E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সিলেট সীমান্তের হালচাল

সিলেট সীমান্তের শীর্ষ চোরাকারবারি বরিশাল্যা নিয়াজের প্রধান পৃষ্ঠপোষক কে এই ইকবাল?

২০২৪ জানুয়ারি ১৮ ১৫:২১:১৫
সিলেট সীমান্তের শীর্ষ চোরাকারবারি বরিশাল্যা নিয়াজের প্রধান পৃষ্ঠপোষক কে এই ইকবাল?

রিয়াজুল রিয়াজ, বিশেষ প্রতিনিধি : সিলেট সীমান্তে সবচেয়ে বড় চোরাকারবারিদের অন্যতম বরিশাল্যা নিয়াজ। বরিশাল থেকে সিলেট সীমান্তে এসে চোরাকারবারি করে অবৈধভাবে বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। বরিশাল থেকে আগত এই শীর্ষ চোরাকারবারিকে স্থানীয় জনসাধারণ ও প্রশাসন বরিশাল্যা নিয়াজ নামে জানেন। চিহৃিত এই চোরাকারবারি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন মূলতঃ ভারত থেকে চোরাকারবারি'র মাধ্যমে বিভিন্ন কসমেটিক ও কাপড়ের চালান এনে। সিলেট সীমান্তের এই শীর্ষ চোরাকারবারি'র নামে অনেকগুলো মামলা থাকলেও অদৃশ্য কারণে তিনি সব সময় ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকেন। কয়েকমাস আগে জৈন্তাপুর সীমান্তে কর্তব্যরত সিআইডি পুলিশের উপর হামলা মামলার অন্যতম আসামী নিয়াজ পুলিশের খাতায় একজন পলাতক আসামী হলেও পুলিশের নাকের ডগার উপর দিয়ে ঘুরাফেরা করছেন তিনি। সিআইডি পুলিশের উপর আক্রমণ, একাধিক পুলিশ কর্মকর্তাকে আহত করা এই চোরাকারবারিকে সিলেটের জৈন্তাপুর থানা পুলিশ রহস্যজনক কারণে খুঁজে পায় না।

বরিশাল্যা নিয়াজের নামে সিলেটের বিভিন্ন থানায় বেশ কিছু মামলা থাকলেও আগাগোড়াই পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে গেছেন নিয়াজ। নিয়াজের সাথে সিলেটের সীমান্তের জৈন্তাপুর থানাসহ বিভিন্ন থানার সাথে বিশেষ সখ্যতা রয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা দৈনিক বাংলা ৭১কে জানিয়েছেন। সেই কারণেই নাকি তিনি সিআইডি পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় একাধিক মামলা হওয়ার পরও তিনি গ্রেফতার হননি বলেও জানান তারা। যদিও জৈন্তাপুর থানা পুলিশ বরাবরই এসব বিষয় অস্বীকার করে আসছেন। তাঁদের চোখে চোরাকারবারি বরিশাল্যা নিয়াজ পলাতক আছেন।

তাছাড়া, চোরাকারবারি বরিশাল্যা নিয়াজ স্থানীয় ইকবাল নামক এক ব্যক্তির সহযোগিতায় তার চোরাকারবারির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। সিলেট মেট্রো ও সিলেট সীমান্তের বিভিন্ন থানা পুলিশের যোগসাজশে নিয়াজ তার চোরাকারবারি নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছেন। বরিশাল্যা নিয়াজ সম্প্রতি তার আশ্রয়দাতা ও মদদদাতা স্থানীয় ইকবালের থেকে জমি কিনে বাড়ি তৈরি করে সিলেটের স্থায়ী বাসিন্দা হতে চলেছেন বলেও জানা গেছে। আর এই কাজে নিয়াজের কথিত আশ্রয়দাতা ইকবাল নিজে নিয়াজের এসব যাবতীয় সহযোগিতা করছেন। এমনকি ইকবাল তাকে কাছে রাখতে নিজের জমি নিয়াজের কাছে বিক্রি করেছেন বলেও নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় সুত্র।

উল্লেখ্য, নিয়াজ প্রায় খালি হাতে বরিশাল থেকে সিলেটে এসেছিলেন। সীমান্তে এসে জড়িয়ে পড়েন চোরাকারবারিতে। প্রথমে ছোট ছোট চোরাকারবারি করলেও ধিরে ধিরে ইকবালের সহযোগিতায় তার চোরাকারবারি পরিধি বাড়াতে থাকেন। তারপর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি সব সময় ম্যানেজ করে তার অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। মাঝে মাঝে প্রশাসনের কেউ তার চোরাচালানের গাড়ি আটকালে তিনি প্রশাসনের কর্তব্যরত ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হন এবং তাকে লোক মারফত নানা রকম হুমকি ধামকিও দিয়ে থাকেন। এদিকে অনুসন্ধানে জানা যায় যখন বরিশাল্যা নিয়াজ কোন মামলায় জড়িয়ে যান তখন তিনি সিলেট সদরের খাদিমনগর ইউনিয়নের উন্দারপাড়া গ্রামের ইকবালের আশ্রয়ে থাকেন। ইকবালই তাকে শুরু থেকে পালিয়ে থাকা সব ধরণের সহযোগিতা করে থাকেন বলেও জানা যায়।

সম্প্রতি সিলেট সিআইডি পুলিশের উপর হামলায় সিলেট সিআইডি'র পক্ষ থেকে যে দু'টি মামলা করা হয়েছে, তার একটিতে ৪ নং এবং অপরটি ৫ নং আসামী হিসেবে বরিশাল্যা নিয়াজের নাম রয়েছে বলে মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

চোরাকারবারি নিয়াজ সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, ধোপাগুলসহ বিভিন্ন এলাকায় নামে বেনামে বিঘা-বিঘা জমি কিনে রেখেছেন বলেও জানা গেছে। তাছাড়া তিনি এখন তার নিজস্ব তিনটি ট্রাকের সাহায্যে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রায় প্রতি রাতেই সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবারি করেন বলে স্থানীয় সুত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

(আরআই/এসপি/জানুয়ারি ১৮, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test