E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যশোর জেলা ছাত্রলীগের ১১ নেতা শোকজ, অভ্যন্তরীণ কোন্দলে দোটানায় কর্মীরা

২০২৩ আগস্ট ২৬ ১৬:০৬:১৭
যশোর জেলা ছাত্রলীগের ১১ নেতা শোকজ, অভ্যন্তরীণ কোন্দলে দোটানায় কর্মীরা

স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যশোর : যশোর জেলা ছাত্রলীগের  পদধারী ১১ জন নেতাকে শোকজ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দীন কবির পিয়াস, সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লব স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। অভ্যন্তরীণ কোন্দলে দোটানায় দিন অতিবাহিত করছে সাধারণ কর্মীরা। দিন বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে গ্রুপিং, পাল্টাপাল্টি দোষারোপ।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে ১লা সেপ্টেম্বর স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ছাত্রসমাবেশের আয়োজন করবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। সেই ছাত্রসমাবেশ সফল করতে যশোরে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে জেলা ছাত্রলীগ। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক স্বাক্ষরিত সেই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় জেলার অন্তর্গত ২৮ টি ইউনিটের সভাপতি সম্পাদক, আহবায়ক যুগ্ম-আহবায়কসহ কমিটি না থাকা ইউনিটের সম্ভাব্য সভাপতি সম্পাদক পদপ্রার্থী নেতা কর্মীদের ২৫ শে জুলাই শুক্রবার বিকাল ৩ ঘটিকায় গাড়িখানা রোডে জেলা আ'লীগের দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হতে।

বিপত্তি দেখা দেয় সেই প্রস্তুতি সভায় নেতাকর্মীদের উপস্থিত হওয়া নিয়ে। যথা সময়ে ইউনিট প্রধান, সম্ভাব্য পদ প্রত্যাশিরা উপস্থিত হলেও ২২ সদস্য বিশিষ্ট জেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটির ১১ জন পদধারী নেতা উপস্থিত হয়নি। অনুপস্থিত নেতারা হলেন সহ-সভাপতি ইমরান হোসেন, শাহাদাৎ হোসেন রনি হাওলাদার, কায়েস আহমেদ রিমু, আব্দুর রউফ পিন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিফাতুজ্জামান রিফাত, আসাদুজ্জামান আসাদ, আশিকুর রহমান হৃদয়, মাসুদ হাসান কৌশিক, সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, রাকিবুল আলম, ফাহমিদ হুদা বিজয়। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে অনুপস্থিত ১১ জন পদধারি নেতাকে শোকজ করার প্রেস বিজ্ঞপ্তি। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সম্পাদকের স্বাক্ষরিত সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রস্তুতি সভায় অনুপস্থিত পদ ধারি নেতাদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না সেটা আগামি ৩ কার্য দিবসের মধ্যে লিখিত প্রতিবেদন আকারে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সম্পাদকের কাছে স্বশরীরে জমা দিতে।

শোকজের বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, বর্ধিত সভার কোন চিঠি পায়নি। জেলার সভাপতি সম্পাদক সাংগঠনিক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সমন্বয় নেই। তাদের দুইজনের একক সিন্ধান্তে প্রেস রিলিস কমিটি দেয় আবার তুলেও নেই। সভাপতি সম্পাদক স্বেচ্ছাচারিতায় সাংগঠনিক কোন কার্যক্রম নেই। এই দুইজন যে কয়েকটা কমিটি দিয়েছে সাংগঠনিক কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেনি অছাত্র জামাত বিএনপি পরিবারের লোকদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। কোন সাংগঠনিক কাজে কাউকে ডাকে না। তার পরেও শুনেছিলাম বর্ধিত সভা সম্পর্কে; তবে যায়নি তাদের স্বেচ্ছাচারিতায় কারণে। তিনি আরো বলেন, শোকজ করেছে, শোকজের জবাব দিবো কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। জেলার সভাপতি সম্পাদক কাছে দিবো না।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান হৃদয় বলেন, প্রেস রিলিস ফেসবুকে ঘুরছে, ওটা দেখেছি। জেলা ছাত্রলীগ তো প্রেস রিলিস নির্ভর। ওনারা তো কমিটির অন্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন না। সভাপতি সম্পাদক দুজনে আলোচনা করে কমিটি দেওয়া থেকে শুরু করে যা কার্যক্রম করে সেটা রাতের আধারে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে করে। এখন শোকজ করেছে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে আমার জবাব দিবো।

আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, অসুস্থ ছিলাম বর্ধিত সভার বিষয়টি জানি না। তাছাড়া এদিন সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে বের হতে না পারার কারণে যেতে পারেনি।

জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত তরুণ বলেন, বিশেষ প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত না থাকায় ১১ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। তাদের সবাইকে লিখিত আকারে সভাপতি সম্পাদক কাছে স্বশরীরে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দীন কবির পিয়াস বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ আয়োজিত সর্ববৃহৎ ছাত্রসমাবেশ সফল করার লক্ষে প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে ১১ জন পদধারি ছাত্রনেতা অনুপস্থিত থাকায় সংগঠনের নির্দেশনা না মানার কারণে তাদেরকে শোকজ করা হয়েছে।

সভাপতি সম্পাদকের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে তিনি বলেন, এটি ভিত্তিহীন, প্রস্তুতি সভার বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক তাদেরকে মোবাইল ফোনে একাধিক বার জানানোর চেষ্টা করেছে। তাদের কেউ কেউ সম্পাদকের ফোন কল টি রিসিভ করেনি। যার সব রেকর্ড আমাদের কাছে রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২১ সালের ৪ ঠা এপ্রিল আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত ২৩ সদস্য বিশিষ্ট জেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এই অংশিক কমিটি থেকে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে কিছুদিন আগে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন সহ-সভাপতি আলী হাসান মোর্তজা রিফাত। সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন রিয়াদ জীবন জীবিকার প্রয়োজনে প্রবাসী আর এক সাংগঠনিক সম্পাদক মারুফ হোসেনকে দলীয় আদর্শ নীতি বিরোধী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে কমিটির ২ জন সহ-সভাপতি বিবাহিত বলেও শোনা যাচ্ছে।

(এসএ/এসপি/আগস্ট ২৬, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test