E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কানাইপুরের মধুমতি ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতি চেষ্টার অভিযোগ

২০২৪ এপ্রিল ২৮ ২০:৪৪:১৪
কানাইপুরের মধুমতি ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতি চেষ্টার অভিযোগ

রিয়াজুল রিয়াজ, বিশেষ প্রতিনিধি : ফরিদপুর কানাইপুরে মধুমতি ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের বিরুদ্ধে এক কাস্টমারের চেক জালিয়াতি চেষ্টার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। নয়ন চন্দ্র রায় নামের ওই কারখানা শ্রমিক ওই ব্যাংকের নতুন ব্যাংক একাউন্ড হোল্ডার। 

অভিযোগ উঠেছে, ওই কাস্টমারকে চেক হস্তান্তরের সময় সাক্ষর নিয়ে তিনটি চেক এর পাতা রেখে দেয়বমধুমতি ব্যাংক লিমিটেড কানাইপুর শাখার কয়েক কর্মকর্তা। ওই কাস্টমার মধুমতি ব্যাংকে রেখে আসা তার চেক জালিয়াতি হতে পারে; এমন আশংকায় ব্যাংকে গিয়ে চেক এর পাতা তিনটি ফেরত চান। কিন্তু ম্যানেজার জানায় মো: জাহিদুল ইসলাম নামের ওই ব্যাংকের আরেক পুরাতন একাউন্ট হোল্ডার তাদের এই তিনটি চেক-এর পাতা নয়নের থেকে সই করে রাখতে বলেছেন। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। তিনি জানান, জাহিদ সাহেব না আসলে ওই চেক এর পাতা দেয়া হবেনা।

ওই সময় ব্যাংকে নতুন একাউন্ট করতে যাওয়া মোস্তফা নামের এক কাস্টোমার ঘটনাটির তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করে প্রশ্ন তোলেন, 'কোন কাস্টমার একাউন্ট করতে আসলে, তার চেক বই সই করে রাখার কোন এখতিয়ার ব্যাংকের কোন কর্মকর্তা রাখেন কিনা? এ কথার কোন উপযুক্ত জবাব দিতে ব্যর্থ হয়ে এবং চেক ফেরত না দিয়ে ওই ব্যাংকের ম্যানেজারের নির্দেশে ওই শাখার এক মহিলা কর্মকর্তা জৈনিক পুরানো একাউন্ট হোল্ডার মো. জাহিদুল ইসলামকে ফোন করে ঘটনা জানান এবং মধুমতি ব্যাংক কানাইপুর শাখায় আসতে বলেন। জাহিদ আসলে ওই কাস্টমারের চেক ও কাস্টমার নয়নকে জাহিদের কাছে হস্তান্তর করেন ব্যাংক ম্যানেজার মো. রজিবুল ইসলাম। পরে সবাইকে ব্যাংক থেকে বাইরে যেতে বলেন।

এদিকে সবাই নিচে নামলে জাহিদের লোকজন ব্যবসায়ী মোস্তফাকে আক্রমণ করে আহত করে। বর্তমানে মোস্তফা চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েন তার এক আত্নীয়। ভুক্তভোগী কাস্টমার (শ্রমিক) নয়ন চন্দ্র রায় জানান, 'আমি কোনদিন ব্যাংকে একাউন্ট করিনি। এই প্রথম একাউন্ট আমার। আমি নিয়ম কানুন কিছুই জানি না। আমি একাউন্ট করার পর চেক আসলে ব্যাংক থেকে ফোন পেয়ে আমার চেক আনতে যাই। তখন ব্যাংক ম্যানেজারের নির্দেশক্রমে এক মহিলা কর্মকর্তা আমাকে চেক নেওয়ার সময় একটি নীল পাতা ওয়ালা খাতায় সাক্ষর নিয়ে চেক দেয়। পরে তিনটা চেক এর পাতায়- সামনে ১টি ও পিছনের পাতায় ২টি মোট তিনটি করিয়ে চেক তিনটি রেখে দেন। আমি পরে এ বিষয়ে কিছু মানুষের সাথে আলাপ করলে তারা আমাকে বোকা সম্বোধন করে চেকের পাতাগুলো ব্যাংক থেকে নিয়ে আসতে বলেন। আমি রবিবার সকালে ব্যাংকে যাই কিন্তু আমাকে ব্যাংক চেকগুলো ফেরত না দিয়ে মো. জাহিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করে'।

এ বিষয়ে কানাইপুর মধুমতি ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার রজিবুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে জানান, 'দেখেন জাহিদ নামের এক একাউন্ট হোল্ডার নয়ন চন্দ্র রায়কে একাউন্ট করাতে নিয়ে আসেন, একাউন্ট করিয়ে, তিনি ওই কাস্টমারের চেক আসলে, তিনটি চেক সই করিয়ে রেখে দিতে বলেন, আমি তাই করেছি।'

এক প্রশ্নের জবাবে ওই ম্যানেজার আরও বলেন, 'দেখেন ভাই কাস্টমারদের সাথে সম্পর্ক হলে অনেক কিছুই নিয়ম কানুনের বাইরে গিয়েও করতে হয়'। অভিযোগ আছে এই ব্রাঞ্চ ম্যানেজার কাস্টমারদের সাথে যার সম্পর্ক ভালো তার জন্য তিনি সবই করতে পারেন। কিন্তু একটি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানে এমনটি হওয়ার সুযোগ আছে কি? তবে কাস্টমার সিকিউরিটি বা গোপনীয়তা রক্ষায় ওই কাজ ঠিক নয় বলেও স্বীকার করেন মধুমতি ব্যাংকের ফরিদপুরের কানাইপুর শাখার ওই ব্রাঞ্চ ম্যানেজার রজিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, ভাই কিছু লেইখেন না। ব্রাঞ্চ এসে এক কাপ চা খেয়ে যান।'

এ বিষয়ে মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, নয়নের কাছে আমি টাকা পাইতাম। তাই চেক রেখেছি।'
উক্ত বিষয়ে আহত ব্যবসায়ী মোস্তফা বলেন, আমি একাউন্ট করতে গিয়েছিলাম। তখন উনাদের কথা শুনে আমি আমার ফোনের ক্যামেরা অন করে ওনাদের সাথে কথা বলি। আমি জিজ্ঞেস করেছি, আপনি একজনের একাউন্টের চেক আরেক জনকে দিতে পারেন কিনা? তিনি কোন জবাব না দিয়ে জাহিদকে ফোন দিলেন। আমাকে আর ভুক্তভোগীকে বাইরে বের করে দিলেন তারা। আমি একাউন্ট না করে ফিরে এলাম। আমি বাইরে এসে জাহিদ ও তার লোকজনের খিল ঘুষি ও তাদের হাতে থাকা লোহার রড দ্বারা এলোপাতাড়ি মাইর খেলাম। আপনাকে ভিডিও পাঠিয়ে দিচ্ছি, আপনি দেখে নেন। ওখানে সব আছে, আমি হাসপাতালে যাচ্ছি'। উক্ত বিষয়ে, আহত ব্যবসায়ী মোস্তফা ফরিদপুরের কোতয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।


(আরআর/এএস/এপ্রিল ২৮, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test