E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অবরোধে মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেরা বিপাকে

২০১৫ জানুয়ারি ১৬ ১৮:২৬:৪৮
অবরোধে মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেরা বিপাকে

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : টানা অবরোধে বিপাকে পড়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহীপুরের শতশত মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেরা। প্রতিদিন শত শত মন মাছ অবরোধের কারণে ঢাকাসহ বিভিন্ন মোকামে বিক্রি করতে না পেরে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। এ কারণে প্রতি কেজি মাছ ১০-২০ টাকা কমমূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির কবলে পড়ছে জেলেরা। এ কারণে সাগরে মাছ শিকার করে অধিকাংশ ট্রলারের জেলেরা লোকসান কমাতে মাছ স্থানীয় বাজারে বিক্রি না করে পাথরঘাটা, ঝালকাঠি, বরগুনা,পটুয়াখালী বাজারে নৌ পথে নিয়ে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।

সরেজমিনে কুয়াকাটা, আলীপুর,মহীপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায় শতশত মৎস্য আড়ত খোলা থাকলেও নেই কর্মচাঞ্চল্য। আড়তের মৎস্য শ্রমিকরা বেকার বসে তাস খেলছে ও আড্ডা দিচ্ছে। আলীপুরের মেসার্স আমিন এন্টারপ্রাইজের মালিক আনোয়ার খান জানান, প্রায় দেড় কোটি টাকা দাদন দেয়া। কিন্তু আড়তে মাছ নেই। অবরোধের কারণে মাছ পরিবহন করতে না পারার কারণে রিস্ক নিয়ে মাছ কিনছেন না। তার হিসেবে গত বছর এই সময় প্রতিদিন ৫/৭ লাখ টাকা মাছ কিনেছেন। কিন্তু এ বছর ২০/২৫ হাজার টাকার মাছ কিনছেন না। তার হিসেবে গত ১০ দিনে অন্তত দেড় লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। একই অবস্থা অন্য ব্যবসায়ীদেরও।

খান ফিস মৎস্য আড়তের মালিক রহিম খান জানান, গত কয়েকদিন ট্রলার, টেম্পো ও গাড়ির ছাদে করে অল্প কিছু মাছ পাঠিয়েছেন। আগে ঢাকার মোকামে মাছ পাঠালেও এখন অবরোধের কারণে বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, বরগুনা, পটুয়াখালী মাছ বিক্রি করছেন। তবে বেশি মাছ হলে ট্রলারে করে নৌ-পথে নিয়ে বিক্রি করছেন।

একাধিক মৎস্য ব্যবসায়ী জানান, এখন যে মাছ কিনছেন তা বিক্রি করাও রিস্ক। কেননা পিকআপ-ট্রাক মালিকরা ভয়ে ঢাকায় মাছ নিয়ে যেতে চাচ্ছেন না। তাই আড়ত টিকিয়ে রাখতে অল্প কিছু মাছ কিনে বরিশালে ঢোল করে গাড়ির ছাদে উঠিয়ে দিচ্ছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে এখানকার মৎস্য ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ লোকসানের কবলে পড়বে। কেননা এখন প্রতিটি গাড়িতে ৩/৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়া গুনতে হচ্ছে।

কুয়াকাটার জেলে সেরাজ মিয়া জানান, তিনি বুধবার দেড় মন ফাইস্যা মাছ বিক্রি করেছেন পাঁচ হাজার চারশ টাকায়। অথচ ১০দিন আগে এই মাছ বিক্রি হয়েছে সাড়ে ছয় হাজার টাকা। এফবি নিয়তি ট্রলারের জহির মাঝি জানান, তিনি গতকাল ছয় মন ডুম্বরা মাছ বিক্রি করেছেন ১৫ হাজার ছয়শ টাকা। যার প্রতিকেজি মাত্র ৬৫ টাকা পড়েছে। অথচ এক সপ্তাহ আগে এই মাছের মন বিক্রি করেছেন তিন হাজার চারশ টাকা। এভাবে অবরোধের কারনে শতশত জেলে মাছ বিক্রি করে লোকসান গুনছে। এ কারণে অনেক জেলে স্থানীয় বাজারে মাছ বিক্রি না করে অন্যত্র নিয়ে বিক্রি করছে। এ কারণে অনেক জেলে সাগরে মাছ শিকার বন্ধ রেখে ঘাটে ট্রলার নোঙর করে আছে।

কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্বাস কাজী জানান, অবরোধে ব্যবসায়ী ও জেলেরা এখন পথে বসার উপক্রম হয়েছে। কেননা আড়তে মাছ নেই। কিছু মাছ ক্রয় করা হলেও ঢাকার মোকামে পাঠাতে পারছেন না। কম দামে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।

(এমকেআর/এএস/জানুয়ারি ১৬, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test