E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

শ্রীমঙ্গলে হারমোনি ফেস্টিভ্যাল

লেজার লাইটের আলোয় নৃত্যে-ছন্দে আধিবাসী শিল্পীদের মুগ্ধতা ছড়ানো পরিবেশনা

২০২৫ জানুয়ারি ১১ ১৪:৪৫:৪০
লেজার লাইটের আলোয় নৃত্যে-ছন্দে আধিবাসী শিল্পীদের মুগ্ধতা ছড়ানো পরিবেশনা

মো: আব্দুল কাইয়ুম,মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজার জেলার বিস্তীর্ণ পাহাড়ি জনপদে বসবাসরত স্বতন্ত্র জাতি স্বত্বার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী খাসিয়া, মণিপুরী, টিপরা ও গারো সহ অন্যান্য জনগোষ্ঠীর বিচিত্র জীবনাচার, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি আর বর্ণিল ঐতিহ্যেকে একসাথে ফুটিয়ে তুলতে প্রথমবারের মতো ২৬ টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে তিনদিন ব্যাপী হারমোনি ফেস্টিভ্যাল শুরু হয়েছে শুক্রবার থেকে। শনিবার ফেস্টিভ্যালের দ্বিতীয় দিনেও চলছে নানা জাতি গোষ্ঠীর প্রাণবন্ত অংশগ্রহণের বর্ণিল উৎসব। মঞ্চে পরিবেশন করা হচ্ছে একের পর এক ঐতিহ্যবাহী নৃত্য আর ধামাইল। ফেস্টিভ্যালকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকা জুড়ে বিভিন্ন দেশের পর্যটক সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নানা বর্ণের মানুষজন জড়ো হয়েছেন।

এর আগে গত শুক্রবার বিকালে উঁচুনিচু চাবাগান বেষ্টিত প্রকৃতির সুরম্য জনপদ শ্রীমঙ্গলের বিটিআরআই সংলগ্ন কাকিয়াছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তিনদিন ব্যাপী ফেস্টিভ্যাল উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া। ফেস্টিভ্যাল আয়োজন করে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড।

উৎসবের এই বর্ণিল আয়োজনে ২৬টির অধিক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অনষ্টেজ ফারফরম্যান্স এর মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলা হয় এ অঞ্চলের পাহাড়ী জাতি গোষ্ঠীর সংস্কৃতির বৈচিত্রময় ইতিহাস আর তাদের সমৃদ্ধ স্বতন্ত্র ঐতিহ্য। তিনদিনের ফেস্টিভ্যালে ৫০টি স্টলের মাধ্যমে তাদের উৎপাদিত তাত পণ্য, খাবার, প্রাচীণকাল ধরে লালন করা বিচিত্র জীবনাচার, ভাষা, সংস্কৃতি, পোশাক ইত্যাদি প্রদর্শন করা হয়।

উদ্বোধনী পর্ব শেষে সন্ধ্যায় শুরু হয় বর্ণিল আধিবাসী শিল্পীদের বৈচিত্রময় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। চোখ ধাঁধানো লেজার লাইটের আলোয় মঞ্চে খাসিয়া শিল্পীদের গ্রুপ নৃত্য, ত্রিপুরাদের কাথারক নৃত্য, গারোদের মল্লয় যুদ্ধ, গারোদের জুম নৃত্য এবং রাধারমণের ধামাইল নৃত্য উপস্থিত দেশ-বিদেশের নানা জাতি গোষ্ঠীর দর্শকদের বিমোহিত করে।

আয়োজকরা জানান,বাংলাদেশে বিদ্যমান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বর্ণিল জীবন ও সংস্কৃতিকে একটি প্লাটফর্মে নিয়ে আসাই ফেস্টিভ্যালের উদ্দেশ্য। এই ফেস্টিভ্যালের মাধ্যমে এ অঞ্চলের পর্যটন শিল্পে ভিন্ন মাত্রা যোগ করছে একই সাথে ট্যুরিস্টরা বিচিত্র অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগও পাচ্ছে।

ফেস্টিভ্যালে অংশ নেয়া গারো সম্প্রদায়ের সবুজ বলেন,প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এই ফেস্টিভ্যাল হচ্ছে, এতে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে। এমন ফেস্টিভ্যাল আর কোথাও হয়নি। প্রথমবার আমাদের শ্রীমঙ্গলে হচ্ছে। সব মিলিয়ে উৎসবটি আমাদের প্রত্যাশা থেকে বেশি হয়েছে।

মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি থেকে ফেস্টিভ্যালে অংশ নেয়া খাসিয়া তরুণী নিশি পথমি বলেন, আগে আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে উৎসব হলেও একে অন্যর সাথে যোগাযোগ ছিলনা, এই ফেস্টিভ্যালের মাধ্যমে আমাদের সবার মেলবন্ধন তৈরি হয়েছে।

কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খাসিয়া তরুণী মিমি নংরুম বলেন,সামনে আমরা একটি বর্ণিল বাংলাদেশ দেখতে চাই। আমরা যারা আদিবাসী হিসেবে বসবাস করছি আমরা চাই প্রত্যেক বছর আমরা যেন বর্ণিল উৎসবগুলো সবার সাথে সব বাঙালি ভাই-বোনদের নিয়ে একসাথে করতে পারি।

(একে/এএস/জানুয়ারি ১১, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২২ জানুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test