E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিত্যক্ত ভবন কীভাবে উধাও হলো জানে না কেউ! 

২০২৪ মার্চ ৩১ ১৭:৫৭:১০
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিত্যক্ত ভবন কীভাবে উধাও হলো জানে না কেউ! 

রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুরের কেন্দুয়ায় দিনেদুপুরে উধাও হয়ে গেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের একটি পরিত্যক্ত ভবন। কে বা কারা এই ভবন ভেঙে নিয়ে গেছে, তা জানে না কেউ। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম খানের নির্দেশে ভাঙা হয়েছে এই ভবন।

জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের বিপরীত পাশে কেন্দুয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের অবস্থান। এমন একটি জনবহুল জায়গা থেকে শুক্রবার দুপুরে উধাও হয়ে গেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিত্যক্ত একটি ভবন। আর কে এই ভবন ভেঙেছে তা জানে না স্বাস্থ্য বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মচারীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শত বছর বয়সী ২৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের এই ভবন ব্যবহৃত হতো দাতব্য চিকিৎসালয় হিসেবে। আর ভবনটিতে ছিলো তিনটি কক্ষ।

রবিবার (৩১ মার্চ) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রধান গেটের পরে হাতের বাম ও ডান পাশে পড়ে রয়েছে কিছু ইটসহ ভবনের ভাঙা কিছু অংশ। এছাড়াও কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রাঙ্গণে দেখা গেছে সেই ভবনের কিছু রড ও একটি ভেকু গাড়ি। কে বা কারা কি কারণে এই ভবন ভেঙেছে এমন প্রশ্নের উত্তর নেই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মচারীদের কাছে।

তবে কেন্দুয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. রিপন রায় বলেন, ‘আমরা বৃহস্পতিবার অফিস শেষ করে চলে যাই। এরপর শনিবার আবারও অফিসে আসলে দেখি যে পরিত্যক্ত ভবনটি কে বা কারা ভেঙে নিয়ে গেছে। পরে আমি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই ও জামালপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করি।’

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশে বসবাসকারী খালেদা বেগম বলেন, ‘আমরা হাসপাতালের পাশে থাকি। শুক্রবার চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খানের লোকজন এসে বেলা ১১ টার দিকে ভবন ভাঙা শুরু করেন। রাত একটা পর্যন্ত ভবন ভাঙার কাজ চলে। আমার ছেলে জিজ্ঞেস করতে গেছে। আমার ছেলেকে আরও মারধর করতে আসছিলো তারা।’

স্থানীয় বাসিন্দা মো. শাহিন বলেন, ‘চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খানের নির্দেশে তার ঘনিষ্ঠ সহকারী সাজু বুলডুজার ও ভেকু দিয়ে ভবনটি ভাঙার কাজ করে। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাইলেও তারা তা দেখায়নি।’

ভবন ভাঙার বিষয়ে কেন্দুয়া বাজার এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই ভবনটি ভাঙাতে আমরা সবাই খুশি। পরিত্যক্ত ভবন ছিলো। শুক্রবার স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে এটি ভাঙা হয়। চেয়ারম্যান সাহেবের নির্দেশে লোকজন এসে এসব ভাংচুর করে।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই ভবনটি এই এলাকার মাদক ব্যবসার একটি কারখানা ছিলো। এই ভবনটি সরানোর জন্য আমি স্বাস্থ্য বিভাগ, উপজেলা প্রশাসনসহ সদর এমপি মহোদয়কে কয়েকবার অবগত করেছিলাম। কে এই ভবন ভেঙেছে তা আমরা জানি না। ভবন ভাঙার পর আমি ভবনের ভাংচুরের অবশিষ্ট অংশটুকুর নিরাপত্তার জন্য বাজারের নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করেছি। আমার পরিষদের সামনে হলেও আমি জানি না কে ভেঙেছে।'

সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. উত্তম কুমার সরকার বলেন, ‘রবিবার দুপুরের দিকে আমি ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। আর এই বিষয়ে জামালপুর সদর থানায় সাধারন ডায়েরি করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আর ভবনের যেটুকু অবশিষ্ট রয়েছে, সেটুকুর জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবির বলেন, ‘স্বাস্থ্য লকেন্দ্রের বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

(আরআর/এসপি/মার্চ ৩১, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test