E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গ্রেফতারকৃতরা নির্দোষ, দাবি সন্দিগ্ধ আসামি পরিবারের

পাবনার আমীনপুরে শিশু নাফিয়া জাফরিন মুসকানের মূল হত্যাকারী কে? 

২০২৪ জানুয়ারি ১০ ১৭:৪২:১২
পাবনার আমীনপুরে শিশু নাফিয়া জাফরিন মুসকানের মূল হত্যাকারী কে? 

নবী নেওয়াজ, পাবনা : পাবনার আমীনপুর এর শিশু নাফিয়া জাফরিন মুসকানের মূল হত্যাকারী কে? এ প্রশ্ন শাড়ীরভীটা এলাকাবাসীর এখন মুখে মুখে বাদীর এজহারকৃত মামলার সূত্রে জানা যায় আমিনপুর থানাধীন রানীনগর ইউনিয়নের বৃ,মালঞ্চি গ্রামের আরশেদ আলী বিশ্বাস এর ছেলে নাজবুল হাসান ওরফে নাজমুল বিশ্বাস কর্মের সূত্রে ঢাকায় থাকেন বছর শেষে মেয়ে জাফরিনের স্কুল ছুটি হলে নাজমুল বিশ্বাস তার স্ত্রী চম্পা খাতুন ও মেয়ে নাফিয়া জাফরিন মুসকান (৬) কে ১১/১২/২০২৩ তারিখে তার শ্বশুরবাড়ি (জাফরিনের নানার বাড়িতে) আমিনপুর থানাধীন শাড়ীরভিটা গ্রামে বেড়াইতে পাঠায়। ১৭-১২-২৩ তারিখে নাজমুলের মা নাজমুল কে ফোন কলে জানান পারে যে তার বাচ্চা নিখোঁজ। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য নাজমুল তার স্ত্রীর ফোনে তাৎক্ষণিক কল দিলে নিশ্চিত হয় যে তার মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন নাজমুল ঢাকা থেকে শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে ওই তারিখেই রাত১০টার দিকে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছায় আত্মীয়-স্বজন নিয়ে শশুর বাড়ির আশপাশ এলাকা খোঁজাখুঁজি একপর্যায়ে নাজমুলের শ্বশুর আব্দুস সালাম এর পাট্টা দেওয়া টয়লেটের পূর্ব পাশে জাফরিনের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে নাজমুলের সম্বন্ধী বাবু শেখ ডাকচিৎকার
দিলে বাবু শেখের আরেক ভাই মঞ্জু শেখ ঘটনাস্থলে চলে যায় এবং জাফরিন কে কোলে নিয়ে শশুরের স্বয়ন কক্ষে নিয়ে এসে দেখতে পায় যে জাফরিনের দেহের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ঠোঁট ও কানে লালচে ও রক্তের দাগ পড়নে পায়জামা ছিল না। গ্রাম্য একজন ডাক্তার সেলিম (সাবেক মেম্বার) জাফরিনকে প্রাথমিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বলে যে মারা গেছে। বিষয়টি সুজানগর থানা কে অবগত করলে আমীনপুর থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তাদের জন্য মর্গে পাঠায়। আমীনপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে । যার নং ১১ , তারিখ ১৮-১২-২০২৩ ধারা ৩০২ ২০১ পেনাল কোড ১৮৬০।

এ ঘটনায় পিবিআই পুলিশ মামলার সূত্র ধরে শাড়ীরভিটা গ্রামের মঞ্জু শেখের ছেলে সৌরভ (২০) ও মোসলিম শেখের ছেলে ইমরান শেখ (২৫) কে ২৬/১২ /২০২৩ তারিখ বিকাল ৪'৫০টায় আটক করে আদালতে সোপর্দ করেন। পিবিআই পুলিশ গ্রেফতারকৃত নথিতে উল্লেখ করেছেন সন্দিগ্ধ আসামি সৌরভ মৃত্যু নাফিয়াকে স্থানীয় দোকান থেকে বিস্কুট কিনে দিলে নাফিয়া বিস্কুটের প্যাকেটটি তার মার কাছে দিয়ে সৌরভের সঙ্গে যায় । এরপর থেকে নাফিয়া জাফরিন মুসকান নিখোঁজ হয়।

এ বিষয়ে সরেজমিন শাড়ীরভিটা গেলে নাফিয়া জাফরিন এর নানা ছালাম শেখ জানান, আটকৃত দুইজনে নির্দোষ আমার নাতিন নাফিয়া জাফরিনকে হত্যা করেছে আমার ছেলে আনোয়ার হোসেন সাহেবের স্ত্রী রাশিদা বেগম। সে নিজের মুখে স্বীকারোক্তি করেছেন পরবর্তীতে সাহেবের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সাহেবের স্ত্রী জানান আমার মাথায় গন্ডগোল আছে আমার ঘাড়ে জিন আছে। নাফিয়া জাফরিন ঐদিন আমার ঘরে এসেছিল আমি তাকে মেরেছি কিভাবে মেরেছি আমি এখন বলতে পারব না আমার মনে নেই আমার ঘাড়ে যখন জীন আসে তখন আমি মানুষ থাকি না। সেও জানায় আমার শ্বশুর ৬ বছর আগে আমার ছেলেকে পিঠিয়েছিল আমার ছেলে মারা গিয়েছে সে ঘটনাও আমার মনে নেই। এই শিশু হত্যার বিষয় শাড়ির ভিটা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

জাফরিনের আরেক মামা ইকবাল হোসেন জানান, ঘটনার দিন ইমরান হোসেন তার বসতবাড়ির নিচে পাওয়ার টিলার মেরামত কাজের জন্য মেকার আলীম শেখ আসলে তার সঙ্গে সহযোগী হিসাবে সারা দিনই পাওয়ার টিলার কাজে ব্যস্ত ছিলো। ঘটনা জানাজানি হলে লোক মুখে শুনে ইমরান তার ভাগ্নির জাফরিনকে খোঁজার জন্য লোকজনের সঙ্গে সহযোগিতা করে এর মধ্যে সৌরভের সঙ্গে তার কোন যোগাযোগ হয় নাই। তবে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে সৌরভ এসে জাফরিনকে খোঁজার কাজের সহযোগিতা করে।

তবে নাম প্রকাশ না করা শর্তে এলাকার একাধিক ব্যক্তি ও নাফিয়ার মামা সহ বেশ কয়েকজন জানান, সাহেব শেখ ওরফে আনোয়ার শেখ এর ছেলে বাধন শেখ ও সাধন শেখ এ ঘটনার সম্পূর্ণ জানে কে কিভাবে কোথায় ঘটিয়েছে এবং কেন মেরেছে সাধন শেখের মা রাশিদা নিজ মুখে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্বীকার করেছে এদেরকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত তথ্য উদঘাটন হতে পারে বলে এলাকাবাসী জানায়। এ বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত দাবি জানান পরিবার ও এলাকাবাসী।

(এন/এসপি/জানুয়ারি ১০, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test