E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সাতক্ষীরায় বৈষম্যবিরোধী পুলিশ সার্ভিসের বিবৃতি ও ১২ দফা দাবিতে কর্মবিরতি

২০২৪ আগস্ট ০৬ ২০:০৭:১৭
সাতক্ষীরায় বৈষম্যবিরোধী পুলিশ সার্ভিসের বিবৃতি ও ১২ দফা দাবিতে কর্মবিরতি

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : মঙ্গলবার নিজেদের দায়িত্ব নিয়ে উদ্ভুত সমস্যা সম্পর্কে সাতক্ষীরার বৈষম্য বিরোধী পুলিশ সার্ভিস এর বিবৃতি ও ১২ দফা দাবিতে কর্মবিরতির দাবি করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয় যে, যে সব মুক্তিকামি ছাত্র-জনতা মুক্তিকামী বাঙালি জাতি কে আবারও স্বৈরাচারীর শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদন করিয়েছেন তাদেরকে শুভেচ্ছা। যারা স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে মারা গেছেন তাদেরকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়।

ছাত্র-জনতার স্বাধীনতার সাথে সাথে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীও আজ দলীয় দোসরদের হাত থেকে স্বাধীন হয়েছে।পুলিশ বাহিনীর ৯০ শতাংশ লোক শুরু থেকেই ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে ছিল বলে দাবি করা হয়।

কিন্তু পুলিশের কিছু সরকার দলীয় দালালদের কারণে আমরা ছাত্র জনতার পক্ষে অবস্থান নিতে পারিনি এবং এসব পুলিশ অফিসারকে এদেশের মানুষ নাম ধরে চেনে। এরা সরকারের দালালি করে কে কত আগে পদোন্নতি পাবে, কোথায় ভালো পোস্টিং পাবে এর জন্য সব সময় দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতো এবং সরকারের আস্থাভাজন হয়ে আমাদের মতো অধঃস্তনদের উপর কর্তব্যের আড়ালে মানসিক নির্যাতন করতো।এচিভমেন্টের নামে আমাদেরকে জোর করে মামলা ও গ্রেপ্তারের সংখ্যা বাড়াতে বলতো যার ফলশ্রুতি আজকের এই জনবিস্ফোরণ।

এছাড়া সরকারের পক্ষাবলম্বন করে বিরোধী দলীয় লোকদের উপর নির্যাতনের আদেশ দিতো যা আসতো সরকারের উর্ধ্বতন মহল থেকে আমাদের সিনিয়রদের কাছে।তারা সেটা আমাদের দিয়েই বাস্তবায়ন করাতো।

জ্যেষ্ঠ অর্থাৎ এএসপি থেকে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আমাদের কে চাকরিচ্যুত করা, পার্বত্য ও দূর্গম জেলায় পোস্টিং করানোসহ বিভিন্ন ভয় দেখিয়ে জোর করে ছাত্র জনতাকে প্রতিহত করতে আদেশ দেয় আমাদের তীব্র অনিচ্ছা স্বত্বেও।এই পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের চাকরি ও পরিবারের কথা চিন্তা করে কাজে নিয়োজিত হই।কিন্তু আমরাও তো কারো বাবা, মা, সন্তান, ভাই,বোন,চাচা,মামা।তাই আমাদের ৯০ শতাংশ পুলিশ ছাত্র জনতার দাবীর সাথে শুরুতেই একাত্মতা ঘোষণা করে।বাকি ১০ শতাংশ জ্যেষ্ঠদের তাবেদারি করে এবং জ্যেষ্ঠ ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের সাথে মিশে দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য নিরীহ ছাত্র-জনতার উপর গুলি বর্ষণ করে যা খুবই মর্মান্তিক ও দুঃখজনক।মুষ্টিমেয় পুলিশের এই অংশের সাথে মূলধারার বাংলাদেশ পুলিশের কোন সম্পর্ক নেই।পরবর্তীতে পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকলে আমাদের উল্লেখ্য সিনিয়ররা আমাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।এমতাবস্থায় সংস্কারমূলক নিম্মোক্ত দাবি জানানো হয়।

কর্মবিরতির দাবি হলো,আমরা দলীয় ক্যাডার বাহিনীর মতো ব্যবহারকারী জ্যেষ্ঠদের অধীনে থেকে ছাত্র জনতার বিপক্ষে গিয়ে ভবিষ্যতে কোন কর্মে নিয়োজিত হতে না চাওয়া, প্রকুত জনস্বার্থে যেন কাজ করতে পারি সেরকম একটি নিরাপদ ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা, এস আই/সার্জেন্ট নিয়োগ ও বর্তমান নিয়ন্ত্রণ আলাদা কোন ভিন্ন একটি নিরপেক্ষ ও সাংবিধানিক সংস্থা যেমন পিএসসি’র অধীনে থাকতে হবে অথবা তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে হতে হবে।নিয়োগ ও পোস্টিং বানিজ্য বন্ধ করতে হবে। কন্সটেবল নিয়োগ হতে হবে সচ্ছতা ও মেধার ভিত্তিতে এবং কন্সটেবল হতে অতি:আইজিপি পর্যন্ত পদোন্নতি, বদলি, ছুটি সবকিছু শুধুমাত্র আইজিপির অধীনে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে হতে হবে। পুলিশের ডিউটির কর্মঘণ্টা হতে হবে আন্তজার্তিক আইন অনুযায়ী ৮ ঘন্টা এবং প্রয়োজনে ৮ ঘন্টার বেশি ডিউটি হলে ওভারটাইম প্রদান করতে হবে। সব হত্যাকাণ্ডে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং বিচার দ্রুততম সময়ের মধ্যে করতে হবে। পুলিশ বাহিনীকে যেন আর রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করে সাধারণ জনগণের বিপক্ষে না দাঁড় করানো হয় এই জন্য প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন করতে হবে। পুলিশ বিভাগকে পরিচালনা করার জন্য আলাদা একটি মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে। পুলিশ বিভাগ বা মন্ত্রণালয় কে নির্বাহী বিভাগ হতে সম্পূর্ণ হস্তক্ষেপ মুক্ত স্বাধীন বিভাগ হতে হবে।

পুলিশের আইজিপি নিয়োগ করতে হবে একটি স্বাধীন কমিশনের মাধ্যমে যারা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্তভাবে যোগ্যতার ভিত্তিতে আইজিপি নিয়োগ দিবে। এএস প নিয়োগের ক্ষেত্রে মোট পদের ৫০% নিয়োগ হতে হবে পদোন্নতির মাধ্যমে এবং বাকি ৫০% নিয়োগ হতে হবে সরাসরি। এক্ষেত্রে বৈষম্য বিলোপ করতে হবে। এছাড়া আরো দাবি দাওয়া উদ্ভব হলে তা আলোচনা সাপেক্ষে সংযোজন করা হবে।

(আরকে/এএস/আগস্ট ০৬, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test