E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

স্কুলের পাশের ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

২০২৪ জানুয়ারি ২৫ ১৬:২৫:১৩
স্কুলের পাশের ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : ইট পোড়ানোর মৌসুমে সতর্ক থাকতে হয় স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। হঠাৎ বাতাসে ভেসে আসে ধূলা-ধোঁয়া। আর তখনই স্কুলের জানালা-দরজা বন্ধ করে দিতে হয়। ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বসন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও শ্রীরামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এমন ভোগান্তিতে ফেলেছে পাশেই গড়ে ওঠা এক ইটের ভাটা। সমস্যা শুধু শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরই নয়, আশপাশের বাড়িতে বসবাসরত মানুষদেরও সমস্যায় পড়তে হয় ভাটায় ইট পোড়ানো শুরু হলে।

শিক্ষকদের অভিযোগ, স্কুলের সীমানার খুব কাছেই গড়ে তোলা হয়েছে ভাটাটি। যেখানে মৌসুমে কাঠ পুড়িয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। এই ভাটার কালো ধোঁয়া আর উড়ে আসা বালি বিদ্যালয় ভবনে প্রবেশ করে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে। এতে প্রায় সময় শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।

আর ভাটার পাশে বসবাসরত বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভাটা চালু হলে ঘরবাড়িতে ধুলা-বালির স্তুপ পড়ে যায়। উঠান,বারান্দা,ঘরের ভেতর পর্যন্ত চলে যায় ধুলা-বালি। তাতে অসুবিধায় পড়তে হয় অনেক। এমনকি ধুলা-বালির কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশু ও বৃদ্ধরা।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) ২০১৯ অনুযায়ী, বিশেষ কোন স্থাপনা, রেলপথ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিংবা অনুরূপ কোনো স্থান বা প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার দূরে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে।

এলাকাবাসী বলেছেন, তিন বছর আগে হঠাৎ ইটভাটার কাজ শুরু হয়। মিজানুর রহমান মধু নামের স্থানীয় একজন ভাটাটি প্রতিষ্ঠা করেন। ভাটাটি বিদ্যালয় ও বসতবাড়ীর পাশেই হওয়ায় বিদ্যালয়ে পাঠদান ও বাড়িতে বসবাস করা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এর প্রতিকার চান তারা।

বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তাঁরা কষ্ট করে পড়ালেখা করে। বাতাস হলে চোখ মেলে চলাফেরা করা যায় না। কালো ধোঁয়া এসে শ্রেণিকক্ষে গন্ধ ছড়ায়। তাদের শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্রের অভিভাবকেরা বলেন, ইট পোড়ানো মৌসুম এলে বিদ্যালয়ে বাচ্চা পাঠিয়ে তাঁরা সারাক্ষণ চিন্তায় থাকেন কখন বাচ্চাটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিদ্যালয় এলাকায় গেলে পোড়ামাটির গন্ধ নাকে এসে লাগে। চোখ মেলে হাঁটাচলা করলে বালুকনা উড়ে এসে পড়ে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা কালো ধোঁয়ায়। দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হয়।

ইটভাটা মালিক মিজানুর রহমান মধু জানান, আমি যথাযথ নিয়ম মেনেই ভাটা নির্মাণ করেছি। এখানে তো কারোর কোন অসুবিধা হচ্ছে না। আমি ডিসি-ইউএনও সবকিছুই ম্যানেজ করে চলি।

এ বিষয়ে শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মেহেদী হাসান জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে ইটভাটা থাকাটা দুঃখজনক। এতে করে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

(একে/এসপি/জানুয়ারি ২৫, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test