E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যশোরে তেলবাহী ট্রেন লাইনচ্যূত, ৪২ মেট্রিক টন ডিজেল হরিলুট

২০২৩ আগস্ট ২৫ ১৩:৪৭:৩১
যশোরে তেলবাহী ট্রেন লাইনচ্যূত, ৪২ মেট্রিক টন ডিজেল হরিলুট

স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যশোর : যশোরে তেলবাহী ট্রেন হয়ে খাদে পড়ে গেছে। ট্রেনের ট্যাংকারে থাকা ৪২ মেট্রিক টন ডিজেল হরিলুট করেছে স্থানীয় লোকজনসহ প্রভাবশালীরা। এই লাইনচ্যূত তেলবাহী ট্রেন  সরিয়ে নেয়ার পর খুলনার সঙ্গে সারাদেশের রেল  যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভোর চারটার দিক সিঙ্গিয়া রেলওয়ে স্টেশনের কাছ এ দুর্ঘটনা ঘটে। তেলবাহী ট্রেন এর ট্যাংকার সরিয়ে নেয়ার পর বেলা ১১টার দিকে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। দুর্ঘটনার কারণে সাত ঘণ্টা রেল চলাচল বন্ধ ছিলো। তবে ভারসাম্য হারিয়ে খাঁদে পড়ে যাওয়া ট্রেন উদ্ধার কাছে স্থানীয়রা এগিয়ে না আসলেও তেল সংগ্রহ করতে হুমড়ি খেয়ে পড়তে দেখা যায়। নারী, পুরুষ, শিশুরাও পড়ে থাকা হাজার হাজার লিটার ডিজেল কুড়িয় নিয়ে যায়। তাদর নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয় আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের। তবে স্থানীয়রা কেউ কেউ দাবি করেন এই তেল সংগ্রহ করে বিক্রি করতে একটা সিন্ডিকেট সেখানে প্রভাবের সাথে কাজ করে যাচ্ছিলো।

রেলওয়ে যশোরের ঊর্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহবুুব হাসান বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিক খুলনা থেকে উদ্ধারকারী ট্রন (রিলিফ ট্রেন) এসে কাজ শুরু করে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাইনচ্যূত তেলবাহী ট্রেন এর ট্যাংকার সরিয় ফেলা হয়। এরপর ১১টার দিকে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার ভোর চারটার দিকে যশোরের সিঙ্গিয়া রেলস্টেশনের কাছে বসুদিয়ার বানিয়ারগাতি এলাকায় তেলবাহী ট্যাংকার লাইনচ্যূত হয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর থেকে খুলনার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবে দুর্ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে, দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাংকারে ৪২ টন ডিজল ছিলো বলে দাবি করছেন উদ্ধারকাজে নিয়াজিত রেলওয়ের কর্মীরা। রেললাইনের পাশে পরিত্যক্ত নিচু জমিতে তেল ভর্তি ট্রেন এর ট্রাংকার পড়ে যাওয়ায় তেল গড়িয়ে পড়ে । স্থানীয় লোকজন মাটিতে পড়া তেল কুড়িয়ে নিয়ে যায়। ভোর বেলা থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন বয়সী মানুষ তেল সংগ্রহ করে। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের সামনে তেল লুট হয়ে গেলেও তেমন কোন বাঁধা দেওয়া হয়নি। স্থানীয় একাধিক বাসিদা বলেন, দুর্ঘটনার শিকার ট্রাংকারের তেল সব পড়ে গেছে। কাদামাটির ভিতরে থাকা তেল তারা সংগ্রহ করছেন। এই তেল তারা ব্যবহার করবেন। বাড়তি তেল বাইরে বিক্রি করবেন।

সিঙ্গিয়া গ্রামর নজরুল ইসলাম বলেন, সবাই পড়ে থাকা তেল নিয়ে যাচ্ছে, আমিও নিচ্ছি। আমরা না নিলে তা সবই নষ্ট হয়ে যাবে।’

সুফিয়া বেগম নামে একজন নারী বলেন, ভোরে ঘুম থেকে উঠে থেকে এলাকার মানুষ সবাই তেল নিয়ে যাচ্ছে। তাদের দেখাদেখি আমিও নিছি। কতটুকু কাজে লাগানো যায় দেখি।

শহিদুল নাম এক ব্যক্তি বলেন, সকাল থেকে তেল কুড়াচ্ছি, দশ লিটার মত পেয়েছি। বাড়িতে ব্যবহার করব। বাকীটা কম টাকায় হলেও বিক্রি করতে পারবো। আমরা না নিলে সব মাটিতে মিশে নষ্ট হয়ে যেত।

যশোর রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার আয়নাল হাসান জানান, নাটোরের উদ্দেশ্য খুলনা থেকে ছেড়ে আসা তেলবাহী ট্যাংকারটি যশোরের সিঙ্গিয়া স্টেশনে পৌঁছালে লাইনচ্যূত হয়। ফলে খুলনার সঙ্গে সারাদেশের রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে যশোর ও খুলনা স্টেশনে অনেকগুলো ট্রেন আটকা পড়।

(এসএমএ/এএস/আগস্ট ২৫, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test