শুকিয়ে যাচ্ছে ঝিনাইদহের নদ-নদী

অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : প্রচণ্ড দাবদাহ আর অনাবৃষ্টির কারণে ঝিনাইদহের মাঠ-ঘাট, বিল, জলাশয়, পুকুর ও নদ-নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। ফলে দেখা দিয়েছে গোসল ও সুপেয় পানির সঙ্কট। গ্রামের পুকুরগুলোর মধ্যে শিশু কিশোররা খেলা করে। নদীর বুকে চাষ হচ্ছে ধান। প্রচণ্ড খরতাপে চারিদিকে যেন হা হা কার। এদিকে দখলদারদের আগ্রাসন, পলি জমে ভরাট হওয়াসহ নানা কারণে নদ-নদীগুলোর অস্তিত্ব এখন বিলীন হওয়ার পথে। নদী-নালার তলদেশ শুকিয়ে যাওয়ায় সেখানে এখন ধান, তামাকসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করছেন এলাকার চাষিরা। দেখে মনে হবে নদীর তলদেশ যেন এখন বিস্তীর্ন ফসলি ক্ষেত। এভাবে চলতে থাকলে একসময় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হবে বলছেন পরিবেশবাদীরা।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা ঝিনাইদহের ভেতর দিয়ে নবগঙ্গা, কুমার, বেগবতি, চিত্রা, কপোতাক্ষ, গড়াইসহ বেশকিছু নদ-নদী প্রবাহিত। তবে একমাত্র গড়াই বাদে সবই এখন মৃত। জেলার ৬ উপজেলায় নদ-নদীর সংখ্যা ১২। এসব নদ-নদীর দৈর্ঘ্য ৪৮৪ দশমিক ৯০ কিলোমিটার। এসব নদীগুলো একসময় নদীপাড়ের মানুষদের কৃষিকাজসহ জীবিকার প্রধান মাধ্যম ছিল। নদীতে চলাচল করতো বড় নৌকা ও জাহাজ।
কলকাতার সঙ্গে রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ছিল এ অঞ্চলের জলপথ। কিন্তু কালের বিবর্তনে পাল্টে গেছে চিত্র। এখন আর নদীতে চলে না মালবাহী নৌকা। বর্ষা মৌসুমে কিছুটা পানি থাকলেও শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই শুকিয়ে যায় এসব নদ-নদী। ফলে এখানকার জীববৈচিত্র রয়েছে হুমকির মুখে।
এছাড়া এ নদ-নদীগুলো স্থানীয়রা যে যার মতো দখল করে চাষ করছে। এক শ্রেণির প্রভাবশালী মহল প্রতিনিয়তই নদীপাড়ে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করছে। ফলে সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে নদীর প্রশস্ত। এখানেই শেষ নয়। ময়লা-আবর্জনা ফেলে দূষিত করা হচ্ছে নদীর পানি। ঝিনাইদহ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে নবগঙ্গা নদী। এই নদীকে ঘিরেই জেলার নামকরণ হয়েছিল। কিন্তু খননের অভাবে এর অধিকাংশ জায়গা শুকিয়ে গেছে। কোথাও কিছুটা পানি থাকলেও দু’পাড় দখলে অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে প্রশস্ততা।
জেলা সদরের উদয়পুর গ্রামের নদীর অংশে দেখা যায়, শুকিয়ে যাওয়া নদীর মাঝ দিয়ে যাতায়াতের পথ তৈরি করা হয়েছে। শুকিয়ে যাওয়া নদীর দু’পাড় দখল করে স্থানীয়রা ধানচাষ করেছেন। কেউবা লগিয়েছেন তামাক। অন্যদিকে নদীপাড়ের অবাধে বেড়ে ওঠা ঘাস ব্যবহৃত হচ্ছে গোখাদ্য হিসাবে। অথচ একসময় এ নদীর প্রস্থতা ছিল ৩০০ মিটার। এদিকে চিত্রা নদীর কালীগঞ্জ উপজেলার মধূগঞ্জ বাজার এলাকা, বেগবতী নদীর বিষয়খালী বাজার অংশ, কুমার নদের গাড়াগঞ্জ অংশসহ প্রায় প্রতিটি নদীর ধারেই পড়েছে দখলদারদের থাবা। ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পক্ষ থেকে জেলা শহর সংলগ্ন নবগঙ্গা নদীর কিছু অংশ উচ্ছেদ করা হলেও কয়েকদিন পরেই অদৃশ্য কারণে থেমে যায় সে কার্যক্রম।
