E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কুলিয়ারচরে সংঘর্ষের ঘটনায় তিন মামলা

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শরীফুল আলমসহ ৩ হাজার ৫শ আসামি

২০২৩ নভেম্বর ০২ ১৮:৫৫:০৮
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শরীফুল আলমসহ ৩ হাজার ৫শ আসামি

সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : বিএনপি-জামায়াতের তিনদিনের অবরোধের প্রথম দিন গত মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে পুলিশ-বিএনপি’র সংঘর্ষে দু’জন নিহত হয়। সংঘর্ষের পর ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের ছয়সূতি, বাজরা তারাকান্দি ও আগরপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশ মোতায়েনসহ পুলিশের টহল জোরদার করা হয়। 

পুলিশ-বিএনপি’র ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও হামলার ঘটনায় বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি মো. শরীফুল আলমকে দুইটিতে প্রধান আসামি করে বিএনপি’র কর্মী-সমর্থকদের নামে পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা দায়ের করে। তিন মামলায় ১ হাজার ৯৮৪ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় এ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তবে বিএনপি’র দুই নেতার মৃত্যু ও অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হওয়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। দুই মামলার বাদী এসআই তারেক পারভেজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ছয়সূতী বাসস্ট্যান্ডে হত্যার উদ্দেশ্যে পুলিশের উপর হামলা ও কর্তব্য কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তিনি বাদী হয়ে মো. শরীফুল আলমকে প্রধান আসামি করে ৪৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত নামা ১৬শ জনের নামে গত ১ নভেম্বর বুধবার কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১। এছাড়া তিনি শরীফুল আলমকে প্রধান আসামি করে ৪৩ জনের নাম উল্লেখ করে ১৬শ জনের নামে আরো একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২। অপরদিকে একই দিনে উপজেলার বাজরা তারাকান্দি বাসস্ট্যান্ডে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় গত ১ নভেম্বর বুধবার থানার এসআই নূরে আলম বাদী হয়ে তারাকান্দি গ্রামের মিজান মিয়ার ছেলে বিএনপি নেতা শফি উদ্দিন (৪০)কে প্রধান আসামি করে ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞতনামা ৩০০ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৩।

কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৮টায় একদল সশস্ত্রবাহিনী ছয়সূতী বাসস্ট্যান্ডে অবরোধ সৃষ্টি করতে ইট-পাটকেল, ককটেল নিক্ষেপ করে। এ সময় আমরা গুলির শব্দও শুনতে পাই। তাদের বাধা দিতে গেলে তারা চারদিক দিয়ে আমাদের ঘিরে ফেলে। আমাদের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ হামলা চালায়। আমরা সংখ্যায় ছিলাম ১৫ জন। কোনোভাবেই নিজেদের আর রক্ষা করতে পারছিলাম না। শেষে আত্মরক্ষার্থে আমরা বাধ্য হয়ে রাবার বুলেট ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করি। এ ঘটনায় আমিসহ থানার কর্তব্যরত এসআই দেব দুলাল, এসআই তারেক পারভেজ, এসআই নূরে আলম, এএসআই মান্নান, এএসআই সাকিনুর, এএসআই জুয়েল রানা, কনস্টেবল একরামুল কবির, ইসমাইল হোসেন, সঞ্জয় আহম্মদ, অনিক সরকার, একরামুল হক, জুলহাস মিয়া, সাকিল আহম্মেদ ও মালেক সরকার সহ ১৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়।

অপরদিকে বিএনপি’র পক্ষ থেকে দাবি করেন, অবরোধের সমর্থনে সকাল ৮টার দিকে উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়ন বিএনপি’র পক্ষ থেকে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নিয়ে ছয়সূতী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যাওয়া মাত্র পুলিশ বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ প্রথমে লাঠিপেটা করে, পরে গুলি ছোড়ে। এতে অনেকে গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন মারা যান। গুলিতে নিহত বিল্লাল হোসেন স্থানীয় ছয়সূতী ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি ও মাধবদী গ্রামের কাজল মিয়ার ছেলে। তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়। অপরদিকে নিহত ইউনিয়ন যুবদল নেতা রেফায়েত উল্লাহ তনয় বড় ছয়সূতী চক বাজার এলাকার কাউসারের ছেলে। সেও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।

(এসএস/এসপি/নভেম্বর ০২, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test