E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হাজীগঞ্জে পঁচা গন্ধে মিললো নিখোঁজ কিশোরের গলিত লাশ

২০২৩ নভেম্বর ০৬ ১৯:০৫:৫২
হাজীগঞ্জে পঁচা গন্ধে মিললো নিখোঁজ কিশোরের গলিত লাশ

উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : নতুন ফেলা বালির স্তুুপ। সকাল থেকেই চারদিকে উৎকট গন্ধ। দুপুরের পর থেকে সেই গন্ধ প্রকট হয়ে উঠে। স্থানীয়রা নিশ্চিত হয় বালির নিচ থেকে তীব্র পঁচা গন্ধ বের হচ্ছে। খবর দেয়া হয় পুলিশকে। কিছুক্ষনের মধ্যেই পুলিশ এসে বালির নিচে বিকৃত মানবদেহের কিছুটা অংশের সন্ধান পায়। খবর পেয়ে ছুটে আসেন সার্কেল ওসিসহ অন্যরা। ততক্ষণে ঘটনাস্থলে হাজার হাজার উৎসক জনতার ভিড় জমে যায়। শেষ বিকেলে বালি সরিয়ে বের করে আনা হয় কোন এক পুরুষের গলিত লাশ। কিছু পরেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পাশের মকিমাবাদ গ্রামের এক দম্পত্তি। তারা এসে তাদের নিখোঁজ সন্তালের লাশ নিশ্চিত করে। 

সোমবার (৬ নভেম্বর) ঘটনাটি হাজীগঞ্জের ৫নং সদর ইউনিয়নের দোয়ালিয়া পূর্বপাড়া আমগাছতলা এলাকার।

পুলিশ ও মৃতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, গত ৩০ অক্টোবর সোমবার মিশুক (অটোরিকশা) নিয়ে নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় আরমান হোসেন (১৫)। সে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৪নং ওয়ার্ড মকিমাবাদ গ্রামের মেস্তুরি বাড়ির মো. আব্দুল মোতালেব দ্বিতীয় ঘরের বড় ছেলে। সে অটোরিকশা চালিয়ে বাবা-মা ও ছোট দুই ভাইসহ জীবিকা নির্বাহ করতো।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত সোমবার রাতে আরমান নিখোঁজ হয়। এরপর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোভজ করেও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে বুধবার হাজীগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডায়েরী (নং-৪৫) করে তার বাবা। সোমবার বিকালে ইউনিয়নের দোয়ালিয়া গ্রামের হাজীগঞ্জ-পিরোজপুর সড়ক পাশে বালুর স্তুপে মিলে আরমানের মরদেহ।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোস্তফা আহমেদ জানান, স্থানীয়দের মুখে দুগর্গন্ধের খবর পেয়ে আমি পুলিশে খবর দেই। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) পংকজ কুমার দে ও হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বালুর স্তুপের নিচ থেকে গলিত মরদেহটি উদ্ধার করে।

আরমানের বাবা আব্দুল মোতালেব ও মা পাখি বেগমসহ পরিবারের অন্যান্য লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এসে জুতা ও পরনের প্যান্ট দেখে আরমানের লাশ সনাক্ত করে। পুলিশ তাৎখনিক সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়।

নিহতের বাবা জানান, আরমানকে হত্যা করে লাশটি বালুর নিচে চাপা দিয়ে তার অটোরিক্সাটি নিয়ে নিয়ে যায়। আমার ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমার নিরীহ ছেলেকে কে বা কারা হত্যা করেছে তা পুলিশ তদন্ত করে বের করুক। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।'

কান্নার মধ্যে তিনি আরো বলেন, পারিবারিকভাবে কারও সঙ্গে আমাদের কোনো কোন শত্রুতা নেই। কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তা আমরা জানি না। ঘটনা তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের বিচার চাই।

এ ব্যাপারে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ বলেন, এ বিষয়ে নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কিশোর আরমানকে হত্যা করা হয়েছে। তার লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

(ইউএইচ/এসপি/নভেম্বর ০৬, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test