পাউবোর তালিকা অনুসারে, এখন বিভিন্ন নদ-নদীতে ৬৯ অবৈধ স্থাপনা রয়েছে তবে বাস্তবে এ সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। এছাড়া ১৯৯৩-১৯৯৪ অর্থ বছরের পর আর খনন করা হয়নি বিদ্যমান নদ-নদীর কোনো অংশ।
সদর উপজেলার উদয়পুর গ্রামের মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম বলেন, কয়েক বছর আগে কিছু লোক এসে নদী মেপেছিল। তখন তারা বলেছিল খনন করা হবে। এরপরে আর কোনো দিন তাদের দেখলাম না।
অপর বাসিন্দা বাবলু মণ্ডল বলেন, মানুষ যে যার মতো পারছে সীমানা মেপে দখল করে নিচ্ছে। কেউ ধান লাগাচ্ছে, কেউ অন্য চাষ করছে।
জেলা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিটির জেলা সভাপতি মাসুদ আহমেদ সনজু বলেন, পরিবেশ-নদী-পানি-প্রাণী একে-অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এর কোনটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে অপরটির ওপর প্রভাব পড়ে। ফলে পরিবেশের সার্বিক ভারসাম্য নষ্ট হয়।
তিনি আরো বলেন, আমরা দেখতে পারছি বর্তমান সময়ে নদী পাড়ের বাসিন্দারাই বেশি দখল উৎসবে মেতে উঠছে। তৈরি করছে স্থাপনা। খননের অভাবে ভরাট হয়ে গেছে নদী। এতে পানির অন্যতম উৎস নদ-নদী, জলাশয় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ধারণা করা হয়, বর্তমান সময়ে পানি সঙ্কটের অন্যতম কারণ জলাশয় নষ্ট হওয়া। এছাড়া নদীকে ঘিরে বেচে থাকা অনেক প্রাণী যেমন কমেছে, তেমনি কমেছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য অবশ্যই নদী দখল মুক্ত করতে হবে। সঙ্গে খনন করে নাব্যতা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। এছাড়া নদীর যে উৎস্য মুখগুলো আছে সেগুলো পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে বলে জানান তিনি।
ঝিনাইদহ পাউবো উপ-সহকারী প্রকৌশলী মহসিন রেজা বলেন, নদ-নদীগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট খননের বিষয়ে বোর্ডে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। সেগুলো অনুমোদন হলেই কাজ শুরু করা হবে। আর দখলদার উচ্ছেদ কাজ সামনের দিনগুলোতে পর্যায়ক্রমে শুরু হবে।
(একে/এসপি/এপ্রিল ২৪, ২০২৪)
পাঠকের মতামত:
- গোলমরিচ ও তেজপাতার গল্প
- বাল্যবিয়ে বন্ধ করে মেয়ের পিতাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা
- কাজ না করেই জালিয়াতির মাধ্যমে প্রকল্পের বিল উত্তোলন
- ঈদের ছুটিতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা
- কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বিলিন বাড়িঘর আবাদিজমিসহ কমিউনিটি ক্লিনিক
- নাটোরে অবৈধ পুকুর খননে ব্যবহৃত ৪০টি ট্রাক্টর জব্দ করেছে সেনাবাহিনী
- ৩১ দফা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে কাপাসিয়ায় বিএনপির প্রস্ততি সভা
