E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাসাইলে ঝিনাই নদী পাড়ের মাটি বিক্রির মহোৎসব

২০২৪ ফেব্রুয়ারি ০৩ ১৮:৪০:২৪
বাসাইলে ঝিনাই নদী পাড়ের মাটি বিক্রির মহোৎসব

স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ভৈরপাড়া সতীশ চন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়  সংলগ্ন এলাকার ঝিনাই নদীর তীর থেকে বালু ও মাটি কেটে বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী  চক্র। অবৈধভাবে বালু ও মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। এর ফলে কোটি টাকা ব্যয়ে নব নির্মিত গ্রামীণ পাঁকা রাস্তা ধ্বংসের মুখে পরেছে। 

এলাকাবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ভৈরপাড়ায় বেশির ভাগ হিন্দু ধর্মের মানুষের বসবাস। এখানে আমরা নদী তীরবর্তী তিন ফসলি জমিতে বোরো, সরিষা ও চৈতালী ফসল চাষ করি। পার্শ্ববর্তী গ্রাম আদাজানে বেশির ভাগ লোক নদীর ওপারে বসবাস করেন। এপারে তাদের কিছু জমি রয়েছে। আদাজানের জমিওয়ালাদের নদী পার করে শষ্যাদি নিতে কষ্ট হয় তাই তারা প্রতি বছর জমির মাটি বিক্রি করে দেন। এসময় মাটি ব্যবসায়ীরা আমাদের সরিষা ও বোরো ধানিজমির উপর দিয়ে মাটির গাড়ী চালিয়ে ফসল নষ্ট করে। আমরা হিন্দু মানুষ। কিছু কইতে পারি না। আমরা এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসন কে জানাতে গেলে তাদের লোকজন এসে আমাদেরকে হুমকি দেবে। তারা প্রভাবশালী। বাধ্য হযে ফসলের ক্ষতি পূরণবাবদ যা টাকা দেয় তাই নিয়ে চুপচাপ থাকি। মাঝে মাঝে পুলিশ আসে। আমরা তাদের মৌখিক ভাবে জানিয়েছি কিন্তু কোন ফল পাইনি। গত দু মাস ধরে সারা রাত টানা ভেকু চলছে। এছাড়া মাটির গাড়ী চলাচল করে। আমরা দিনশেষে শান্তিমত ঘুমাতেও পারি না। আমাদের জমির ফসল আর বাড়ীঘর ধুলোয় অন্ধকার। আমাদের পরিবারের ছোট শিশু আর বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টে ভূগছে। আপনাদের মত সাংবাদিকরাও আসে। তাদেরও আমরা জানিয়েছি।

তারা আরো জানান, আমাদের অভিযোগ প্রশাসন পর্যন্ত পৌঁছানো যাচ্ছে না। তবে প্রশাসনের সঙ্গে আতাঁত করেই নাকি নদী থেকে বালু ও মাটি কেটে বিক্রি করছেন তারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নদীর তীর ঘেঁষে প্রায় ৪০০ শতাংশ জমিতে দুটি ভেকু বসিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। নদীর তীর প্রায় ৩০ ফুট গর্ত করে তলদেশ থেকে বালু কেটে নিচ্ছেন মাটি ব্যবসায়ীরা। মাটি পরিবহনের জন্য ৩০-৩৫ টি মাঝারি ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টর চলছে ফসলি জমি নষ্ট করে। গাড়ি দিয়ে এসব মাটি পরিবহনের ফলে ব্যহৃত হচ্ছে বোরো চাষাবাদ। নষ্ট হচ্ছে সরিষা আর ভুট্টা জাতীয় ফসল। ধুলোর আস্তরণ পড়েছে ফসলের উপর। বালুকাটা চক্রটি অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় প্রান্তিক কৃষকরা কোন প্রকার প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।

এ বিষয়ে বালু ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, আমরা প্রশাসন ও পুলিশ ম্যানেজ করেই ব্যবসা পরিচালনা করছি। পুলিশ ও প্রশাসনের সাথে কথা না বলে এসব ব্যবসা চলে না। এখানে গাড়ি চলাচলের জন্য জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ স্বরূপ উচিতের চাইতে অনেক বেশি টাকা দিয়েছি। এ জমির মাটি কাটা কোন সমস্যা না। এ বছর কাটতেছি আগামী বছর দেখবেন ভরে গেছে। জমির মালিকদের শুধু লাভ আর লাভ।

এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল হক বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। বালু ব্যবসায়ীদের সাথে প্রশাসনের কোন আঁতাত নেই। তবে কে বা কারা নদীর পাড় কেটে বালু বিক্রি করছে খবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

(এসএম/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test