E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নিজাম, শাহ আলম, খলিলের বিরুদ্ধে মুন্না বাহিনীর অপপ্রচার ও তান্ডব

২০২৩ ডিসেম্বর ০৯ ১৮:৩১:২১
নিজাম, শাহ আলম, খলিলের বিরুদ্ধে মুন্না বাহিনীর অপপ্রচার ও তান্ডব

স্টাফ রিপোর্টার : ফতুল্লার কাশিপুর মড়া খালপাড় এলাকায় ইট- বালুর ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এক ব্যবসায়ীর রিক্সার গ্যারেজ ও বসত বাড়িতে হামলা চালিয়েছে স্থানীয় কিশোর গ্যাং লিডার মুন্না ও তার বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী লিটন মিয়ার স্ত্রী ও বড় ছেলের স্ত্রী বাধা দিতে এগিয়ে গেলে তাদের উপর হামলা চালায় মুন্না বাহিনী।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে ফতুল্লা থানাধীন উত্তর নরসিংপুর ৩ নং ওয়াড’স্থ মড়া খালপাড় এলাকায় অবস্থিত লিটন মিয়ার বাড়ি, রিক্সার গ্যারেজ ও একটি দোকানে হামলা চালায় মুন্না ও তার কিশোর গ্যাং সদস্যরা।

অভিযোগ রয়েছে, মুন্না নিজেকে প্রভাবশালী একজন নেতার অনুসারী দাবি করে দীর্ঘদিন ধরে ফতুল্লা ১ নং ২নং ও ৩নং ওয়ার্ডস্থ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদাবাজী করে আসছে। এছাড়াও এ সকল এলাকাগুলোতে নতুন ভবন নির্মাণ করতে হলে তার কাছ থেকে ইট, বালু, রডসহ সকল সামগ্রী ক্রয় করতে হয়। নয়তো সেসব নির্মাণাধীন ভবনে হামলা চালিয়ে চলমান কাজ বন্ধ করে দেয় মুন্না ও তার বাহিনীর সদস্যরা। তাছাড়া বহু বছর ধরে যারা এসব এলাকার ইট, বালু, রড, সিমেন্টের ব্যবসা করে আসছিলো। বর্তমানে তাদের ব্যবসা ছেড়ে দিতে বলা হয়। নয়তো বিভিন্ন অংকের নির্ধারিত চাঁদা দিয়ে নিজেদের ব্যবসা করতে বলেন মুন্না ও তার বাহিনী।

জানা গেছে, ঠিক তেমনি ভাবে ফতুল্লা থানাধীন উত্তর নরসিংপুর এলাকার ইট- বালুর ব্যবসায়ী রাসেল ও সাগড়কে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে বলেন মুন্না বাহিনী। নয়তো ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তাদের কথায় রাজি না হওয়া কারনে গত দু’দিন আগে ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি কিশোর গ্যাং নিয়ে রাসেল ও সাগরের দোকান, গ্যারেজ ও বসত বাড়িতে হামলা চালিয়ে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে। এতে ভুক্তভোগী পরিবার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে ভুক্তভোগী পরিবারের উপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যায় মুন্না ও তার ৩ ভাই।

পরে মঙ্গলবার ( ৫ ডিসেম্বর) রাতে অর্ধশত সদস্যসহ মুন্না তার ভাই জনি ও সুমন দেশীও অস্ত্র নিয়ে ভাংচুর চালায় লিটন মিয়ার( রাসেল ও সাগরের পিতা) প্রতিষ্ঠানে। ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুন্না ও তার ভাইদের নামে করা অভিযোগের ফলে তারাও একটি পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন। আর সে অভিযোগের তদন্ত করতে যান ফতুল্লা মডেল থানার এস, আই আজিজ। যে সময় পুলিশ রাসেলের রিক্সার গ্যারেজ তল্লাশি করছে। ঠিক সে সময় মুন্না ও তার ৩ ভাইসহ অর্ধশত জনের একটি কিশোর গ্যাং বাহিনী তাদের বসত বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় রাসেল ও সাগরকে খোঁজ করে মুন্না বাহিনী ও ঘটনাস্থলে যাওয়া পুলিশ সদস্যরা।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর বড় ছেলে রাসেল বলেন, মুন্না ও তার ভাইসহ তার বাহিনীর সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের ইট- বালুর ব্যবসা ছেড়ে দিতে হুমকি দিয়ে আসছিলো। নয়তো ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। পরে আমরা রাজি না হলে গত দু’দিন তারা এসে আমার গ্যারেজ, দোকানে হামলা চালায়। এ বিষয় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতাও পায়। তবে আজ হঠাৎ পুলিশ এসে আমার গ্যারেজ তল্লাশি করছে। কেনো তল্লাশি করছে জানতে চাইলে, পুলিশ সদস্যরা বলেন এ গ্যারেজে নাকি মাদক বিক্রি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা হামলার শিকার হয়ে পুলিশের কাছে বিচার চাইতে থানায় গেলাম। আজকে উল্টো আমাদের ধরতে আইছে। মুন্না বাহিনী পুলিশের উপস্থিতিতেই আমার বাড়িতে হামলা চালায়। সে সময় আমার মা ও স্ত্রী প্রতিবাদ করতে আসলে তাদের উপরেও হামলা চালায় এবং যাওয়ার সময় বলেন তোর ছেলেকে বলিস ব্যবসা ছেড়ে দিতে। নয়তো মেরে ফেলবো।

অনুসন্ধান বলছে, ফতুল্লা থানাধীন ২ নং ওয়াডস্থ আলিপাড়া মসজিদ শান্তিনগড় এলাকার সুরুজ মিয়ার ৪ ছেলেরা পুরো ফতুল্লার বেশকিছু এলাকার কয়েকশ কিশোরদের নিয়ে পৃথক গ্যাং গড়ে তুলেছে। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে মুন্না ও তার আপন ৩ ভাই নিজেদের একজন নেতার অনুসারী দাবি করে পুরো এলাকায় চাঁদাবাজীসহ সব ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এসব সদস্যদের নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের যে কোনো মিটিং- মিছিলে শামিল হয়। আর সে সুবাদে আওয়ামী লীগের পদে থাকা বিভিন্ন নেতাদের সাথে কৌশলে ছবি তুলে নেয়। পরে তা নিজের ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধমে শেয়ার করেন। নেতাদের সঙ্গে তোলা ছবি দেখিয়ে পুরো এলাকায় একটি ত্রাসের রাজত্ব করেছে মুন্না ও তার ৩ ভাই জনি ও সুমন।

বৃহস্পতিবার রাতে বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়াতে ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মাদক কারবারি সহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে মিথ্যা অপপ্রচার চালায় মুন্না ও তার সহযোগী। এর প্রতিবাদ আমরা খালপাড়া এলাকায় ভুক্তভোগী ও তার পরিবারসহ স্থানীয় এলাকাবাসীরা তীব্র নিন্দা ও খুব প্রকাশ করেন এবং এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন

(এমএস/এএস/ডিসেম্বর ০৯, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test