধর্মাবলম্বীদের সাথে জামায়াতের সম্প্রীতি সমাবেশ
- ‘আন্দোলনে আহতদের প্রয়োজনে চীনে নেওয়া হবে’
- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ৮৭৫
- প্রধান উপদেষ্টা শিগগির সরকারের রূপরেখা প্রকাশ করবেন
- প্রথম ফ্লাইটে সৌদি গেলেন ৪১৩ জন হজযাত্রী
- শোক দিবসের অনুষ্ঠানে সাঈদীর মৃত্যুর দোয়া চাওয়ায় ইমাম গ্রপ্তার
- কালিয়া হরিপুর অ্যাম্বুস
- বেশি দামে ডিম বিক্রি করায় দুই আড়তদারকে জরিমানা
- হোমনায় মুক্তিবাহিনীর বীর যোদ্ধারা পাকসেনাদের বিরুদ্ধে এক দুঃসাহসিক অভিযান চালায়
- দেশের ১১ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে বজ্রসহ ঝড়ের আভাস
- ‘রাজাকার স্লোগানে নেতৃত্ব দানকারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে’
- ফরিদপুরে টেপাখোলা লেক উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন
- ধামরাইয়ের সন্ধ্যা জুয়েলার্সে দুর্ধষ চুরি
- গোপালগঞ্জে পূজা মন্ডপে দায়িত্ব পেতে দিতে হয়েছে উৎকোচ!
- শ্রীমঙ্গলে পিকআপ-সিএনজি সংঘর্ষ, আহত ৫
- ধামোরের এসিআই নদী ঘেরায় ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন