E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বরগুনায় সমবায় সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

২০২৩ সেপ্টেম্বর ০৪ ১৫:৩৬:২৫
বরগুনায় সমবায় সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

আসাদ সবুজ, বরগুনা : বরগুনায় সমবায় সমিতির সভাপতির  কর্তৃক সদস্যদের অর্থ আত্মসাৎসহ, আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত না দেওয়ায় জন্য আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করে সহ-সভাপতিকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ওই সমবায় সমিতির সভাপতি সোরাব হোসেনের বিরুদ্ধে। অপরদিকে জমি ক্রয় বাবদ পাওনা টাকা আদায়ের জন্যই আদালতে মামলা করছেন বলে জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি।

ঘটনাটি বরগুনা সদর উপজেলার ৫ নং আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের মধ্য কদমতলা গ্রামের।

মধ্য কদমতলা গ্রামের মৃত আদম হাওলাদারের ছেলে ও মধ্য কদমতলা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির লিমিটেড এর সহ-সভাপতি ইউনুস সহ সমিতির বেশ কয়েক জন সদস্য ও স্থানীয় এলাকাবাসীর কয়েকজন সাংবাদিকদের বলেন, ২০১০ সালের ০২ নভেম্বর বরগুনা সদর উপজেলা সমবায় কার্যালয় থেকে ৬৪ বিডি নং রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে গ্রামের ৬১জন সদস্য একত্রিত হয়ে একই গ্রামের পার্শ্ববর্তী বাড়ীর জনৈক এলেম উদ্দিন এর ছেলে সোহরাফ হোসেনকে সভাপতি করে "মধ্য কদমতলা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির লিমিটেড" একটি সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠা করি। বেশ কয়েক বছর ভালোই চলছিলো আমাদের সমিতির কার্যক্রম। কয়েকবছর পরে ধূর্ত ও চালাক সভাপতি সোহরাফ হোসেন বিভিন্ন কৌশলে ধীরে ধীরে সদস্য ছাটাই করতে শুরু করে এবং অনেক গরীব অসহায় সদস্যদের অর্থ আত্মসাৎ করেন। এবিষয়ে প্রতিবাদ করলে সহ সভাপতি ইউনুসের বাড়ির পাশের এক প্রতিবেশীর সাথে কুট কৌশলে মামলায় আসামি করে ইউনুসকে জেল হাজতে পাঠিয়ে সমিতিতে একছত্র অধিপত্য চালিয়ে নিজ দখলে নেন সভাপতি সোহরাফ হোসেন। সেই সাথে ইউনুসকে জামিনে মুক্ত করার জন্য ইউনুসের বোনের নিকট থেকে ৭৫,০০০/- টাকা ও দুইধাপে গাছ বিক্রয় করা ৪৪ হাজার টাকা গ্রহন করে মাত্র ৬,০০০/-টাকায় ইউনুসকে জামিনে মুক্ত করেন।

জামিনে মুক্ত হয়ে সহ সভাপতি ইউনুস সভাপতি সোহরাফ হোসেনের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবগত হয়ে তার সমিতিতে বিনিয়োগ করা অর্থসহ তার বোনের কাছ থেকে নেওয়া ও দুই ধাপে গাছ বিক্রয় করা টাকা ফেরৎ চাইলে সভাপতি সোহরাফ হোসেন জমি ক্রয় - বিক্রয়ের একটি মিথ্যা একটি চুক্তিপত্র সৃষ্টি করে ৫নং আয়লা পাতা কাটা ইউনিয়ন পরিষদে ৭০,০০০ /- (সত্তর হাজার) টাকা পাবে এমন অভিযোগ এনে একটি অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাজী মোকলেছুর রহমান সকল ঘটনা জেনে অভিযোগ নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই ওই একই অভিযোগে ১,৮০,০০০/-(এক লক্ষ আশি হাজার) টাকা সহ সভাপতি ইউনুসের নিকট পাবে বলে বরগুনা আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। মামলাটি বর্তমানে বরগুনা জুডিশিয়াল আদালতে চলমান রয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাজী মোকলেছুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সমিতির সভাপতি সোহরাফ হোসেন ও ইউনুসের মধ্যে দীর্ঘদিন একটি ভালো সম্পর্ক ছিলো। একপ্রকার বলতে গেলে বাবা ছেলের মতই তাদের সম্পর্ক ছিলো। কিছু দিন পূর্বে সভপতি সোহরাফ হোসেন আমার পরিষদে ইউনুসের নিকট ৭০,০০০/-টাকা পাবে বলে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিল। অভিযোগ পেয়ে এলাকায় জানতে পারি সহ সভাপতি ইউনুস সমিতির সভাপতি সোহরাফ হোসেনের নিকট প্রায় চার থেকে সাড়ে চার লক্ষ পাবে। আমাদের পরিষদের রায় হওয়ার আগেই ধূর্ত সোহরাফ হোসেন আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে। পরিষদে দাখিল করা অভিযোগের সাথে ইউনুসের ও সোহরাফের জমি ক্রয়-বিক্রয়ের যে চুক্তিপত্র দাখিল করা হয়েছিলো আমরা ইউনুসের স্বাক্ষর ও ওই চুক্তি পত্রের স্বাক্ষরের সাথে মিলিয়ে দেখেছি স্বাক্ষরদুটি দুই রকমের, একটির সাথে আর একটির মিল নেই।

অভিযোগের বিষয়ে, মধ্য কদমতলা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির লিমিটেড এর সভাপতি সোহরাফ হোসেন বলেন, সহ সভাপতি ইউনুসসহ বেশ কয়েকজন সমিতির নামে টাকা পয়সা তুলে নিজ কাজে খরচ করতেছে, এমন সংবাদ শুনে কয়েকজন সদস্যকে আমি বাদ দিয়ে দিয়েছি। আর সহ সভাপতি ইউনুসের আমার কাছে কোন টাকা পয়সা পাবে না। উল্টো সমিতির নামে জমি দেওয়ার জন্য ইউনুস টাকা গ্রহন করেছে। সেই টাকা বা জমি না দেওয়ার কারনে আমি আদালতে মামলা দায়ের করেছি।

সদর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয়ের জনৈক মিরন নামের একজন মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার বিষয় আমাদের জানা নেই। তবে যদি সদস্যরা আমাদের কার্যালয়ে ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ করে তাহলে আমরা বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

(এএস/এএস/সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test