E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সুবর্ণচরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ

২০২৪ জানুয়ারি ৩১ ১৩:৫৭:১৯
সুবর্ণচরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ

মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী : নোয়াখালী সুবর্ণচর উপজেলার ৩নং চর ক্লার্ক ইউনিয়নের কেরামতপুর এম এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছির উদ্দীন হেলাল এর বিরুদ্ধে নিয়োগ-বাণিজ্যের নামে টাকা আদায় ও নিয়োগ পরিক্ষার আগেরদিন এতাধিক চাকুরিপ্রার্থীকে প্রশ্ন পত্র ফাঁস করার  অভিযোগ উঠেছে। সকল প্রমাণাদি থাকার পরেও আজ অবধি শিক্ষক নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ভুক্তভোগীরা প্রমাণাদিসহ পরিচালনা কমিটির মিটিংয়ে উপস্থাপন করলে ঐ শিক্ষক স্বিকার করেন বলে জানান বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি।  কিন্তু আজ অবধি কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী।

সরজমিনে গিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তোভোগীরা বলেন, কেরামতপুর এম এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেলাল উদ্দিন নাছির কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, আয়া, নিরাপত্তা কর্মী ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীসহ চারজন কর্মচারী পদে চাকুরি দেয়ার নাম করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এবং টাকা বিনিময়ে নিয়োগ পরীক্ষার আগের রাতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তুলেছেন একাধিক নিয়োগ প্রার্থীরা। অনেকেই টাকার মাধ্যমে এসব প্রশ্ন পেয়েছেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য নবী আলম এবং ওমর ফারুক বলেন, প্রধান শিক্ষক কমিটির মিটিয়ে টাকা নেয়ার বিষয়ে শিকার করেছেন, একাধিক চাকুরিপ্রার্থী আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে, একনারী তার স্বর্ণ বিক্রি করে টাকা দিয়েছেন বলে আমাদেরকে জানিয়েছে, তিনি যেটা করেছেন সেটা সম্পূর্ণ বেআইনি, পরবর্তি মিটিংয়ে আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম আজাদ জানান, ভুক্তভোগীদের আবেদনের পেক্ষিতে পরিচালনা কমিটি ভুক্তভোগীদের বক্তব্য শুনার এবং প্রমানাদি দেখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ১১ ডিসেম্বর ২৩ তারিখে ভুক্তভোগীদের বক্তব্য এবং প্রমাদি দেখেন পরিচালনা কমিটি, অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ২৬ ডিসেম্বর ২৩ ইং তারিখে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভায় উক্ত নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, একই সাথে উক্ত নিয়োগ বানিজ্য ও অনিয়ম কর্মে প্রধান শিক্ষকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয় কিন্তু আজ অবধি তিনি কোন জবাব দেন নি।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি, চরক্লার্ক ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি থাকাকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষক নাছির উদ্দীন হেলাল এর ব্যাপক অনিয়ম, দূর্নীতি ও অর্থ বানিজ্যের সত্যতা পাই, তার অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে সাগরিকা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার অফিস কক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম এর নেতৃত্বে শালিসী বৈঠক বসে, বৈঠকে বিদ্যালয়ের কাগজপত্র পর্যালোচনায় ১২ লক্ষ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়, শালিসের সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রধান শিক্ষক ক্ষমা চেয়ে ৯ লক্ষ টাকা জমা দেয়। এসব প্রতিবাদ করার কারনে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ দিয়ে কারসাজি করে গোপনে কমিটি ভেঙ্গে দেন।

অভিযোগের বিষয়ে কেরামতপুর এমএম উচ্চ বিদ্যালয়েন প্রধান শিক্ষক নাছির উদ্দীন হেলাল বলেন, নিয়োগ বোর্ড যাদেরকে সুপারিশ করছে, পরিচালনা কমিটি সুপারিশ রাখতে ও পারে নাও রাখতে পারে, পরিচালনা কমিটি মনে করছে এদের নিয়োগ দিলে প্রাতিষ্ঠানিক বা একাডেমিক সমস্যা হতে পারে, এই কারণে তাদের নিয়োগ বাতিল করে দিয়েছে পরিচালনা কমিটি, অর্থ বানিজ্যের কথপোকথন রেকর্ডের বিষয় জানতে চাইলে কথাগুলো তার নয় বলে অস্বিকার করেন।

অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কবির আহামেদ বলেন, প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, ভুক্তভোগী শামীমের সাথে কথাও হয়েছে। তারা সরাসরি আমার কাছে অভিযোগ করেছে যদি ইউএনও বরাবর করা হলে আমার জন্য কাজ করতে সুবিধা হতো, তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিয়োগ বঞ্চিতরা ও স্থানীয় সচেতন মহল উক্ত নিয়োগ বানিজ্যের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন ও অবৈধ নিয়োগ বাতিলসহ প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি করছেন তারা।

(আইইউএস/এএস/জানুয়ারি ৩১, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test