E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাধারণ ভোক্তাদের ওপর বাড়তি চাপ

সবজির হাত বদলে দামের রদ বদল, ন্যায্যমূল্য বঞ্চিত চাষিরা

২০২৩ নভেম্বর ০৯ ১৬:৫৭:৫২
সবজির হাত বদলে দামের রদ বদল, ন্যায্যমূল্য বঞ্চিত চাষিরা

স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যশোর : যশোর জেলাকে সবজির জোন বলা হয়। এখানে চাহিদার তুলনায় বেশি সবজি উৎপাদন হওয়াতে সারাদেশে সবজি সরবরাহ করা হয়ে থাকে। কাক ডাকা ভোরে চাষিরা তড়িঘড়ি করে যেমন তার ক্ষেত থেকে তরতাজা সবজি সংগ্রহ করে মোকামে নিয়ে আসেন তেমনি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ছুঁটে আসেন সেই সবজি কিনতে।

বলছিলাম, শহরতলী থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সাত মাইল নামক সবজির মোকামের কথা। এটি এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সবজির মোকাম। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় এই মোকামে সবজির ক্রয় বিক্রয় বেশি। তাছাড়া শীতের শুরুরে সবজির উৎপাদনও বেশি হচ্ছে। তবে এখানকার চাষিদের দাবি তারা নায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সবজি উৎপাদনে যে ব্যয় হয় সেই অনুপাতে পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে তারা লাভজনক ভাবে সবজি বিক্রি করতে পারছেন না।

এদিকে পাইকারি ক্রেতারা বলছেন, বর্তমান সময়ে সবজির উৎপাদন তুলনা মূলক বেশি। তাছাড়া বর্তমান সময়ে দেশে চলমান অবরোধ, হরতালে তাদের পরিবহন খরচ বেশি পড়ে যাচ্ছে। এমনকি স্বাভাবিকের চেয়ে ২গুণ বেশি পরিবহন বাবদ ব্যয় হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে তারা কিছুটা কম দামে সবজি ক্রয় করে সকল খরচ বাদ রেখে সামান্য মুনাফায় সবজির পরবর্তী হাত বদল করছেন। এই হাত বদলেই সবজির দাম ২ গুন হারে বদলে যাচ্ছে। যে কারণে সাধারণ ভোক্তাদের বাড়তি দামে সবজি কিনতে হচ্ছে। সবজির এই হাত বদলে পাইকারি ক্রেতাদের ভাগ্যবদল হলেও চাষিরা নায্যদাম পেতে কোণঠাঁসা হয়ে পড়ছেন।

বৃহস্পতিবার যশোরের সাত মাইল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন, মুলা, পটল, সিম, বরবটি, মিষ্টি কুমড়া, ফুলকপি,বাঁধাকটি,লাউসহ বিভিন্ন মৌসুমি সবজির সমোরাহ। এই সব সবজির মান ভেদে পাইকারি বাজার দর ১৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি। পাইকারি বিক্রির সময় ৪২ কেজি ১ মণ হিসাব করা হয়। অথচ এই সব সবজি খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ সবজির হাত বদলে প্রায় ২ দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সাত মাইল সবজির বাজারে ইউনুচ আলী নামে একজন চাষির সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, সবজি উৎপাদন করতে যে খরচ হচ্ছে সে অনুপাতে তারা দাম পাচ্ছে না। ফলে মৌসুম শেষে হিসাব থাকছে লসের কোটায়।

মকবুল হোসেন নামের একজন পাইকারি ক্রেতা জানান, অবরোধ হরতালে পরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে। পণ্য পরিবহনে তাদের বাড়তি খরচ বহন করতে হচ্ছে। পরিবহন খরচ, মুজুরি খরচ বাদ দিয়ে সামান্য লাভে তারা পণ্য বিক্রি করছে।

সাত মাইল কাঁচা সবজির হাটের ইজারাদার প্রতিনিধি আব্দুস সুবহান বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সবজির বড় চালান দুর দূরন্তে আনা নেওয়া করা ঝুঁকিপূর্ণ। চাষিরা নায্য মূল্য পেত যদি স্বাভাবিক পরিবহন খরচ থাকত। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারি ক্রেতারা সহজে পণ্য কিনে নিয়ে যেতে পারত।

এদিকে অনেকের মতে পাইকারি বাজারে ছোট ছোট সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। যারা সিন্ডিকেট করে কম দামে সবজি ক্রয় করে বাড়তি দামে বিক্রি করছে। বাজার মনিটরিং জোরদার করলে এই সমস্যার সমাধান হবে।

(এসএ/এসপি/নভেম্বর ০৯, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test