স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর : গাজীপুরে গত এক বছরে ৭৯৪টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে যৌন হয়রানি, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ইভটিজিং, বাল্য বিবাহ, অপরহরণের ঘটনা রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর জেলা শহরে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠাণের কার্যালয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য ও প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে গাজীপুর জেলায় যৌন হয়রানি ২২টি, যৌতুকের জন্য নির্যাতন ৪০টি, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ৩২২টি, গণপরিবহনে নির্যাতন ১৭টি, বাল্য বিবাহ ৫৫টি, ইভটিজিং ১৪৩টি, অনলাইনে যৌন হয়রানি ৩১টি, অপহরণ ১২টি, অপহরণের চেষ্টা ২টি ও অন্যান্য ১৩৬ টিসহ মোট ৭৯৪ নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়াও একই বছরে জেলায় মোট ২৩ জন নারী ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এবং ৭ জন ধর্ষন চেষ্টার শিকার হয়েছেন। একই সময়ে গাজীপুরে বিভিন্নভাবে হত্যার শিকার হন ১৪ জন নারী, ১৮ জন নারীর লাশ উদ্ধার এবং ৪ জন নারী শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

আসক’র অগ্নি প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট গাজীপুর জেলার ৫টি উপজেলার সিএসও সদস্যদের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এ পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) আয়োজিত ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকারে করনীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রকল্পের সমন্বয়কারী আসমা খানম রুবা, গাজীপুর জেলা ব্যবস্থাপক মো: আসাদুজ্জামান, মনিটরিং এন্ড ইভালুয়েশন অফিসার আনজুম অর্পি প্রমুখ।

সভায় বলা হয়, শিক্ষাঙ্গনে এবং কর্মস্থলে নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে উচ্চ আদালতের মাইলফলক রায়ের এক যুগ পার হয়ে গেছে। এ রায়ে সুষ্পষ্টভাবে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হলেও তা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। নির্দিষ্ট আইনে রূপান্তর না হওয়া পর্যন্ত সংবিধান অনুযায়ী এ নির্দেশনা আইন হিসেবে কাজ করার কথা থাকলেও প্রায়োগিক ক্ষেত্রে তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ও প্রতিকারে পূর্নাঙ্গ আইনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে, সর্বস্তরে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সচেতনতা বাড়ানোর আহবান জানানো হয়।

(এস/এসপি/জানুয়ারি ২১, ২০২৫)