E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিদ্যুৎস্পর্শে নয়, শিশু মাইশাকে গলাটিপে হত্যা করেন মা 

২০২৪ মে ০৬ ১৫:৩১:১৯
বিদ্যুৎস্পর্শে নয়, শিশু মাইশাকে গলাটিপে হত্যা করেন মা 

শেখ লিটন, চুয়াডাঙ্গা : আলমডাঙ্গার ভোগাইলবগাদি গ্রামের শিশু মাইশা খাতুন (৭ বছর) বিদ্যুৎ স্পর্শে মারা যায়নি। তাকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ। ময়না তদন্তের মাধ্যমে এ রহস্য উন্মোচন হয়েছে। মাইশাকে অন্য কেউ নয়, তার নিজের মা তাকে গলা টিপে হত্যা করে। ঘাতক মা পপি খাতুনকে (২৫) পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। পপি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।

আজ সোমবার সকালে চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান এসব তথ্য সাংবাদিকদের জানান।

তিনি জানান, শিশু মাইশা তার মায়ের সাথে আলমডাঙ্গার ভোগাইলবগাদী গ্রামে বসবাস করতো। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টার দিকে মাইশার মা পপি খাতুনের চিৎকারে প্রতিবেশিরা ছুটে আসে। সেসময় মাইশার গলায় মোবাইলফোনের চার্জারের তার জড়ানো ছিল। পপি প্রতিবেশিদের জানায়, তার মেয়ে মাইশা বিদ্যুত স্পর্শে মারা গেছে। প্রতিবেশিরা মাইশাকে দ্রুত নিয়ে যায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মাইশা মারা গেছে বলে জানান। পাশাপাশি চিকিৎসকরা নিহত মাইশার গলায় দাগ থাকার কথাও পুলিশকে বলেন।

পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে।ময়না তদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, নিহত মাইশা খাতুন বিদ্যুত স্পর্শে মারা যায়নি। তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশ নিহতের পরিবারকে জানালে মাইশার নানা ভোগাইলবগাদী গ্রামের মৃত নূর হোসেনের ছেলে শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে গত ৩ মে আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়।

পুলিশ সুপার জানান, মাইশাকে তার মা পপি খাতুন গলা টিপে হত্যা করেছে। গত ৫ মে পপি খাতুনকে আলমডাঙ্গার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জহুরা বেগমের আদালতে হাজির হয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। পুলিশ পপি খাতুনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।

পুলিশ সুপার জানান, পপি খাতুনের বিয়ে হয়েছিল কুষ্টিয়া জেলার মীরপুর থানার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের সাইফুল ইসলামের সাথে। স্বামীর সাথে দাম্পত্য কলহের কারণে আগেই তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছিল এবং পপি খাতুন তার মেয়ে মাইশাকে নিয়ে নিজের বাবার বাড়ি আলমডাঙ্গার ভোগাইলবগাদী গ্রামে বসবাস করছিল।

পপি খাতুন পুলিশের কাছে মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করে বলে, মেয়ে মাইশা নাবালিকা। তার বাবা হয়তো আরেকটি বিয়ে করবো। পপিরও অন্য জায়গায় বিয়ে হতে পারে। তখন মাইশাকে দেখার কেউ থাকবে না। মাইশার জীবন কাটবে কষ্টে। প্রতিবেশিদের একটি মেয়েকে এভাবে বড় হতে দেখেছে পপি। এসব চিন্তাভাবনা করে মা পপি খাতুন মেয়ে মাইশাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বলে পপি পুলিশকে জানিয়েছে।

(এসএল/এসপি/মে ০৬, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test