E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বরগুনায় পুকুর থেকে ধরা পড়লো নিষিদ্ধ সাকার মাছ

২০২৪ এপ্রিল ২১ ২০:২৬:৩৭
বরগুনায় পুকুর থেকে ধরা পড়লো নিষিদ্ধ সাকার মাছ

মোঃ শাজনুস শরীফ, বরগুনা : সাকার মাছের পুরো নাম ‘সাকার মাউথ ক্যাটফিশ’। অ্যাকুরিয়ামে শোভাবর্ধনকারী হিসেবে রাখা হতো বিদেশি-প্রজাতির এই মাছটিকে। তবে মাছটি খাওয়া না যাওয়ায় বর্তমানে দেশের বিভিন্ন ডোবা-নালাসহ বিভিন্ন জলাশয়ে হরহামেশাই দেখা মিলছে এরই ধারাবাহিকতায় বরগুনা সদর উপজেলার ৮ নং সদর ইউনিয়নের পাঠাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন আলহাজ্ব মোঃ লতিফ খানের বাড়ির পুকুর থেকে শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে মাছ ধরার জালে ধরা পরে নিষিদ্ধ এই সাকার মাছ।

সাকার মাছ রাক্ষুসে প্রজাতির না হলেও প্রচুর পরিমাণে খাবার ভক্ষণ করে। এতে দেশীয় প্রজাতির মাছের সঙ্গে খাদ্যের জোগান নিয়ে তীব্র প্রতিযোগিতা হয়। দ্রুত বংশ বিস্তারকারী মাছটি জলজ পোকামাকড় ও শ্যাওলার পাশাপাশি মাছের ডিম ও রেণু খেয়ে মাছের বংশবিস্তারে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তাছাড়া সাকার ফিশের পাখনা খুব ধারালো। ধারালো পাখনার আঘাতে সহজেই অন্য মাছের দেহে ক্ষত তৈরি হয় এবং পরবর্তীতে পচন ধরে সে মাছ গুলো মারা যায়।সাকার মাছের সাথে টিকে থাকতে না পারায় বিলুপ্তির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছের। এই মাছটি খাওয়াও যায় না তাই সর্বোপরি সাকার মাছ জলজ জীববৈচিত্র্য নষ্ট করে।

বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রজাতির সাকার মাছ সাধারনত ১৬-১৮ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। মাছটি পানি ছাড়াই প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত বাঁচতে পারে। তবে দেশে ছড়িয়ে পড়া ক্ষতিকর সাকার মাছ ২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। মানুষ এখন আর চাইলেও মাছটি আমদানি,অ্যাকুয়ারিয়ামে পালন বা বিক্রি কিংবা প্রজনন—কিছুই করতে পারবে না। কেউ এ আইন অমান্য করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চাইলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। এ আইন দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুনুর রশীদ সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ‘সাকার মাউথ ক্যাটফিশ’ মাছটি সহজেই নতুন পরিবেশের সাথে অভিযোজিত হয়ে দ্রুত বংশ বিস্তার করতে সক্ষম। অনেকে শুরুর দিকে অ্যাকুরিয়াম ফিশ হিসেবে পালন করলেও পরবর্তীতে মাছটি বড় হয়ে গেলে তখন পুকুর বা ডোবায় ছেড়ে দেয়। সেখানে মাছটি নতুন পরিবেশে খাপ খেয়ে বংশ বিস্তার শুরু করে। মাছটি খেতে সুস্বাদু না হওয়ায় সাধারণত কেউ মাছটি খায় না এবং বাজারেও মাছটির কোনো চাহিদা নেই। মাছটি ভক্ষণে কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে কিনা সে বিষয়ে এখনো কোনো গবেষণা হয়নি।

তিনি আরো বলেন, এ মাছটি একবার কোনো জলাশয়ে ঢুকে পড়লে এর বিস্তার রোধ করা খুব কঠিন। চাষের পুকুরে এই মাছ ঢুকে পড়লে অন্য মাছের সঙ্গে খাবার ও বাসস্থান নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু করে। এতে করে বাইরে থেকে পর্যাপ্ত খাবার প্রদান করলেও কাঙ্ক্ষিত মাছের উৎপাদন পাওয়া যায় না। অন্যদিকে চাষযোগ্য মাছ সাকার ফিশের সঙ্গে খাবার ও বাসস্থানের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে না। এভাবে মাছ চাষীরা লোকসানের মুখে পড়েন।

(এসএস/এএস/এপ্রিল ২১, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test