E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জর্ডান প্রবাসী এক নারীকে এলোপাতাড়ী কুপিয়ে জখম

২০২৪ এপ্রিল ৩০ ২০:৫৫:০৯
জর্ডান প্রবাসী এক নারীকে এলোপাতাড়ী কুপিয়ে জখম

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : জর্ডান প্রবাসী এক নারীকে এলোপাতাড়ী কুপিয়ে জখম করেছে এক দুর্বৃত্ত। সোমবার শেষ রাতে এ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে। মুমুর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন ওই নারী। আহত ওই নারীর চিৎকারে আশে পাশের স্বজনরা তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে প্রথমে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশংকাজনক দেখে মঙ্গলবার সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন।

প্রবাসী ওই নারীর নাম মর্জিনা। হাপতালে ডায়রিতে তার বয়স ৩৫ বছর। স্বামী স্বপন মিয়ার সাথে বনিবনা না হওয়ায় ৩ মাস আগে স্বামীকে ডিভোর্স দেন তিনি। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের ছিলিমপুর গ্রামের উত্তরপার্শ্বে একটি বেসরকারী মাদ্রাসা সংলগ্ন ১২ লাখ টাকা দিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ জমি খরিদ করেন। কেন্দুয়া পৌর এলাকার কমলপুর মহল্লার বাসিন্দা তার বড় ভগ্নিপতি রিক্সাচালক ইসলাম উদ্দিনের বাড়িতে থেকে একটি টিনের চালাঘর তৈরির কাজ শেষ করেন। ১০/১২ দিন ধরে ওই ঘরে তিনি বসবাস করতে শুরু করেন।

মর্জিনার বড় বোন আসমা আক্তার জানান, সোমবার রাতে মর্জিনা এই ঘরে একাই ছিলেন। শেষ রাতে যখন আযান শোনা হচ্ছিল। তখন ঘরের দরজা কেটে এক অচেনা ব্যক্তি মর্জিনার ঘরে প্রবেশ করে।

মর্জিনা আমাকে জানায় তাকে ঝাপটে ধরার পর সে যখন চিৎকার করে। তখন ওই ব্যক্তি তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে দৌড়ে পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় মর্জিনা দৌড়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। প্রতিবেশীর বাড়ির সেলিম মিয়ার মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে আমরা মর্জিনাকে আদমপুর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে থানায় পুলিশকে দেখাইয়া ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি।

আসমা আরও বলেন, যে লোকটি আমার বোনকে কুপিয়ে জখম করেছে সে কোন টাকা পয়সা নেয়নি। একটা বড় টাচ ফোন ছিল এটাও নেয়নি। কি কারণে মেরেছে বা কে মেরেছে তা কিছুই বলতে পারেননি আসমা। তবে মর্জিনা তাকে জানিয়েছেন কয়েকদিন আগেও তার তালাক দেওয়া স্বামী স্বপন মিয়া মোবাইলে খারাপ কথা লিখে মেসেজ পাঠাইছে। এছাড়া একটি ছোট কাগজে বন্ধু হওয়ার জন্য একটি চিঠি লিখে কে বা কারা ফেলে রেখে গেছে। তবে ওই চিঠিতে কোন নাম নেই। ঘটনার পর আমার বোন আমার কাছে নগদ ২৫ হাজার টাকা ও একটি ট্রাচ ফোন বুঝিয়ে দিয়েছে।

মর্জিনার বাবার বাড়ি কেন্দুয়া উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নের মোজাফরপুর গ্রামে। কয়েক বছর আগে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে স্বপন মিয়ার সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ২ ছেলে ও ১ কন্যা সন্তানের মা হন মর্জিনা। তবে বিদেশ থাকাবস্থায় স্বামীর ঘন ঘন আবদার পূরণ করতে না পারায় এবং স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় বোন আসমা আক্তাররের মাধ্যমে টাকা জমিয়ে কেন্দুয়া উপজেলা সাড়ে ৭ শতাংশ জমি ক্রয় করেন তিনি। ডিভোর্সের পর স্বামী স্বপন মিয়ার সাথে ২ ছেলে সন্তান থাকে এবং কন্যা সন্তানটি থাকে তার নানার বাড়ি মোজাফরপুর গ্রামে।

খবর পেয়ে কেন্দুয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ ফারাবি কেন্দুয়া থানার ওসি মোঃ এনামুল হক পিপিএমকে সাথে নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। জানতে চাইলে, সহকারী পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ ফারাবি জানান, প্রবাসী ওই নারী টিনের একটি চালা ঘরে একাই থাকতেন। তবে তাকে কেন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বা কে করেছে তা এখনও জানা যাইনি। তবে হামলার সময় হামলাকারী কোন টাকা পয়সা বা মোবাইল ফোন নেয়নি। তিনি বলেন, রহস্য উদঘাটনে পুলিশের তদন্ত টিম মাঠে নেমেছে। প্রবাসী আহত ওই নারী চিকিৎসার পর সুস্থ্য হলে তাকে জিজ্ঞানাবাদের পর প্রকৃত তথ্য বেড়িয়ে আসবে। ছিলিমপুর উত্তরপাড়ার গ্রামের পঞ্চশোর্ধ্ব ব্যক্তি আবুল হাসেম খান বলেন, ঘটনাটি শুনে খুব কষ্ট পেয়েছি। ওই মহিলা কেন একা একা থাকতেন, আবার কেনই বা তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এটি বের করে বিচার হওয়া দরকার।

(এসবিএস/এএস/এপ্রিল ৩০, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test