- কাপাসিয়ার আনারস চাষে লাভবান কৃষকরা
- ‘এই যন্ত্রণা ভাষায় প্রকাশ সম্ভব নয়’
- চাটমোহরে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ায় ২ জনকে জরিমানা, অতিরিক্ত ভাড়া ফেরত পেলেন যাত্রীরা
- নড়াইলে ট্রলি ও ইজিবাইকের সংঘর্ষে স্বামী-স্ত্রী নিহত
- নড়াইলের কালিয়ায় মাদক কারবারি চক্রের মহিলা সদস্যসহ গ্রেফতার ২
- মে মাসে সড়কে ঝরেছে ৬১৪ প্রাণ
- ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকটি গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেবে অনাদিকাল পর্যন্ত
- দুই সহকর্মীর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে কাপ্তাইয়ে ছুটে আসেন দীপেন তালুকদার দীপু
- বরবাদ-তাণ্ডবের মতো সিনেমা দেখেই নৃশংস ঘটনা ঘটাচ্ছে নতুন জেনারেশন
- ক্লাব বিশ্বকাপের জন্য স্কোয়াড ঘোষণা চেলসি-ম্যানসিটির
- নড়াইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ, ৩ নেতাকে শোকজ
- ‘মনোনয়ন পেতে নড়াইলে অতিথি পাখির আনাগোনা বেড়ে যায়’
- প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও আদালত এলাকায় সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা
- সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হলেন কেশবপুরের কৃতি সন্তান অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন
- ‘বিদেশে সম্পদ পাচারে অভিযুক্ত ধনকুবেরদের সঙ্গে সমঝোতার কথা ভাবছে বাংলাদেশ’
- উত্যক্তকরণ ও হয়রানি বন্ধে প্রয়োজন পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা
- দেশজুড়ে টানা বৃষ্টির ইঙ্গিত
- দিল্লিতে হঠাৎ রেড অ্যালার্ট জারি
- জামালপুর হানাদার মুক্ত দিবস পালিত
- রাজাকার সাঈদীর মরদেহ পাকিস্তানে পাঠানোর দাবি
- নানামুখী চাপে অন্তর্বর্তী সরকার
- এই শীতে ঘুরে আসুন শ্রীমঙ্গল
- শৈলকূপায় জাল সার্টিফিকেটে একযুগ চাকরি করে যাচ্ছেন এক শিক্ষিকা!
- প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্রেটদের ভরাডুবি, ভাগ্য ঝুলছে সিনেটে
- সোনাগাজীতে গাছসহ গাঁজা চাষী গ্রেফতার
- স্যামসাং নিয়ে এলো আকর্ষণীয় ‘বিবাহ উৎসব’ অফার
- নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার পক্ষে প্রচারণায় সংসদ সদস্যের দুই ভাই, জনপ্রতিনিধিদের চাপ প্রয়োগ
- ঝালকাঠিতে সড়কে ঝরল ১৪ প্রাণ
- লক্ষ্মীপুর কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদির মৃত্যু
- তামাক নিয়ন্ত্রণে জাতীয় সম্মাননায় মনোনিত হয়েছেন রাজবাড়ীর ডিসি সুলতানা আক্তার
- শিবচরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে
- পঞ্চগড় মুক্তাঞ্চল: নৈসর্গিক প্রকৃতির রূপসী কন্যা
- জিয়া সেদিন বঙ্গবন্ধুকে কথা দিয়েছিলেন, 'স্যার, আমার বুক বিদ্ধ না করে বুলেট আপনার গায়ে লাগতে পারবে না'
- মেজর সিনহা হত্যা, হাইকোর্টের রায় ২ জুন
- ‘জুলাই-৩৬’ স্মৃতিফলক নির্মাণ কাজের উদ্বোধন
- ‘মাতৃভাষায় যার ভক্তি নাই সে মানুষ নহে’
- ‘নির্বাচন হতে পারে ডিসেম্বরেই, তবে জুনের পর নয়’
- তরুণরা ভোটাধিকার হরণের মুখে দাঁড়িয়ে আছে