E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সিলেট সীমান্তের হালচাল

সিলেটে সিআইডি পুলিশের ওপর হামলা মামলায় ৪ মাসেও চার্জশিট দিতে পারেনি পুলিশ

২০২৪ ফেব্রুয়ারি ১৬ ১৭:৩৭:১৫
সিলেটে সিআইডি পুলিশের ওপর হামলা মামলায় ৪ মাসেও চার্জশিট দিতে পারেনি পুলিশ

রিয়াজুল রিয়াজ, বিশেষ প্রতিনিধি : সিলেটে সিআইডি পুলিশের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলা মামলার চার মাস পেরিয়ে গেলেও ওই মামলার চার্জশিট দিতে পারেনি জৈন্তাপুর থানা পুলিশ। এমনকি মামলার গত চার মাসে একটি আসামিকেও তারা গ্রেফতার করতে পারেনি। সিআইডি পুলিশের ওই মামলায় এক আসামী কোর্টে আত্নসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠায় আদালত। এই ক্ষেত্রে জৈন্তাপুর থানা পুলিশ ওই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আসামির রিমান্ড চাওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি জৈন্তাপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা।

স্থানীয় সূত্র বলছে, ইচ্ছে করেই সিআইডি পুলিশের করা মামলা দু'টোর তদন্তে দেরি করছে জৈন্তাপুর থানা পুলিশ! এদিকে, ওই মামলার চার্জশিট থেকে নাম বাদ দিতে এক আসামীর কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে বলে উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে জানিয়েছেন ওই দু'টি মামলাতেই নাম থাকা এক আসামীর নিকট আত্নীয়। যদিও নতুন দায়িত্ব পাওয়া ওই পুলিশ কর্মকর্তা আশরাফুল তা অস্বীকার করেছেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৩ অক্টোবর শুক্রবার ভোর ৪ টা ৩০ মিটিটের দিকে সিলেট সিআইডির পরিদর্শক (ওসি) আব্দুল আওয়াল-এর নেতৃত্বে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় মাদক ও চোরাচালান রোধে অভিযান চালায় সিআইডির একটি টিম। এ সময় সিলেট সিআইডির কর্তব্যরত ওই টিমের উপর অতর্কিত হামলা করে দুর্বৃত্তরা। এতে নাজমুল নামে সিলেট সিআইডির এক উপ-পরিদর্শকের হাত ভেঙ্গে যায় এবং পরিদর্শক আব্দুল আওয়ালসহ বেশ কয়েকজন সিআইডির পুলিশ সদস্য আহত হন। দুর্বৃত্তরা ওই সময়ে সিআইডি পুলিশের একজোড়া হাতকড়াসহ একজন আসামীকেও ছিনিয়ে নেয়।

ঘটনাস্থল থেকে ভারতীয় চাপাতা ভর্তি একটি ডিআই পিকআপ গাড়িসহ আজগর আলী (৩৫) নামে এক দুর্বৃত্তকে আটক করে পুলিশ। এই বিষয়ে সিআইডি পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছেন, যা দীর্ঘ চারমাস যাবত দেখভাল করে আসছে জৈন্তাপুর থানা পুলিশ। এই মামলা দু'টোর ক্ষেত্রে আসামীদের ছিনিয়ে নেয়া পুলিশের একজোড়া হাতকড়া উদ্ধার করা ছাড়া আর কোন সাফল্য নেই জৈন্তাপুর থানা পুলিশের। পুলিশ অভিযান চালিয়ে হাতকড়া উদ্ধার করার কথা গর্বের সহিত বললেও স্থানীয় সূত্র বলছে, কয়েকজন আসামী পুলিশকে ডেকে নিয়ে হাতকড়া ফিরিয়ে দিয়েছেন! এদিকে আসামী গ্রেফতারে দৃশ্যমান তেমন কোন তৎপরতা চোখে না পড়লেও স্থানীয়দের চোখ এড়াতে পারেনি ওসির সাথে আসামীদের সখ্যতা। জৈন্তাপুর বাজারে একাধিক আসামীর সাথে জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলামকে বেশ কয়েকবার কথাবার্তা বলতে দেখেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

সিলেট বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি সুজ্ঞান চাকমা উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে জানান, 'জৈন্তাপুর থানা পুলিশ কেন কোন আসামী গ্রেফতার করতে পারেনি সেটা তারাই ভালো বলতে পারবেন। তিনি আরও জানান, ‘হয়তো তারা সব আসামীর তথ্য নিতে পারেননি তাই দেরি করছেন। তবে, মামলার চার মাস পেরিয়ে গেলেও চার্জশিট না হওয়াটা অস্বাভাবিক।'

সুজ্ঞান চাকমা আরও বলেন, 'সিআইডি পুলিশের করা ওই মামলা দু'টির একজন গুরুত্বপূর্ণ আসামী কোর্টে আত্নসমর্পণ করে জামিন চাইলে, আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন। জৈন্তাপুর থানা পুলিশ (সিআইডি পুলিশের উপর হামলা করা) ওই গুরত্বপূর্ণ আসামীকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত ছিলো, কিন্তু তারা তা করেননি। যা হতাশাজনক।'

এ বিষয়ে জানতে মামলা দু'টির বর্তমান তদন্ত কর্মকতা ও জৈন্তাপুর থানার উপ-পরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে জানান, 'মামলাটির চার্জশিট দেরি হওয়ার কারণ বলা মুশকিল! তবে, আমি মামলার পরিবর্তিত তদন্ত কর্মকতা। এর আগে মামলা দু'টি অন্য আরেকজন অফিসার দেখেছেন। এখন মামলার আসামী শনাক্ত ও ঠিকানা যাচাই বাছাইয়ের কাজ চলছে।'

এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা আশরাফুল আরও জানান, 'কখন তদন্তের কাজ শেষ হবে বা কবে চার্জশিট জমা দিতে পারবো, সেটি বলা কঠিন। তবে, আমার কাজ শেষ হলেই আমি রিপোর্ট জমা দিয়ে দিবো।'

মামলার এক আসামীকে মামলার চার্জশিট থেকে অব্যহতি দিতে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই আশরাফুল তা অস্বীকার করে বলেন, 'এসব বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন।'

সামগ্রিক বিষয়ে কথা বলতে জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলামকে ফোন করলে তিনি ফোন ধরেননি।

(আরআর/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test