E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বগুড়ার সাতমাথা থেকে দত্তবাড়ী পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবি

২০১৪ ডিসেম্বর ০৫ ১৫:৪৫:৪৭
বগুড়ার সাতমাথা থেকে দত্তবাড়ী পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবি

বগুড়া প্রতিনিধি : ভোগান্তি বেড়েছে বগুড়া শহরবাসির। ২৪ ঘন্টায় বগুড়া শহরের উপর দিয়ে ১৮টি ট্রেন চলাচল করার পাশাপাশি শহরের ফুটপাত দখল, যত্রতত্র সিএনজি চালিত অটো রিক্সা, রিক্সা, গাড়ী পার্কিং, ভ্রাম্যমাণ দোকানে হ-য-ব-র-ল অবস্থা। শহরজুড়ে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় ১ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ১০ মিনিট। যানজটের কবলে পড়ে শিক্ষার্থী, চাকুরী প্রার্থী, এ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসসহ জন সাধারণের জরুরী কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। যানজট নিরসনে হিমশিম খাচ্ছে ট্রাফিক বিভাগ। তাদের প্রাণান্তকর চেষ্টা বিফলে যাচ্ছে। এ কারণেই বগুড়া শহরের সাতমাথা থেকে দত্তবাড়ী পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবি উঠেছে।

জানা যায়, উত্তরবঙ্গের রাজধানী খ্যাত গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যিক শহর বগুড়া। এই শহরে রয়েছে উত্তরাঞ্চলের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ সরকারি আজিজুল হক কলেজসহ তিনটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। গড়ে উঠেছে বড় ছোট কলকারখানা। জেলার অন্যান্য উপজেলাসহ বিভিন্ন জেলার মানুষ বসতি গড়ছে এই শহরে। এতে করে মানুষের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা। প্রায় ৩০ হাজার রিক্সার সাথে শহর এবং শহরের উপর দিয়ে চলছে ২০ হাজারেরও বেশি সিএনজি। বগুড়ার সান্তাহার থেকে লালমনিরহাট পর্যন্ত রেল সড়ক রয়েছে প্রায় ১৭৫ কিলোমিটার। এই রেল সড়ক হয়ে বগুড়া শহরের উপর দিয়ে প্রতিদিন ১৮টি রেল চলাচল করছে। বগুড়া শহরকে দুই ভাগে ভাগ রেখেছে রেল লাইন।

শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় লেভেল ক্রসিং রয়েছে কমপক্ষে ৮টি। লেভেল ক্রসিংগুলো রয়েছে শহরের বস্ততম এলাকা চকযাদু ক্রস লেন, থানা রোড, রাজাবাজার রোড, নারুলী, সাবগ্রাম দ্বিতীয় বাইপাস মহাসড়ক, সরকারি আজিজুল হক কলেজে দুটি, বগুড়া ঢাকা মহাসড়কের তিনমাথায় একটি। ট্রেন চলাচলের সময় লেভেল ক্রসিংগুলো বন্ধ করে দেয়ার নিয়মের ফাঁদে পড়ে কমপক্ষে ৭ মিনিট থেকে ১০ মিনিট করে চলাচল বন্ধ হয়ে থাকছে। এতে করে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজটের। প্রতি ট্রেনের জন্য ১০ মিনিট করে রেলগেট বন্ধ থাকলে গড়ে ১৮০ মিনিট বা ৩ ঘন্টা সময়ের খাত থেকে খরচ হয়ে যাচ্ছে। এর সাথে যোগ হয়েছে শহরের ফুটপাত দখল, যত্রতত্র সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, রিকসা, গাড়ী পার্কি, ভ্রাম্যমাণ দোকানের বাড়তি চাপ। রেললাইনের এপার ওপার মিলিয়ে গুরুত্বপূর্ণ, স্কুল কলেজ, ব্যাংক, বীমা, জেলা প্রশাসন অফিস, পুলিশ প্রশাসন, পৌরসভা, হাসপাতাল, ক্লিনিক, থানা, সদর উপজেলা প্রশাসন, বাজার থাকলেও হাজার হাজার সুবিধাভোগীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রতিনিয়ত সময়ের সাথে ছুটতে হচ্ছে।

বগুড়া ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীসহ রোগী পরিবহনের গাড়ীগুলোও আটকা পড়ছে ট্রেন চলাচলের সময়। যানজটের সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তিতে পড়ছে শহরবাসী। শহরের ভিতর দিয়ে ট্রেন চলাচলে যানজটে পড়ে সময়ের কাজ সময়ে সম্পন্ন করতে পারছেনা বগুড়ার মানুষ। এ কারণে দাবি উঠেছে শহরের সাতমাথা থেকে দত্তবাড়ী পর্যন্ত ফ্লাই ওভার নির্মাণের। ফ্লাইওভার নির্মাণ হলে ভোগান্তির হাত থেকে বাঁচিয়ে সময়ের অপচয় রোধ করে সময়মত কাজ করতে পারবে। বগুড়া সদর আসনের সংসদ সদস্য বিরোধি দলীয় হুইপ নূরুল ইসলাম ওমর চলতি বছরে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে এ বিষয়ে দাবি উপস্থাপন করেছেন। বগুড়া শহরের মাটিডালি এলাকার সমাজ সেবক মো. আবু তালেব জানান, দীর্ঘদিন ধরেই শুনে আসছি রেলপথ শহরের বাহিরে স্থাপন করা হবে। কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠছে না।

রেলপথের কারণে প্রায়ই সময়মত গন্তব্যে পৌঁছানো যাচ্ছে না। রেলপথ শহরের মধ্যে থাকলে ওভার ব্রিজ বা ফ্লাইওভার করে শহরবাসির ভোগান্তি দূর করা সম্ভব।বগুড়া শহরের নারুলী এলাকায় বসবাসরত গণিতের প্রভাষক আলমগীর কবির জানান, মূল শহরের মধ্যে দিয়ে ট্রেন চলাচলের ফলে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বগুড়ার গুরুত্ব বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রতিনিয়িত জেলা শহরে জনগণের চাপ বাড়ছে। বগুড়া সদর আসনের সংসদ সদস্য বিরোধিদলীয় হুইপ নুরুল ইসলাম ওমর জানান, এ বিষয়ে জাতীয় সংসদে দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে। শীঘ্রই সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের উপর আলোচনা হবে। বগুড়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. বেঞ্জুরুল ইসলাম জানান, পশ্চিম বগুড়ার সান্তাহার থেকে লালমনিরহাট পর্যন্ত ১৭৫ কিলোমিটার রেলপথ রয়েছে। বগুড়া শহরের উপর দিয়ে প্রতিদিন ১৮ ট্রেন চলাচল করে। লেভেল ক্রসিংগুলোতে গার্ড রয়েছে। বগুড়ার ট্রাফিক সার্জেন্ট নাহিদ পারভেজ জানান, ট্রেন যাতায়াতের সময় রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় দুপাশে যানবাহনগুলো আটকা পড়ে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ আন্তরিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

(এএসবি/এএস/ডিসেম্বর ০৫, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test