E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রতারণা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইষ্টম দাস জামিনে মুক্ত

২০২৪ মে ০৯ ১৯:৩১:২২
প্রতারণা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইষ্টম দাস জামিনে মুক্ত

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : চাকুরি দেওয়ার নামে নেওয়া ১০ লাখ টাকা প্রতারণার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাতক্ষীরার তালা থানাধীন ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইষ্টম দাস জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। গত বুধবার বিকেলে তিনি সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান।
গ্রেপ্তারকৃত ইষ্টম দাস তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের নগেন্দ্রনাথ দাসের ছেলে।

এদিকে জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়ি আসার পরপরই ইস্টম দাস তারই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সুভাষ দাসকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে ইষ্টম দাসের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

দাদপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে আজাহারুল ইসলামের দায়েরকৃত মামলা থেকে জানা গেছে, ভাই মনিরুল ইসলামকে দাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী পদে তিন মাসের মধ্যে চাকরি পাইয়ে দেওয়র নাম করে ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর তাদের বাড়িতে এসে কয়েকজনের উপস্থিতিতে ১০ লাখ টাকা নিয়ে যান ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইষ্টম দাস। তিন মাস হয়ে যাওয়ার পর চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরৎ চান তিনি(আজাহারুল)। একপর্যায়ে ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর ইষ্টম দাস তাকে সোনালী ব্যাংকের তালা শাখার ১০ লাখ টাকার একটি চেক(২২১৭৭৩৫০) দেন। হিসাব নম্বরে টাকা না থাকায় ২০২১ সালের ২১ অক্টোবর চেকটি ডিজঅনার করা হয়। ওই বছরের ২ নভেম্বর ইস্টম দাসকে লিগ্যাল নোটিশ করা হয়। ৭ নভেম্বর তিনি নোটিশ গ্রহণ করেন একপর্যায়ে তিনি (আজাহারুল) বাদি হয়ে ২০২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর সাতক্ষীরার আমলী আদালত -৩ এ একটি চেক ডিজঅনারের মামলা করে ইষ্টম দাসের বিরুদ্ধে।

আদালত সমন জারি করলে একই এলাকার বিরিঞ্চি দাসের ছেলে ভবেন দাস জামিনদার হিসেবে বণ্ডে স্বাক্ষর করলে ইস্টম দাস জামিনে মুক্তি পান। বিচার শেষে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি ইষ্টম দাস আদালতের কাঠগড়ায় অনুপস্থিত থাকাকালিন জেলা যুগ্ম জজ প্রথম আদালতের বিচারক বেল্লাল হোসেন তাকে ওই টাকা ফেরৎ দেওয়ার নির্দেশসহ দুই মাসের কারাদ-াদেশ দেন। এরপর থেকে ইষ্টম দাস আত্মগোপনে ছিলেন। গত ৯ এপ্রিল রাতে নিজ বাড়ির ছাদ থেকে গাছ বেয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ইষ্টম দাসকে গ্রেপ্তার করে পরদিন আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায়।

সাতক্ষীরার যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালত সূত্রে জানা গেছে, কারাগারে থাকাকালিন তার পরিবারের সদস্যরা ৮০৯(১) নং ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখায় জরিমানার অর্ধেক পাঁচ লাখ টাকা জমা দেন। একই দিনে ইস্টম দাসের পক্ষে আইনজীবী অ্যাড. অসীম কুমার দাস আগামি ১০ জুনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করার শর্তে জামিন আবেদন করলে আদালত দুই হাজার টাকা বণ্ডে মঞ্জুর করেন। জামিননামায় জামিনদার হিসেবে সাক্ষর করেন বহুল আলোচিত তালা উপজেলার ফতেপুর গ্রামের প্রদীপ দাসের ছেলে আকাশ দাস।

সাতক্ষীরা জজ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. শাহানেওয়াজ জানান, ১০ লাখ টাকার চেক ডিজঅনারের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী ইস্টম দাস জরিমানার অর্ধেক টাকা জমা দিয়ে বুধবার জামিন মুক্তি পেয়েছেন।

সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে ইয়াসমিন করিমী বৃহষ্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, চেক ডিজঅনারের মামলায় দুই মাসের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পুলিশ গত ১০ এপ্রিল ইস্টম দাসকে জেলা কারাগারে পাঠানোয় ও প্রায় মাস তিনি ২৯ দিন কারাভোগ করেছেন। তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, নুরুল্লাহপুর গ্রামের শিক্ষক সুভাষ দাসের মেয়ে রমা দাসকে সহকারি শিক্ষক হিসেবে চাকুরি দেওয়ার নামে এক লাখ টাকা প্রতারণা, হাতবাস গ্রামের আব্দুর বারীর ছেলেকে জেল পুলিশে চাকুরি দেওয়ার নামে ১৫ লাখ টাকাসহ কমপক্ষে দেড় ডজন ব্যক্তিকে বিভিন্ন সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে ইস্টম দাস পৌনে দুই কোটি টাকা প্রতারণা করেছেন মর্মে দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা গেছে। এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে আটটি মামলা হয়েছে আদালতে।

(আরকে/এসপি/মে ০৯, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test