E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

যশোরে ভুয়া নার্স নির্মূলে স্বাস্থ্য বিভাগের অভিযান

২০২৪ আগস্ট ২৭ ১৮:৪৯:৪০
যশোরে ভুয়া নার্স নির্মূলে স্বাস্থ্য বিভাগের অভিযান

স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যশোর : যশোর শহরের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে অভিযান পরিচালনা করেছে জেলা সিভিল সার্জন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নার্সিং ও মিডিওয়াইফ এর শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও স্মারক লিপির প্রেক্ষিতে এই অভিযান করা হয়েছে। মূলত বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে অনিবন্ধিত নার্স ও মিডওয়াইফ নির্মূলে স্বাস্থ্য বিভাগের কার্যত কোনো পদক্ষেপ না থাকার কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভূয়া নার্স ও মিডিওয়াইফ দমনের দাবি করে আসছিলেন। 

আজ মঙ্গলবার সকালে স্বাস্থ্য বিভাগ ও শিক্ষার্থীদের একটি টিম শহরের দুটি ক্লিনিকে অভিযান পরিচালনা করেন। তারা প্রথমেই শহরের দড়াটানা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান। সেখানে দায়িত্বরত ৩ জন ডিপ্লোমা নার্স কর্মরত দেখতে পান। ওই তিন জনের মধ্যে একজনেরও কাগজপত্র সঠিক পাওয়া যায়নি। এ সময় স্বাস্থ্য বিভাগ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পর্যাপ্ত ডিপ্লোমা নার্স নিয়োগের নির্দেশ দেন। এ নির্দেশ মানা না হলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারিও দেওয়া হয়।

পরে একতা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক কমঃ(প্রাঃ) লিঃ এ অভিযান পরিচালনা করা হলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ২২ জন নার্স আছে দাবি করেন। তবে এদের মধ্যে ৬ জন ডিপ্লোমা নার্স কর্মরর্ত আছেন বলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানান। এ কারণে এ প্রতিষ্ঠানে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পর্যাপ্ত ডিপ্লোমা নার্স নিয়োগ দিতে বলা হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছেন জেলার সিভিল সার্জন ডাক্তার মাহমুদুল হাসান।

এই অভিযান পরিচালনার সময় জেলা সিভিল সার্জন মাহমুদুল হাসানের সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোঃ নাজমুস সাদিক, মেডিকেল অফিসার(সিএস) ডা: রেহেনেওয়াজ ও নাসিং ও মিডিওয়াইড কলেজের বৈষ্য বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের একটি টিম। তবে অভিযান পরিচালনার সময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনির সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়নি।

যশোর নার্সিং ও মিডিওফাইড কলেজের শিক্ষার্থী বিপ্লব আলী, সুরাইয়া বিনতে ও হাসিব হোসেন বলেন, সিভিল সার্জন অফিসে স্মারক লিপি দেওয়ার পর তারা অভিযানে এসেছেন। তবে অভিযানে আসার খবরটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আগে থেকে জেনে গেছেন। যে কারণে এই অভিযানে তারা খুশি না। তাদের দাবি ভূয়া নার্স বাদ দিয়ে নিবন্ধনকৃত নার্সদের চাকুরি দিতে হবে। তাছাড়া প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে সরকারি নিয়ম মেনে ১০ টা বেডের জন্য ৬ জন নার্স নিয়োগ দিতে হবে। যাকে তাকে ধরে এতে নার্সের চাকুরি দেওয়ার কারণে রোগীর ভূল চিকিৎসা হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে এই ভূয়া নার্স নির্মূলে কঠোর অভিযান অব্যহত রাখতে হবে।

একতা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক কমঃ(প্রাঃ) লিঃ এর সহকারি ব্যবস্থাপক আল হেলাল বলেন, সিভিল সার্জন ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা এসেছিলেন। আমাদের এখানে যে পরিমাণ ডিপ্লোমা নার্স থাকার কথা সেটা নেই। তারা আমাদের ১৫ দিন সময় দিয়েছেন পর্যাপ্ত নার্স নিয়োগ করার জন্য।

সিভিল সার্জন ডাক্তার মাহমুদুল হাসান বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নার্সিং ও মিডিওফাই কলেজের শিক্ষার্থীদের স্মারক লিপি ও দাবির প্রেক্ষিতে ভুয়া নার্স নির্মূলে স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করছে। প্রত্যেক ক্লিনিকে পর্যাপ্ত ডিপ্লোমা নার্স ইনশিয়র না হওয়া পর্যপ্ত অভিযান অব্যহত থাকবে। যাদের পর্যাপ্ত ডিপ্লোমা নার্স নাই তাদের ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এই ১৫ দিনের ভিতর পর্যাপ্ত ডিপ্লোমা নার্সের ব্যবস্থা না করতে পারলে ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ২২ আগস্ট শিক্ষার্থীরা ভুয়া নার্স দমনে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও সিভিল সার্জন বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। ওই সময় সিভিল সার্জন তাদেরকে ভুয়া নার্স দমনে অভিযানের আশ্বাস দেন। তবে এর আগে কেন নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে এমন দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এবং বেসরকারি ক্লিনিক সঠিক নিয়ম মেনে চালু না করলেও স্বাস্থ্য বিভাগ কেন তা চালানোর অনুমতি দিয়েছে এই সব বিষয় নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

(এসএ/এসপি/আগস্ট ২৭, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১১ অক্টোবর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test