E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভেড়ামারায় মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ৩০ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা

২০১৪ নভেম্বর ১১ ১৮:১৮:৫০
ভেড়ামারায় মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ৩০ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ৩০ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ৩০ মুক্তিযোদ্ধার নাম ঠিকানা উল্লেখ করে তাদের গেজেট নম্বর, মুক্তিবার্তা নম্বর এবং আইডি নম্বর তুলে ধরা হয়েছে অভিযোগে। ইতোমধ্যে ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা বন্ড দিয়ে ভাতা গ্রহণ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বাদশা স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে তার মুক্তিবার্তা নং ০৪১১০৩০০৮৬, গেজেট নং ৮১৪, আইডি নম্বর ০৪০৬০৬০১৩৪ উল্লেখ করেছে।

এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ উদ্ধর্তন ৭টি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করার পর তদন্তে নেমেছে কয়েকটি সংস্থা। এ বিষয়ে তোলপাড় চলছে ভেড়ামারায়।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, স্বাধীনতার পর ভেড়ামারা উপজেলায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় স্থান পেয়েছে। যারা আদৌ মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেনি। জাল সার্টিফিকেট তৈরী করে মোটা অংকের অর্থ দিয়ে তারা মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে। অভিযোগ পত্রে, মুক্তিযুদ্ধের তালিকা থেকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রয়েছে, ভেড়ামারা উপজেলার বামনপাড়া এলাকার মৃত আছের আলী সর্দ্দারের পুত্র আজগর আলী, মৃত হাজী সৈয়দ আলীর পুত্র অ্যাড. আবুল হাশেম, ক্ষেমিরদিয়াড় গ্রামের মৃত আনোয়ার আলী মালিথার পুত্র মশিউর রহমান, নওদাপাড়া এলাকার আব্দুল জলিলের পুত্র সিরাজুল ইসলাম, ভেড়ামারার মৃত মহাসিন আলীর পুত্র ডা. পিয়ার উদ্দীন, চন্ডিপুর গ্রামের মৃত আজিমউদ্দীন’র পুত্র আকরাম হোসেন, ফারাকপুর গ্রামের মৃত রেজওয়ান আলীর পুত্র ইসরাইল হোসেন, মির্জাপুর গ্রামের মৃত ভিকু মন্ডল’র পুত্র বিশারত আলী, নওদাপাড়া গ্রামের মৃত মকছেদ আলী মৃধার পুত্র লাল মোহাম্মদ, বাহিরচর গোলাপনগর গ্রামের মৃত আহাদ আলী খাঁন’র পুত্র আজমল হক খাঁন, মসলেমপুর বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত মীর ইউনুচ আলীর পুত্র মীর হোসেন ইউনুচ টিপু, কুচিয়ামোড়া গ্রামের মৃত মফের আলীর পুত্র ডা. মুনছুর আলী, কুঠিবাজার গ্রামের মৃত মোজাহারুল হক’র পুত্র আবুল মুনসুর (ঢাকা মিরপুর হইতে ভাতা প্রাপ্ত), বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত নবীর উদ্দীন মন্ডলের পুত্র মনসুর আলম মন্টু, ১৬ দাগ গ্রামের মৃত আকছার আলীর পুত্র এম এ আজিজা খানম, আলহাজ্ব আজিজুল হক’র পুত্র আনছুম ফেরদৌস, বাহাদুরপুর কৈগাড়ীপাড়া গ্রামের মৃত আরশেদ আলীর পুত্র মৃত সেকেন্দার আলী, বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত খোরশেদ আলীর পুত্র খাইরুল বাশার নান্টু, ক্ষেমিরদিয়াড় গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের পুত্র মৃত ছায়েদ আলী, মির্জাপুর জুনিয়াদহ গ্রামের আছির উদ্দীন মন্ডলের পুত্র আবুল কালাম আজাদ, বাহিরচর গ্রামের মিরাজুল ইসলামের পুত্র রুহুল আমীন বাবুল, ১৬ দাগ বাহিরচর গ্রামের খাঁন’র পুত্র এলাহী বকস্, মালিথা’র পুত্র আব্দুল মজিদ, গোলাপনগর মোকারিমপুর গ্রামের আখতারুল হক’র পুত্র এনামুল হক, ময়েজ সর্দ্দারের পুত্র মজিবুল হক, কাজীপাড়া বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত লইম উদ্দীন’র পুত্র নুরুল আলম, ভেড়ামারা কুঠিবাজার গ্রামের মৃত আব্বাছ আলী বিশ্বাস’র পুত্র আবু বক্কর সিদ্দিক, বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত আনিত আলী মন্ডল’র পুত্র আব্দুল খালেক, ১৬ দাগ বাহিরচর গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের পুত্র মৃত রফিকুল ইসলাম।

ভেড়ামারা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার অ্যাড. আলম জাকারিয়া টিপু মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যাচাই বাছাই চলছে। তদন্ত শেষ হলেই বলা যাবে কারা মুক্তিযোদ্ধা আর কারা ভুয়া। তিনি বলেন, ভেড়ামারায় মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রয়েছে ২৫৫ জন মুক্তিযোদ্ধা।
এরমধ্যে ১৯১ জন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সুবিধা ভোগ করেন। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল’র ২৪ তম সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভারতীয় তালিকা, মুক্তিবার্তা তালিকা এবং প্রধানমন্ত্রী স্বাক্ষরিত সনদ ব্যাতীত যারা মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবী দার বা ভাতা গ্রহন করেন, তাদের তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে। ৩ তালিকার বাইরে থাকায় ইতোমধ্যে ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা বন্ড দিয়ে ভাতা গ্রহন করেছেন। অনেকেই বন্ড দিয়ে ভাতা নিতে আগ্রহী নয়। তাদের অর্থ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে ফেরত দেওয়া হচ্ছে।
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগে অভিযুক্ত অ্যাড. আবুল হাশেম নিজেকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা দাবী করে জানিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে আমি ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। আমার সমস্ত কাগজপত্র রয়েছে।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শান্তি মনি চাকমা জানিয়েছেন, সন্দেহজনক ৩০ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার ব্যাপারে তদন্ত চলছে। ভুয়া সনাক্ত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ইতোমধ্যে ৩ তালিকার বাইরের মুক্তিযোদ্ধাদের বন্ড দিয়ে মাসিক ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।

(কেকে/এটিআর/নভেম্বর ১১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test